আসুন আওয়াজ তুলি, হাসপাতাল চাই, হাসপাতাল
প্রকাশিত হয়েছে : ৭:৩৩:৪১,অপরাহ্ন ৩১ মার্চ ২০১৯ | সংবাদটি ৬২৫ বার পঠিত
ইকবাল মাহমুদ :: ‘সদর হাসপাতালের জন্য নতুন জায়গা খুঁজতে গেলে হয়তো হাসপাতালটি আমাদের হারাতে হতে পারে’। শনিবার সিলেট প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠানে এমন শংকার কথা জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। আজ স্থানীয় দৈনিকগুলোর কল্যাণে খবরটি নিশ্চয়ই সবার দৃষ্টিগোচর হয়েছে। মন্ত্রী আক্ষেপ করে বলেছেন, এখনই কাজ শুরু না করলে আগামী জুনে বাজেটের টাকা ফেরত যাবে। যারা জায়গা নিয়ে বিতর্ক তুলছেন তারা এতদিন কোথায় ছিলেন- এমন প্রশ্নও তুলেছেন মন্ত্রী।
প্রশ্ন হচ্ছে এখানে হাসপাতাল নির্মাণে কেন বিরোধিতা হচ্ছে ? কি তাদের বক্তব্য? যারা বিরোধিতা করছেন, তাদের দাবি আবুসিনা ছাত্রাবাসটি বহু পুরনো ঐতিহাসিক স্থাপনা, এটা সংরক্ষণ করে জাদুঘর নির্মাণ করা হোক। ২০১৩ সাল থেকে এই সদর হাসপাতাল নির্মাণ নিয়ে কথাবার্তা হচ্ছে, ২০১৫ সালে স্থান নির্বাচন করা হয়েছে। এতদিন জাদুঘরের দাবি ওঠেনি কেন? এখন প্রকল্প বাস্তবায়নের অন্তিম সময় এসে এ বিতর্ক রহস্যপূর্ণ। যারা জাদুঘরের দাবী নিয়ে আন্দোলন করছেন তারা সদর হাসপাতালের প্রয়োজনীয়তা না বুঝারই কথা। কারণ, তারা কোনদিন এমন হাসপাতালে চিকিৎসাপ্রার্থী হবেন না। সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার মান নিয়ে সময় সময় রাস্তায় মানববন্ধন, সেমিনারে গলা ফাটানো বক্তব্য দেয়া আমাদের ফ্যাসন। কিন্তু ৫’শ শয্যার হাসপাতালে ৩ হাজার রোগি সামাল দিয়ে কিভাবে পাঁচ তারকা সেবা দেয়া সম্ভব সেই পথ কেউ বাতলে দেন না। আর সরকার নতুন হাসপাতাল করতে গেলে জাদুঘরের আল্লাদি দাবীতে কান্না জুড়ে দেন। কোনটা বেশি জরুরি, জাদুঘর- না হাসপাতাল? এমন সরল প্রশ্ন তোলার মত সৎ সাহস কি কারো নেই?
সেদিন মাননীয় মন্ত্রীর আফসোপূর্ণ বক্তব্য শুনে মনে হয়েছে হাসপাতালটি আদৌ হবে কি না, তা এক গভীর অনিশ্চয়তায় পড়ে গেছে। কারণ, স্থানীয়দের বিরোধীতার মুখে সরকার কোন উন্নয়ন করার ঝুঁকি নেবে না। সিলেটের এই কাঙ্ক্ষিত উন্নয়নকে থামিয়ে দিতে পারলে এই সুশীল নামধারীরা হয়তো একটা বিকৃত সুখ অনুভব করবেন। কিন্তু মনে রাখবেন আপনাদের এই সুখানুভূতির সাথে আমজনতার কোন স্বার্থ জড়িত নেই, আছে অভিশাপ। তাই, সময় থাকতে আসুন জনগণের মনের ভাষা বুঝার চেষ্টা করি। যার যার অবস্থান থেকে আওয়াজ তুলি, ‘আমরা হাসপাতাল চাই হাসপাতাল‘।
লেখক : সাধারন সম্পাদক সিলেট প্রেসক্লাব