এল এ বাংলা টাইমস এর ৮ বছর ও আব্দুস সামাদের গল্প
প্রকাশিত হয়েছে : ৫:২১:১৬,অপরাহ্ন ১২ নভেম্বর ২০২২ | সংবাদটি ১৩১৩ বার পঠিত
জুয়েল সাদত
দৈর্ঘ্য প্রস্থে ছোট খাট আব্দুস সামাদ কাজ করেন বড় বড়। সাংবাদিতায় পুর্বের তেমন অভিজ্ঞতা না থাকলেও ২০১৪ সালে লস এনজেলস বাংলা টাইমস, এল এ বাংলা টাইমস নামে একটি অনলাইন সংবাদপত্র নিয়মিত প্রকাশ করে যাচ্ছেন । যেটা তার দায়িত্ব ও কর্তব্যের সফলতার ৮ বছর পুুুুর্ন করল। সংবাদপত্র যে শুধু সংবাদে বাধা পড়েনি তার নজির এল এ বাংলা টাইমস, করেনার কঠিন সময়টায় লস এনজেলসের বাংলাদেশের নাগরিকের জানান দিয়েছিল তার দায়িত্ব কর্তব্য।
সেই সময়টাতে গৃহবন্দী প্রবাসীদের নানা সাহায্যে এগিয়ে এসেছিল এল এ বাংলা টাইমস। তার সফলতার গল্প শুনাব৷ আমার সাথে এল এ টাইমসের তেমন কোন সরাসরি যোগাযোগ নেই। কিভাবে যেন এর ইমেল এড্রেস টা ছিল, আমি আমার নানা রিপোর্ট ও লেখা মেইল করতাম, পরদিন ই দেখতাম এল এ টাইমসের পাতায় আমার লেখা। সেই লেখাটার লিংকটাও চলে আসত। এভাবে ৫/৬ বা ৭ বছর হবে আমার সাথে এল এ টাইমসের সখ্যতা। এর পেছনে কে বা কারা কখনও জানার চেষ্টা ও করিনি। আমি নানা মাধ্যমে লিখি, অনেককে কপি দেই। এল এ বাংলা টাইমসটা আমাকে টানতে শুরু করে। অনেক বছর পরে জানতে পারি সেটা আব্দুস সামাদের। তিনি আবার একজন সিলেটের কৃতি সন্তান৷ কিছুটা অস্থির প্রকৃতির হলেও সেই সামাদ একটি চমৎকার অনলাইন পরিচালনা করে যাচ্ছেন। ২০১৪ সালে তিনি এল এ বাংলা টাইমস করেন, আমি ২০১৩ সালে ইউ এস এ বিডি নিউজ চালু করেছিলাম, তারপর ২ বছর পর তা ইনেকটিভ করে দেই। তারপর ২০১৬ সালে প্রবাসের নিউজ ডট কম করে তা আজও শুধু প্রবাসীদের সংবাদ প্রকাশ করে যাচ্ছে৷ এই অনলাইন সংবাদপত্র টাও যে সঠিক পরিচালনা করা প্রবাসীদের জন্য কতটা কঠিন তা আমি জানি৷ সারাদিন কাজের পর শত শত ইমেল চেক করা, সেগুলো সংবাদ হিসাবে ছাপানো আবার লিংক পাঠানো অনেক পরিশ্রমের কাজ। আবার দেশে একটি টীমকে পরিচালনা করা অনেক ব্যয়বহুল। আব্দুস সামাদ এই কাজটা করে যাচ্ছেন ৮ বছর যাবত। তাকে ধন্যবাদ।
আব্দুস সামাদ এর সাথে আমার অনেক দেরীতে পরিচয়। হিসাব করলে ৬ মাস হবে।
তার এনার্জিক্যাল মুভমেন্ট আমাকে আশা জাগায়। ৩১ বছরের উদিয়মান প্রানচাঞ্চল্যেপুর্ন এই যুবক অনেকদুর যাবে ধারনা করি৷ অনেক বিষয়ে আমার সাথে পরামর্শ করে, তার স্পীড আমাকে নতুন করে স্বপ্ন দেখায় । এল এ বাংলা টাইমসের টীমটা করোনার সময়টায় সারাদিন আপডেট দিত। সিডিসির নানা গাইড লাইন এল এ ‘ র ( লস এনজেলস) প্রবাসীদের পাশে ছিল। নানা প্রচারনা, লিফলেট, মাস্ক করোনা টিকার তথ্য,নানা ডাক্তারদের লাইভ, ৬ ফুট দুরত্বের স্টীকার, যত ধরনের তথ্য সেবা দরকার ছিল ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সবই করেছিল এল এ বাংলা টাইমস নামের অনলাইন কাগজট। বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ দিয়েছিল এল এ বাংলা টাইমস। গত আট বছরে নানা সামাজিক কাজে লস এনজেলস এর প্রবাসীরা এই অনলাইন কাগজটাকে নিজেদের করে দেখেছেন৷ সামাজিক দায়বদ্ধতার পুরোটাই এল এ টাইমস পালন করেছে। শুধু সংবাদ পরিবেশনে সীমাবদ্ধ ছিল না কাগজটা। একটি বড় কমিউনিটির প্রতিনিধিত্ব করেছে।
পাশাপাশি বড় বড় নানা ইভেন্ট পরিচালনা করেছিল। এরই মধ্যমে এল এ টাইম অনলাইন টিভিও সমাদৃত হয়েছে। প্রবাসীদের নানা খবর লাইভ টেলিকাস্টে জড়িয়ে পড়েছে এল এ টাইমস। আব্দুস সামাদের সাথে কথা হলে, তিনি জানান এই মাধ্যমে হয়ত আমার অনেকের মত অভিজ্ঞতা নেই, তবে আট বছরে চেষ্টা করেছি কমিউনিটির সাথে এল এ বাংলা টাইমসকে সম্পৃক্ত করতে। এল এ বাংলা টাইমস দায়িত্ববোধ থেকে সংবাদপত্র হিসাবে টিকে আছে, ইনশাআল্লাহ আরো নতুন নতুন মাধ্যমে ও আগামীতে থাকবে৷ অনেকেই সহযোগিতা করেছেন, ভালবাসেন, পড়েন, সংবাদ প্রেরন করেন, শেয়ার করেন তাদের সকলকে ধন্যবাদ।
এল এ বাংলা টাইমস এর ৮ বছরের সফলতার গল্প লিখতে গিয়ে উপলব্ধি করলাম। উত্তর আমেরিকার সংবাদপত্র জগতে নীরবে সিলেটের একটি ভুমিকা রয়েছে৷ যেমন ঠিকানা ও বাংলা পত্রিকা সাড়ে তিনদশক সেবা দিচ্ছি৷ সাথে টাইম টিভি৷ আমার প্রবাসের নিউজ ৬ বছর, আব্দুস সামাদের এল এ টাইমস ৮ বছর, ইকবাল ফেরদৌস এর বাংলা সংবাদ ৬ বছর হবে, চিন্ময় দার সুপ্রভাত মিশিগান ৫/৬ বছর হবে, মাহফুজ আদনানের অনলাইন, প্রথম উত্তর আমেরিকা ইব্রাহিম চৌধুরীর, সুলতান জে শরিফের অনলাইন, মিশিগান প্রতিদিন, এরকম আরো অনেক সংবাদপত্র আছে হয়ত আমার জানার বাহিরে। সিলেটের এক বিশাল সাংবাদিক গোষ্ঠী উত্তর আমেরিকার কঠিন বাস্তবতায় এই মাধ্যমে বিচরন করছেন৷ সংবাদপত্র মালিকানা ছাড়াও আরো ১৫/২০ জন নানা মাধ্যমে লিখছেন। এল এ বাংলা টাইমসে ৯ বছরে তার দায়িত্ব আরো বেড়ে যাবে৷ সংবাদপত্র এখন নানা ডাইমেনশনে রুপ নিচ্ছে। ইদানিং সংবাদ গুলো লাইভে চলে যায়। মানুষ ভিজুয়াল মাধ্যমে অনেক জিনিস আশা করে, তাই এল এ বাংলা টাইমস কেও নতুন সময়োপযোগী মাধ্যমে যেতে হবে৷ আব্দুস সামাদ সম্পাদক এল এ টাইমস এর, এল এ বাংলা টাইমসকে উত্তর আমেরিকার প্রবাসীদের চাহিদা অনুযায়ী কনটেন্ট এ গুরুত্ব দিতে হবে৷ এখন নাগরিকদের মধ্যে মুহুর্তের সংবাদ দেখার আশা করেন, প্রবাসে তা অসম্ভব হলেও আপডেট দিনে ২ বার হতে হবে৷ একটি চৌকস টীম সাজাতে হবে৷ পাশাপাশি নানা সামাজিক সোস্যাল কাজে আরো জড়াতে হবে৷ একটি সংবাদপত্রের কাছে প্রবাসীদের দাবী বেশীই থাকে। অনেক সংবাদপত্র আজকাল লোকাল টিভি নিউজ করে থাকে। সাথে টক শো তাই এল এ বাংলা টাইমসের পরিধি বেড়ে যাবে। এল এ টাইমসকে অনেক কাজে সম্পৃক্ত হবার মাধ্যমে প্রবাসীদের সেবা করার সুযোগ নিতে হবে৷ নতুন নতুন তথ্যে পুুুর্ন থাকবে এল এ বাংলা টাইমস। লস এনজেলস একটি সম্মৃদ্ধ জনপদ, সেখানে এল এ বাংলা টাইমস লাইট হাউসের দায়িত্ব পালন করবে।
জুয়েল সাদত – সাংবাদিক কলামিস্ট। উত্তর আমেরিকা