পরিবারের কারও চোখ উঠলে শিশুকে কীভাবে রক্ষা করবেন
প্রকাশিত হয়েছে : ১:৩৫:২৪,অপরাহ্ন ০৮ অক্টোবর ২০২২ | সংবাদটি ২০৯০ বার পঠিত
ডা. মোহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম: অনেক সময় চোখ লাল হলেই আমরা চোখ উঠেছে বলে ধরে নিই। কিন্তু চোখ লাল হওয়া রোগটির একটি উপসর্গ মাত্র। চোখের বাইরের দিকের আবরণ কনজাংকটিভার (কর্নিয়ার পাতলা স্বচ্ছ আচ্ছাদন) প্রদাহকে সাধারণভাবে ‘চোখ ওঠা’ বলা হয়। কনজাংকটিভাইটিস মূলত ছোটদের মধ্যেই বেশি দেখা যায়। আর তাদের থেকে এই রোগ অন্যদের চোখে ছড়ায়। ইদানীং শিশুদের চোখ ওঠা রোগ ব্যাপক হারে দেখা যাচ্ছে। চলুন জেনে নিই বিস্তারিত।
চোখ ওঠা ভীষণ ছোঁয়াচে, তাই এ সময় স্কুলে বা জনসমাগমে যাওয়া উচিত নয়
উপসর্গ
সংক্রমিত চোখের সাদা অংশটি গোলাপি বা লালচে হয়ে ওঠে।
চোখ দিয়ে পানি পড়ে।
চোখ জ্বলে ও চুলকায়।
চোখে অতিরিক্ত পিঁচুটি আসে।
চোখের পাতা ও কনজাংকটিভা ফুলে ওঠে।
চোখে দেখতে অসুবিধা হয়।
আলোর প্রতি সংবেদনশীলতা।
সকালে ঘুম থেকে ওঠার সময় চোখের পাতায় চটচটে পদার্থ লেগে থাকে।
সতর্কতা
ধুলাবালি, আগুন, আলো ও রোদে কম যাওয়া, ময়লা-আবর্জনাযুক্ত স্যাঁতসেঁতে জায়গায় না যাওয়া এ সময়ের করণীয়। চোখ ওঠা ভীষণ ছোঁয়াচে, তাই এ সময় স্কুলে বা জনসমাগমে যাওয়া উচিত নয়। চোখে কালো চশমা ব্যবহার করলে আরাম হবে। স্ক্রিন অর্থাৎ মুঠোফোন, টেলিভিশন কম দেখতে হবে। সম্ভব হলে ৭ থেকে ১০ দিন সম্পূর্ণ বিশ্রাম নিতে হবে। এর মধ্যে চক্ষু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া ভালো। সংক্রমিত রোগীদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখা।
যেভাবে ছড়ায়
চোখে ভাইরাস দিয়ে প্রদাহ হলে চোখের পানিতে ভাইরাস ভেসে বেড়ায়। চোখ থেকে এটি হাতে আসে। এরপর সেই হাত দিয়ে আমরা যা স্পর্শ করি, সেটি সংক্রমিত হয়ে পড়ে। যেমন কারও সঙ্গে করমর্দন, টিভি, শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্র বা টেলিভিশনের রিমোট, তোয়ালে, বিছানার চাদর, বালিশের কভার, এমনকি মুঠোফোন ইত্যাদির মাধ্যমে সংক্রমণ ছড়াতে পারে। এ জন্যই আক্রান্ত শিশুকে এই সময়ে বাসায় থাকতে পরামর্শ দেওয়া হয়। তার ব্যবহৃত জিনিসপত্রও আলাদা রাখা ভালো।
কী করবেন
কনজাংকটিভাইটিস রোগের ক্ষেত্রে চিকিৎসা সংক্রমণের কারণ অনুযায়ী করা হয়। ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণের জন্য অ্যান্টিবায়োটিক ড্রপ দেওয়া হয়, ভাইরাসজনিত সংক্রমণ সারতে তার নিজস্ব সময় যথেষ্ট। ঠান্ডা সেঁক ও আর্টিফিশিয়াল টিয়ার্স বা কৃত্রিম চোখের জল উপসর্গ অনুযায়ী উপশম দিতে সাহায্য করে। অ্যালার্জিজনিত কনজাংকটিভাইটিসের জন্য অ্যান্টিঅ্যালার্জিক আই ড্রপ দেওয়া হয়।
কারও চোখ উঠলে শিশুকে যেভাবে রক্ষা করবেন
সংক্রমিত চোখ স্পর্শ করবেন না।
কিছুক্ষণ পর পর হাত ভালো করে ধুতে হবে।
নিজের তোয়ালে ও প্রসাধন দ্রব্য অন্য কাউকে ব্যবহার করতে না দেওয়া।
আক্রান্ত ব্যক্তিকে ১ থেকে ২ সপ্তাহ আলাদা রাখা।
*ডা. মোহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম: সহযোগী পরামর্শক, চক্ষু বিভাগ, স্কয়ার হাসপাতাল লিমিটেড, ঢাকা