সাকিবের বৃহৎ ‘কাঁকড়া’ খামারে ধস!
প্রকাশিত হয়েছে : ৯:১৫:৪৯,অপরাহ্ন ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০ | সংবাদটি ২৪২৭ বার পঠিত
আমাদের প্রতিদিন ডেস্ক:: চীনের প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের প্রভাব বাংলাদেশের কাঁকড়া ও কুঁচে রপ্তানি বাণিজ্যে ধস নেমেছে। এতে কাঁকড়া উৎপাদনে নিয়োজিতদের পথে বসার উপক্রম হয়েছে।
খুলনাঞ্চলের উপকূলীয় কাঁকড়া চাষিরা জানিয়েছেন, তাদের উৎপাদন করা কাঁকড়া ও কুঁচে রপ্তানি বাণিজ্যে ধস নেমেছে। প্রায় ২ সপ্তাহ ধরে রপ্তানি বন্ধ রয়েছে। অসংখ্য কাঁকড়া ও কুঁচের খামারে মড়ক দেখা দিয়েছে। এতে বড় লোকসানের মুখে তারা।
জানা গেছে, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট ও খুলনা জেলার উপকূলবর্তী এলাকায় চিংড়ির পাশাপাশি কাঁকড়া ও কুঁচে চাষ করা হয়। অল্প বিনিয়োগে অধিক মুনাফার আশায় কয়েক হাজার মানুষ কাঁকড়া ও কুঁচে উৎপাদনে ঝুঁকেছেন। সাতক্ষীরার শ্যামনগর, আশাশুনি, দেবহাটা ও কালিগঞ্জ উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় সবচেয়ে বেশি কাঁকড়া ও কুঁচের খামার রয়েছে। সেখানের পারুলিয়া, উজিরপুর, শ্যামনগর ও মুন্সীগঞ্জ বাজারের ডিপোগুলোতে প্রচুর পরিমাণে কাঁকড়া ও কুঁচে কেনাবেচা হয়। এছাড়া খুলনার দাকোপ ও কয়রা উপজেলাতেও ব্যাপকহারে কাঁকড়া চাষ হয়ে থাকে। সুন্দরবন নির্ভর এই কাঁকড়া চাষিরাও পড়েছেন বিপাকে।
এ দিকে, সাতক্ষীরায় বৃহৎ একটি কাঁকড়ার খামার রয়েছে বাংলাদেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় তারকা সাকিব আল হাসানের। সাকিবের এ খামার থেকে গত দুই বছরে প্রায় ৪০০ মেট্রিক টন কাঁকড়া রপ্তানি হয়েছে। ফলে এ অঞ্চলে এককভাবে কাঁকড়া ‘চাষিদের’ মধ্যে আর্থিকভাবে সবচেয়ে বড় ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে তাকে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ‘সাকিব অ্যাগ্রো ফার্ম লিমিটেড’ নামে কাঁকড়া খামারের দায়িত্বরতরা বলেন, বর্তমানে কাঁকড়ার খামারিদের দুর্দিন চলছে। চীনের করোনা ভাইরাসের প্রভাবে এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের খামারটি অনেক বড়। তাই লোকসানের পরিমাণটা বড়ই হবে।
কাঁকড়া ও কুঁচের একমাত্র আমদানিকারক দেশ চীন। গত ২৫ জানুয়ারি থেকে চীনে রপ্তানি বন্ধ হয়ে গেছে। এতে অভ্যন্তরীণ বাজারে কাঁকড়া ও কুঁচে কেনাবেচায় ব্যাপক ধস নেমেছে। যে কাঁকড়া ২ হাজার টাকা কেজি বিক্রি হতো তা এখন মাত্র ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা।
সাতক্ষীরা জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত বছরে জেলায় ৩১০ দশমিক ৯ হেক্টর জমিতে কাঁকড়া চাষ হয়। ওই জমি থেকে দুই হাজার ১৯০ দশমিক ৪ মেট্রিক টন ও সুন্দরবন থেকে এক হাজার ১০৯ মেট্রিক টন কাঁকড়া সংগ্রহ করা হয়।
ব্যবসায়ীরা জানান, তারা চীনের আমদানিকারকদের কাছে ১৫০ কোটি টাকা পাবেন। এর ফলে এক দিকে তাদের ব্যবসা বন্ধ হতে শুরু হয়েছে। অপরদিকে পাওনা টাকা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের দিতে না পেরে বিপাকে পড়েছেন আড়তদাররা। অচিরেই চীন যদি করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারে তাহলে কুঁচে ও কাঁকড়া চাষে বিপর্যয় অনিবার্য।