টাকা ছাড়া খাবার মিলে যে রেস্টুরেন্টে!
প্রকাশিত হয়েছে : ৩:০৭:১৯,অপরাহ্ন ০১ আগস্ট ২০১৯ | সংবাদটি ৩৫৩ বার পঠিত
আমাদের প্রতিদিন ডেস্ক:: আপনার ক্ষুধা পেয়েছে, কিন্তু পটেটে টাকা নেই? সমস্যা নেই। আপনাকে দুবাইয়ের ‘ফুল ও হুমুস’ রেস্টুরেন্ট আপনাকে ফ্রি খবার পরিবেশন করবে।
দুবাইয়ের বার্শা শহরের ফুল ও হুমুস রেস্টুরেন্টের সাইনবোর্ডে আরবী ও ইংরেজিতে লেখা- আপনি যদি কিনতে না পারেন, তাহলে আপনার জন্যে ফ্রি। আমাদের খাবার আল্লাহর পক্ষ থেকে আপনার জন্যে উপহার। হোটেলের মালিক জর্ডানের নাগরিক ফাদি আইয়াদ, (৩৯)।
সম্প্রতি খলিজ টাইমসকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি জানান, আমরা এই সাইনেবোর্ড লাগিয়েছি যাতে মানুষ এখানে আসতে স্বাস্ছন্দ্যবোধ করে। মানুষ আমাদের হোটেলের পাশ দিয়ে চলে যায়। অনেকে ক্ষুধার্ত থাকে। কিন্তু টাকা না থাকার কারণে আসে না। এমন লোকেরা যখন এই সাইনবোর্ড দেখেন, আমাদের হোটেলে আসেন। তাদের জন্যে সব ধরণের খাবার ফ্রি।
‘যে কেউ হোটেলে প্রবেশ করে ম্যানু থেকে পসন্দ মত খাবারের অর্ডার দিতে পারেন। চা কফি পানিসহ সবকিছু এখানে ফ্রি।’ যোগ করেন হোটেল মালিক।
ফাদি বলেন, দৈনিক ৩০/৩৫ জন মানুষকে তারা এই সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। প্রতিদিন সকাল থেকে নিয়ে রাত পর্যন্ত এবং সপ্তায় সাত দিনের সাত দিনই হোটেলটি খোলা থাকে।
‘বিভিন্ন দেশের নাগরিকরা এখানে আসেন- পাকিস্তান, ভারত, আফ্রিকা, ইউরোপ। আমাদের এখানে নিয়মিত খেতে আসেন এমন লোকও আছে। একজন অস্ট্রলিয়ান নারী আছেন, তার কিছু সমস্যা আছে। তিনি প্রতিদিন আমাদের এখানে ফ্রি খেতে আসেন,’ বলেন ফাদি।
এখানে ফ্রি খাওয়ানোর কারণে হোটেলের লোকসান হয় না? এমন প্রশ্নের জবাবে হোটেলের মালিক বলেন, এভাবে ফ্রি সেবা দেয়ার কারণে তার ব্যবসা বরং আরও ভালোভাবে চলছে। ২০১১ সনে প্রথম ফ্রি খাবার প্রদানের একটি হোটেল খোলার পর এ পর্যন্ত তার আরও তিনটি শাখা খুলেছেন। শীঘ্রই আরও একটি শাখা খোলার চিন্তা আছে।
তিনি বলেন, আমাদের ব্যবসা খাবার নিয়ে। কিন্তু আমার মাথায সব সময় এ চিন্তা কাজ করে যে, আমার কিছু নৈতিক দায়িত্বও আছে যারা খাবার কিনতে পারে না তাদের প্রতি। খাবার মানুষের একটি মৌলিক অধিকার। আমরা চাই, যারা অর্থিকভাবে স্বচ্ছল নয়, তারা ক্ষুধায়ও কষ্ট না করুক।
যখন আমরা কোনো ক্ষুধার্তকে খাবার খাওয়াই, এবং খাওয়ার পর ক্ষুধার্তদেরকে হাসতে দেখি তখন আমাদের মনে যে এক পুলক অনুভব করি, তাতো আর টাকা পয়সা দিয়ে কিনতে পাওয়া যায় না, যোগ করেন ফাদি।
ফাদি বলেন, আমাদের এখন অনেক বন্ধু-বান্ধব আছে। এখানে যারা খেয়ে যান, তারা আবার আমাদের কাছেই আসেন। আমরা তাদেরকে এধরণের মহৎ কাজের প্রেরণা অন্যদের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্যে উৎসাহিত করি।