মহিলাকে পিটিয়ে হত্যায় জড়িত ‘হৃদয়’কে খুঁজছে পুলিশ!
প্রকাশিত হয়েছে : ১১:১১:০০,অপরাহ্ন ২২ জুলাই ২০১৯ | সংবাদটি ১৫১০ বার পঠিত
আমাদের প্রতিদিন ডেস্ক:: ছোট্ট মেয়েকে ভর্তি করার জন্য রাজধানীর বাড্ডায় একটি স্কুলে গিয়েছিলেন তাছলিমা বেগম রেনু নামে এক মহিলা। কিন্তু গেটে ঢুকতেই ছেলেধরা সন্দেহে ঐ মহিলাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ হত্যার ঘটনায় প্রধান সন্দেহভাজনের একজনের পরিচয় জানতে পেরেছে পুলিশ। তার নাম হৃদয়। ফেসবুকে ছবি প্রকাশের পর তিনি পালিয়ে গেছেন। পুলিশ তাকে খুঁজছে।
শনিবার সকালে রাজধানীর উত্তর পূর্ব বাড্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে পিটিয়ে হত্যা করা হয় দুই সন্তানের জননী রেনুকে। তিনি তার মেয়েকে ভর্তি করতে ওই স্কুলে গিয়েছিলেন। কিন্তু পদ্মাসেতু নিয়ে ছড়ানো গুজবে বিশ্বাস করে তাকে ছেলে ধরা সন্দেহে আটকায় স্থানীয়রা। প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যা করা হয় তাকে।
মর্মান্তিক এই ঘটনার ভিডিও প্রকাশ হয়েছে সামাজিক মাধ্যমে। আর এতে নীল টি শার্ট পড়া এক যুবককে হাতে লাঠি নিয়ে ক্রমাগত পেটাতে দেখা যায় রেনুকে। আর তার ছবি এরই মধ্যে ভাইরাল হয়েছে ফেসবুকে।
বাড্ডা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম ওই যুবকের পরিচয় নিশ্চিত করেছেন। জানান, তার নাম হৃদয়। উত্তরবাড্ডায় বাবা হানিফ আলীর সবজির দোকানে কাজ করেন তিনি। পড়াশোনা করেননি। এলাকায় আগে থেকে বখে যাওয়া যুবক হিসাবে পরিচিত। তবে হৃদয়ের নামে থানায় কোনো অভিযোগ নেই বলেও নিশ্চিত করেছেন ওসি।
মামালার তদন্তে থাকা বাড্ডা থানার উপ-পরিদর্শক সোহেরাব হোসেন ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘এই ঘটনায় জড়িত বেশ কয়েকজনকে আমরা চিহ্নিত করেছি। এর মধ্যে দুই দিনে চারজনকে গ্রেপ্তারও করে কোর্টে নিয়ে এসেছি। তাদের রিমান্ডের বিষয়ে কথা আবেদন হবে।’
এই হত্যার ঘটনায় হৃদয়ের সঙ্গে থাকা বাচ্চু বাপ্পী, শাহীন ও জাফর ধরা পড়েছেন এরই মধ্যে। তাদেরকে রিমান্ডে নেয়ার আবেদন জানিয়ে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।
হৃদয়কে গ্রেপ্তারের উদ্যোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা চেষ্টা অব্যাহত রাখছি। তবে তাকে বের করার বিষয়ে এখনই কিছু বলছি না। সেটা দ্রুততম সময়ে করা হবে।’
যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ঘটনাটি ঘটেছে সেই উত্তর বাড্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহনাজ বেগম জানান, তিনি এর আগে হৃদয়কে সেখানে দেখেনি। বলেন, ‘আমি সহকর্মীদের মাধ্যমে দেখেছি। অনেকে এই ছবিটি দেখিয়েছে। আমি তো তাকে আগে দেখিনি। তবে লোকে বলছে ওর বাবা নাকি এই এলাকায় সবজি বিক্রি করে। তবে ওর বিষয়ে আমাদের কােেছ তেমন কোনো তথ্য নেই।’
নিহত রেনুর ভাগ্নে সৈয়দ নাসির উদ্দিন টিটু বলেন, ‘সন্দেহের বশে একজন মানুষকে পিটিয়ে মেরে ফেলেত পারে এটা কেমন কথা? আমার খালার তো কোনো দোষ ছিল না। মেয়েকে স্কুলে ভর্তি করাবে বলে খোঁজ নিতে বাড্ডার ওই স্কুলে গিয়েছিল। আমরা এই হত্যার সুষ্ঠু বিচার চাই বিচার চাই। হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই; যেন এরকম পরিণতি আর কারও বেলায় না ঘটে।’