‘শহীদ মিনার’ ভেঙ্গে বিদ্যালয়ের সেফটি টাংকি নির্মাণ!
প্রকাশিত হয়েছে : ৮:১০:৪৮,অপরাহ্ন ১৭ জুন ২০১৯ | সংবাদটি ৭১০ বার পঠিত
আমাদের প্রতিদিন ডেস্ক:: মৌলভীবাজারের বড়লেখা দাসের বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ে ভাষা শহীদদের জন্য নির্মিত শহীদ মিনার ভেঙে টয়েলেটর সেফটি টাংকি তৈরী করা হয় ফুসে উঠছেন এলাকাবাসী। নির্মাণাধীন বিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক ভবনের টয়লেটের সেফটি ট্যাংকি নির্মাণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিক্ষুব্ধরা। অবিলম্বে ওই সেপটি টাংকি অপসারণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় সূত্র জানায়, দাসের বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ে কোনো শহীদ মিনার না থাকায় স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র যুক্তরাজ্য প্রবাসী সাইফুল আলম ব্যক্তিগত অর্থায়নে মাঠের উত্তর দিকে একটি শহীদ মিনার নির্মাণ করে দেন। প্রায় ১৮ বছর ধরে এ শহীদ মিনারে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ও জাতীয় দিবসে স্কুলের শিক্ষক শিক্ষার্থী ছাড়াও স্থানীয় রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ফুল দিয়ে ভাষা শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে আসছেন।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের অর্থায়নে ২০১৭ সালের ১৬ মার্চ স্কুলের চারতলা ভিতের একতলা বিশিষ্ট একটি অ্যাকাডেমিক ভবনের নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়।
সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার শহীদ মিনারের পশ্চিম পাশের কয়েকটি সিঁড়ি ভেঙে এ ভবনের টয়লেটের সেপটি টাংকি নির্মাণ করেছেন।
রমজান মাসের ছুটি চলাকালীন শৌচাগারের ট্যাংকি নির্মাণ করায় বিষয়টি স্কুলের শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর নজরে আসেনি।
শনিবার স্কুল খোলার পর শহীদ মিনার ভেঙে টয়লেটের সেপটি ট্যাংকি সকলের নজরে আসলে চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করতে থাকে।
এলাকার মুক্তিযোদ্ধা সফিক উদ্দিন, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মাহতাব উদ্দিন, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী মুছব্বির আলী, উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক নজব আলী, মুক্তিযোদ্ধা মনির উদ্দিন, দাসের বাজার বণিক সমিতির সভাপতি বাহার উদ্দিন, শিক্ষানুরাগী লোকমান আহমদ, ফয়সল আহমদ প্রমুখ বলেন, শহীদ মিনারের একাংশ ভেঙে এভাবে সেপটিক ট্যাংক নির্মাণ করে ভাষা সৈনিকদের প্রতি চরম অবজ্ঞা-অবমাননা করা হয়েছে। যা জাতির জন্য অত্যন্ত লজ্জাজনক। তারা অবিলম্বে এ সেপটিক ট্যাংক অপসারণের দাবি জানান।
এ ব্যাপারে স্কুলের প্রধান শিক্ষক দীপক রঞ্জন দাস বলেন, ঠিকাদারের মিস্ত্রিরা শহীদ মিনার স্পর্শ না করেই সেপটিক ট্যাংক নির্মাণ করতে পারবে বলেছিল। পরে দেখা যায়, তারা শহীদ মিনারের সিঁড়ি ভেঙে ফেলেছে।
স্কুল কমিটির সভাপতি স্বপন চক্রবর্তী বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে এ স্থান থেকে শহীদ মিনারটি স্কুলের প্রশাসনিক ভবনের সামনে স্থানান্তরের পরিকল্পনা রয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী আফজাল হোসেন বলেন, স্কুল কমিটির সভাপতি স্বপন চক্রবর্তী ঠিকাদারকে স্থান নির্ধারণ করে দেওয়াই এখানে ট্যাংকি নির্মাণ করা হয়। তবে সবাই চাইলে শহীদ মিনারের পাশ থেকে সেপটিক ট্যাংক সরানো যেতে পারে।