বেক্সিট পেছানোর প্রস্তাবে সমর্থন এমপিদের
প্রকাশিত হয়েছে : ১১:৪৯:০৮,অপরাহ্ন ০৪ এপ্রিল ২০১৯ | সংবাদটি ৩৮১ বার পঠিত
আমাদের প্রতিদিন ডেস্ক:: ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে যুক্তরাজ্যের বিচ্ছেদ (ব্রেক্সিট) প্রক্রিয়া আরো কিছু দিন পিছিয়ে দেওয়ার প্রস্তাবে সমর্থন দিয়েছেন ব্রিটেনের পার্লামেন্টের সদস্যরা।
বিবিসি জানিয়েছে, বুধবার এ বিষয়ে আনা একটি প্রস্তাব মাত্র এক ভোটের ব্যবধানে পাস হয় পার্লামেন্টে।
প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে ব্রেক্সিট নিয়ে বিরোধীদলীয় নেতা জেরেমি করবিনের সঙ্গে বৈঠক করার পর পার্লামেন্টে এ প্রস্তাব তোলা হয়।
প্রাক্তন মন্ত্রী লেবার দলের এমপি ইভেট কুপার এ প্রস্তাব তোলার পর পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউজ অব কমন্সে প্রস্তাবের পক্ষে ৩১৩ ও বিপক্ষে ৩১২ ভোট পড়ে।
কোনো চুক্তি ছাড়াই যেন ব্রেক্সিট সম্পন্ন না হয় তা নিশ্চিত করতেই এ প্রক্রিয়া পুনরায় পেছানোর উদ্যোগ নিয়েছে ব্রিটেন। এখন এই প্রস্তাব আইনে পরিণত হতে পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ লর্ড সভার অনুমোদন পেতে হবে।
খসড়া আইনে পরিণত হওয়া এ প্রস্তাব আজ লর্ড সভায় তোলা হবে। তবে ব্রেক্সিট আর পেছানোর অনুমোদন দেওয়া হবে কি না সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের ভার ইইউ’র হাতে।
এর আগে ব্রেক্সিট নিয়ে সৃষ্ট অচলাবস্থা কাটাতে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে বিরোধীদলীয় (লেবার পার্টি) নেতা জেরেমি করবিনের সঙ্গে আলোচনার কথা বলেন। এ জন্য ব্রেক্সিট প্রশ্নে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) কাছে সময়সীমা আরো বাড়ানোর অনুরোধ জানাবেন বলে জানান তিনি।
ইইউ থেকে বেরিয়ে যাওয়া নিয়ে চুক্তির বিষয়ে একে একে সব চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর বুধবার বিরোধীদলীয় (লেবার পার্টি) নেতা জেরেমি করবিনের সঙ্গে বৈঠক করেন মে। দুই নেতার মধ্যে আলোচনাকে ‘গঠনমূলক’ বলে বর্ণনা করা হয়েছে এবং বৃহস্পতিবারও তাদের মধ্যে আলোচনা অব্যাহত থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
অবশ্য বিরোধীদের সঙ্গে সমঝোতার মাধ্যমে আরেকটি চুক্তি হলেও নিজের বিচ্ছেদ চুক্তিটি তার অংশ হয়ে থাকবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে যুক্তরাজ্যের বেরিয়ে যাওয়ার (ব্রেক্সিট) চুক্তি বিষয়ে ব্রিটেনের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউজ অব কমন্সে ভোটাভুটিতে পরপর তিনি দফা হেরে যান থেরেসা মে।
এ নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপের প্রস্তাবেও একমত হতে পারেননি পার্লামেন্ট সদস্যরা। এরপর থেরেসা মে’র বিচ্ছেদ চুক্তির চার বিকল্পের একটিতেও সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতের ভিত্তিতে কোনো সিদ্ধান্তে আসতে ব্যর্থ হন এমপিরা। এর ফলে ব্রেক্সিট নিয়ে আরো অনিশ্চয়তায় পড়ে যায় যুক্তরাজ্য।
ব্রেক্সিট পাস হলে প্রধানমন্ত্রী মে পদত্যাগ করবেন, এমন প্রতিশ্রুতি দেওয়া সত্বেও অচলাবস্থা কাটেনি। ফলে চুক্তি ছাড়াই ইইউ থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে যাওয়ার শঙ্কা দেখা দেয়।
যেহেতু আগামী ১২ এপ্রিল ইইউ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কথা রয়েছে ব্রিটেনের। তাই থেরেসা মেকে আগামী ১২ এপ্রিলের মধ্যে হয় ইইউ’র কাছ থেকে ব্রেক্সিটের জন্য সময় বাড়িয়ে নেয়ার চেষ্টা করতে হবে না হলে চুক্তি ছাড়াই ইইউ ত্যাগের সিদ্ধান্ত নিতে হবে যুক্তরাজ্যকে।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ২৩ জুন যুক্তরাজ্যে এক গণভোটে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পক্ষে রায় দেন সে দেশের ভোটাররা। প্রায় এক কোটি ৭৫ লাখে ভোটারের মধ্যে ৫২ শতাংশ ভোট দিয়েছিল চার দশকের সম্পর্ক ছেড়ে ইইউ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পক্ষে। তাদের যুক্তি ছিল, ইইউ’র অন্য দেশগুলোকে টানতে গিয়ে তাদের অনেক পাউন্ড খরচ হয়ে যাচ্ছে।