সুবিধা নেয়া ব্যক্তিদের মুখোশ উন্মোচন করবেন সাহেদ!
প্রকাশিত হয়েছে : ৫:৩৭:২৫,অপরাহ্ন ১৬ জুলাই ২০২০ | সংবাদটি ১১০০ বার পঠিত
আমাদের প্রতিদিন ডেস্ক:: রিজেন্ট গ্রুপ ও রিজেন্ট হাসপাতাল লিমিটেডের চেয়ারম্যান সাহেদ করিম ওরফে মোহাম্মদ সাহেদ এক জিজ্ঞাসাবাদে দাবি করেছেন, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও সিনিয়র সাংবাদিক মিলিয়ে অন্তত অর্ধশত ব্যক্তিকে বিভিন্ন সময় অর্থ দিয়েছেন। কিন্তু তিনি যখন বিপদে পড়েছেন কাউকে পাশে পাননি। তিনি বলেছেন, তার কাছ থেকে সুবিধা নেওয়া সবার মুখোশ উন্মোচন করবেন।
গ্রেপ্তারের পর ঢাকায় আনার সময় র্যাব ও পরে রাতে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) জিজ্ঞাসাবাদে সাহেদ এসব কথা বলেছেন। যদিও তার দেওয়া তথ্য যাচাই বাছাই শুরু হয়েছে। তদন্তকারীরা বলছেন, যাদের নাম আসছে, তাদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
বৃহস্পতিবার (১৬ জুলাই) আদালতে হাজির করা হয় সাহেদকে। সেখানে আদালত সাহেদের ১০ দিনের এবং রিজেন্ট হাসপাতালের এমডি মাসুদ পারভেজের ১০ দিন ও কর্মী তরিকুল ইসলামের ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
আদালতের কাঠগড়ায় নিজেকে নির্দোষ দাবি করে কেঁদে ফেলেন সাহেদ। এমনকি নিজে ও তার বাবা করোনায় আক্রান্ত হওয়ার কথাও বলেন। এক মাস বাড়ি যেতে পারেননি, ছোট্ট সন্তানেরও মুখও দেখতে পারেননি এমন কথাও বলেন। যদিও উপস্থিত আইনজীবীরা তাকে থামিয়ে দেন।
গত মার্চ মাস থেকে এখন পর্যন্ত সাহেদ করোনার ভুয়া রিপোর্ট ও চিকিৎসার প্রতারণার মাধ্যমে তিন থেকে চার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে প্রতিবেদনে দাবি করেছেন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর আবদুল্লাহ আবু আদালতকে বলেন, সাহেদ মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছেন। এর কোনো ক্ষমা নেই। সাহেদ হলেন দেশের শত্রু। তিনি ও তার সহযোগীরা ভুয়া রিপোর্ট দিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
বুধবার (১৫ জুলাই) সাহেদ গ্রেপ্তারের পর হেলিকপ্টারে ঢাকায় আনার সময় তার কাছে বেশি কিছু বিষয় জানতে চান র্যাব কর্মকর্তারা। পরে বিকেলে ডিবিতে হস্তান্তরের পর রাতে গোয়েন্দা পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। সেখানেও অকপটে অনেক কিছুই বলেছেন সাহেদ। যদিও তার তথ্যের সত্যতা এখনো যাচাই করতে পারেনি গোয়েন্দারা।
এসব জিজ্ঞাসাবাদে সাহেদ বলেছেন, গত ১০ বছরে বহু মানুষকে তিনি উপকার করেছেন। অনেক রাজনীতিবিদকে অর্থ দিয়েছেন। অনেক ব্যবসায়ীও তার কাছে এসেছে। এমনকি বেশ কয়েকজন সিনিয়র সাংবাদিক নানা উছিলায় তার কাছ থেকে অর্থ নিয়েছেন। পালিয়ে থাকার সময় তিনি দেখেছেন ওই সাংবাদিকরাও তার বিরুদ্ধে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। তিনি এখন তাদের মুখোশ উন্মোচন করতে চান।
সাহেদ স্কুল শেষ করেননি বলে আলোচনা থাকলেও জাতীয় পরিচয়পত্রে নিজের নাম সংশোধন করে ‘সাহেদ করিম’ থেকে ‘মোহাম্মদ সাহেদ’ হওয়ার সময় তিনি ‘ও’ লেভেলের সনদ দাখিল করেছিলেন নির্বাচন কমিশনের কাছে। জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বলছেন, সাহেদের ওই শিক্ষাগত সনদের সত্যতা তারা খতিয়ে দেখবেন। জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য দেওয়া তথ্যে সাহেদ নিজেকে স্নাতক ডিগ্রিধারী বলে উল্লেখ করেছেন।
বুধবার (১৫ জুলাই) সাতক্ষীরা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় সাহেদকে। এরপর হেলিকপ্টারে করে তাকে ঢাকায় আনা হয়। তার বিরুদ্ধে অর্ধশতাধিক মামলাও রয়েছে। এর আগে গত ৬ থেকে ৮ জুলাই উত্তরা ও মিরপুরের রিজেন্ট হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে করোনা ভাইরাস পরীক্ষার রিপোর্ট জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়ার পর হাসপাতাল দু’টো বন্ধ করে দেয় র্যাব।