অতিরিক্ত ফি দিয়েও মিলছেনা বিদ্যুতের আলো!
প্রকাশিত হয়েছে : ১২:২৫:২৪,অপরাহ্ন ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ | সংবাদটি ২৯৮ বার পঠিত
উজ্জ্বল রায়, নড়াইল থেকে:: নড়াইলের পুরুলিয়া গ্রামে ১২০টি পরিবারের পল্লী বিদ্যুতের সংযোগ নিতে প্রত্যেক পরিবারের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের স্থানীয় কয়েকজন দালাল হুমকি দিচ্ছে, এ অর্থ না দিলে কারো ঘরে আলো জ্বলবে না। এমনকি যাদের বৈদ্যুতিক খুঁটি ও তার সংযোগ দেয়া হয়েছে তা খুলে নেয়ারও হুমকি দিচ্ছে দালালরা।
জানা গেছে, নড়াইলের কালিয়া উপজেলার মধ্য পুরুলিয়া ও দাড়িপরপাড়ায় যশোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২, নড়াইল থেকে ১২০জন গ্রাহকের মধ্যে নতুন বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য তাদের বাড়ির সামনে দিয়ে সম্প্রতি বৈদ্যুতিক খুঁটি বসানো হয়েছে এবং টানানো হয়েছে তার। আবাসিক সংযোগের জন্য একজন গ্রাহক অফিসে জামানত বাবদ ৪০০ টাকা এবং সমিতির সদস্য বাবদ ৫০ টাকা দিলে সংশ্লিষ্ট অফিস থেকে বৈদ্যুতিক খুঁটি, সার্ভিস তার (১৩০ ফুটের মধ্যে) এবং মিটার গ্রাহকের বাড়ির আঙ্গিনায় বসিয়ে দেয়া হবে। কিন্তু দালালচক্র আবেদনকারীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছে। নড়াইলের কালিয়া উপজেলার পুরুলিয়া মধ্যপাড়ার অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক রুহুল কুদ্দুস, ফিরোজা বেগম, পলি বেগম, ইবাদুল শেখ, লিটন শেখ, চান মোল্যা, খাজা মিয়া, আকছির বাকা মিনা, গফুর শেখ, জান্নু মোল্যা, সালামত শেখ, দাড়িপরপাড়ার রবিউল ইসলাম, বাদল মোল্যা, সুরত গাজী, সোহেল মোল্যা, সাবু শেখসহ ১২০টি পরিবারের প্রত্যেকের কাছ থেকে সাড়ে ৫ হাজার টাকা করে নিয়েছে দালাল চক্র ।
নড়াইলের কালিয়া উপজেলার পুরুলিয়া গ্রামের ভ্যান চালক ফেরদৌস গাজী বলেন, ‘আমার বাড়ি নির্দিষ্ট আয়ত্বের বাইরে দেখিয়ে বৈদ্যুতিক খুঁটিসহ সংযোগের জন্য ১২ হাজার টাকা অথবা খুঁটি বাদে ৬ হাজার টাকা দাবি করেছে। এ জন্য ১ হাজার টাকা দিলেও আমার বাড়িতে এখনও খুঁটি ও তার পৌঁছায়নি। ২৬ আগস্ট সকালে সংযোগের জন্য গেলে ৬ হাজার টাকা ছাড়া বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হবে না বলে জানিয়েছে।’ নড়াইলের কালিয়া উপজেলার পুরুলিয়া মধ্যপাড়া গ্রামের শফিক মোল্যার স্ত্রী পলি বেগম অভিযোগে জানান, বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য তার কাছে ৫ হাজার টাকা দাবি করেছে। দাবিকৃত এ অর্থ দেয়নি বলে হুমকি দিয়েছে, তোমার বাড়ির পাশের বৈদ্যুতিক খুঁটি ও তার খুলে নেয়া হবে। টাকা না দিলে ঘরে আলো জ্বলবে না।
যশোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ নড়াইলের ডিজিএম দিলীপ কুমার বাইন বলেন, এ ব্যাপারে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই। কালিয়া উপজেলার সাব জোনাল অফিস ভালো বলতে পারবে। তিনি অনিয়মের বিষয়টি জোনাল অফিসের এজিএম-এর সাথে কথা বলবেন বলে জানান।
কালিয়া উপজেলার সাব জোনাল অফিসের এজিএম রুবেল হোসেন বলেন, আবাসিক গ্রাহকের বাড়িতে বৈদ্যুতিক খুঁটি ও তার পৌছে দিতে সরকারিভাবে রশিদের মাধ্যমে জমা দিতে হবে ৪৫০ টাকা। এর বাইরে অফিসের আর কোনো খরচ নেই। বাকিটা ব্যক্তিগত। এসব বিষয়ে ধারণা দিতে বিভিন্ন সময় মিটিং ও উঠান বৈঠক করা হয়েছে। তারপরও কিভাবে মানুষ কিভাবে দালালদের ক্ষপরে পড়ে বুঝিনে। এলাকার কেউ এ বিষয় নিয়ে কোনো অভিযোগও করেনি। আপনারা এসব দালালদের পুলিশে ধরিয়ে দিন। তিনি আরও বলেন, এ বছরের মধ্যেই নড়াইলের কালিয়া উপজেলার সমস্ত গ্রামে শতভাগ বিদ্যুতায়নের লক্ষমাত্রা রয়েছে। সেখানে এ ধরনের কাজ খুবই দুঃখজনক। তিনি বিষয়টি দেখছেন বলে জানান।