দায়মুুক্তির জন্য এমপি পাপুল কাণ্ডে রাষ্ট্রদূতকে আটক করেনি কুয়েত!
প্রকাশিত হয়েছে : ৮:৪৮:০৭,অপরাহ্ন ১২ জুলাই ২০২০ | সংবাদটি ৬০১ বার পঠিত
আমাদের প্রতিদিন ডেস্ক:: কূটনৈতিক দায়মুক্তি না থাকলে বাংলাদেশি এমপি পাপুল কান্ডে হয়তো কুয়েতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এস এম আবুল কালামকেও আটক করা হতো বলে জানিয়েছেন কুয়েত ট্রান্সপারেন্সি সোসাইটির (কেটিএস) চেয়ারপারসন মাজিদ আল মুতাইরি।
রবিবার (১২ জুলাই) ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) ও কেটিএস আয়োজিত ‘সংঘবদ্ধ অপরাধ মোকাবিলায় নাগরিক সমাজের ভূমিকা’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল সেমিনারে একথা বলেন তিনি।
গত ৬ জুন মানব ও অর্থপাচারের অভিযোগে কুয়েতে গ্রেপ্তার হন বাংলাদেশের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ শহিদ ইসলাম পাপুল। সেমিনারে মাজিদ আল মুতাইরি অর্থ ও মানবপাচারে এমপি পাপুলের যুক্ত থাকার অভিযোগটি তুলে ধরেন।
আরবি ভাষায় দেওয়া বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘কূটনৈতিক দায়মুক্তি না থাকলে হয়তো কুয়েতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকেও আটক করা হতো।’ টিআইবির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতেও এ বক্তব্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
২০১৬ সালে কুয়েতে রাষ্ট্রদূত পদে নিয়োগ পান আবুল কালাম। ২০১৮ সালে তার চুক্তির মেয়াদ দুই বছর বাড়ে।
সেমিনারে অংশ নেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের (টিআই) এর চেয়ারপারসন ডেলিয়া ফ্যারাইরা রোবিও। আলোচনায় যুক্ত হন ইন্টার-পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের (আইপিইউ) সম্মানসূচক প্রেসিডেন্ট সাবের হোসেন চৌধুরী, কুয়েতের সাবেক এমপি ড. হাস্সান জোহার, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান এবং কুয়েত ইউনিভার্সটি অফ ল স্কুলের অধ্যাপক ড. দালাল আল সাইফ। সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন কেটিএসর পরিচালনা পর্ষদের সদস্য আসরার হায়াত।
সেমিনারে বক্তারা বলেন, মানব ও অর্থ পাচারের মত সংঘবদ্ধ অপরাধ মোকাবিলায় প্রয়োজন রাজনৈতিক সদিচ্ছা। আইনের কঠোর প্রয়োগের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর পারস্পারিক তথ্য বিনিময় এ ধরনের অপরাধ রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। প্রয়োজনীয় আইনি সংস্কার ও সচেতনতা তৈরিতে নাগরিক সমাজের ভূমিকাও অপরিহার্য।
সূচনা বক্তব্যে ডেলিয়া ফ্যারাইরা রোবিও বলেন, দুর্নীতি বন্ধ করতে হলে অর্থপাচার বন্ধ করতেই হবে। সম্মিলিত ও আন্তঃদেশীয় প্রচেষ্টার মাধ্যমেই তা সম্ভব। দুর্নীতি প্রতিরোধে আইনের সঠিক ও কঠোর প্রয়োগ জরুরি। বিশেষ করে আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক ও প্রভাবমুক্ত থাকতে হবে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান ‘অর্থ ও মানবপাচারে জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্ততার অভিযোগ: প্রভাব ও সম্ভাবনা’ বিষয়ে আলোচনা করেন। ড. ইফতেষারুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশের ৬২ শতাংশ এমপি ব্যবসায়ী। কুয়েতে গ্রেপ্তার এমপি পাপুল ছাড়াও গত কয়েক বছরে বাংলাদেশের একাধিক জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে অর্থ ও মানব পাচার, মাদক ব্যবসা, ক্ষমতার অপব্যবহার, ক্যাসিনো ব্যবসাসহ নানা অবৈধ উপায়ে সম্পদ অর্জনের অভিযোগ এসেছে। অর্থ ও মানব পাচারের মত অপরাধে কুয়েতে একজন এমপি আটক হওয়ার ঘটনা বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত বিব্রতকর। আবার এ ঘটনা দেশের রাজনীতি ও জনপ্রতিনিধিত্বে দুর্বৃত্তায়নের দৃষ্টান্তও।
সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, দুর্নীতিও করোনাভাইরাসের মতো। উৎস থেকে নির্মূল করতে না পারলে সাধারণ জনগণেরও দুর্নীতিতে আক্রান্ত ও সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়।