হোয়াইট হাউস চত্বরে বিক্ষোভ, বাংকারে ট্রাম্প!
প্রকাশিত হয়েছে : ৬:২৬:৫৪,অপরাহ্ন ০১ জুন ২০২০ | সংবাদটি ৪৩৬ বার পঠিত
আমাদের প্রতিদিন ডেস্ক:: শ্বেতাঙ্গ পুলিশের হাতে কৃষ্ণাঙ্গ যুবকের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে আমেরিকায় অশান্তি ক্রমশ বাড়ছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিক্ষোভকারীদের দেখে নেওয়ার হুমকি দিলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসছে না। দিন যত গড়াচ্ছে ততই বর্ণবিদ্বেষ বিরোধী আন্দোলন নতুন নতুন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে। পুলিশি ঘেরাটোপ পেরিয়ে একাধিকবার হোয়াইট হাউসের দরজায় পৌঁছে গিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা।
মার্কিন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে জানানো হয়েছে, শুক্রবার (৩০ মে) হোয়াইট হাউসের আশপাশের এলাকায় পুলিশের সঙ্গে বিক্ষুব্ধ জনতার সংঘর্ষ এতই তীব্র হয়ে উঠেছিল যে, ট্রাম্পকে হোয়াইট হাউসের গোপন বাংকারে নিয়ে যান নিরাপত্তাকর্মীরা। এক ঘণ্টারও বেশি সেখানেই ছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসার পর তিনি বাইরে আসেন।
গত ২৫ মে মিনেসোটার মিনিয়াপলিসে জর্জ ফ্লয়েড নামে এক কৃষ্ণাঙ্গ যুবককে খুনের অভিযোগ উঠেছে একজন শ্বেতাঙ্গ পুলিশ আধিকারিকের বিরুদ্ধে। ঘটনার যে ভিডিও ফুটেজ ভাইরাল হয়েছে, তাতে ওই পুলিশ আধিকারিককে কৃষ্ণাঙ্গ যুবকের গলা ৫ মিনিটের বেশি হাঁটু দিয়ে চেপে রাখতে দেখা গিয়েছে। এরপরই বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বর্ণবিদ্বেষ বিরোধীরা। আন্দোলনকারীদের থামাতে পুলিশকে লাঠি, রাবার বুলেট, স্মোক গ্রেনেড, টিয়ার গ্যাস ব্যবহার করতে হয়েছে।
পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত ৫ বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয়েছে। আহতের সংখ্যা কয়েকশো। তাঁদের মধ্যে নিরাপত্তাকর্মীরাও আছেন। প্রায় ৫ হাজার আন্দোলনকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ৪০টি শহরে জারি হয়েছে কার্ফিউ। লকডাউন উপেক্ষা করে লক্ষ লক্ষ মানুষ যেভাবে পথে নামছেন, তাতে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের উদ্বেগ বেড়েছে।
গত শতকের ছয়ের দশকে বর্ণবিদ্বেষ বিরোধী আন্দোলনে উত্তাল হয়েছিল আমেরিকা। সেসময় আন্দোলনে নেতত্ব দিয়েছিলেন কিংবদন্তি মানবাধিকারকর্মী মার্টিন লুথার কিং। ওই সময়ের পর কখনই আমেরিকায় বর্ণবিদ্বেষ বিরোধী আন্দোলন এত তীব্র হয়নি বলে মনে করা হচ্ছে।
জানা গিয়েছে, শুক্রবার হোয়াইট হাউসের চারপাশে কয়েকহাজার বিক্ষোভকারী জড়ো হয়েছিলেন। তাঁদের ভিড়ে প্রেসিডেন্ট নিবাসগামী রাস্তাগুলি বন্ধ হয়ে যায়। হোয়াইট হাউসের কাছাকাছি জায়গায় আগুন লাগানোর ঘটনাও ঘটে। পুলিশের ওপর চড়াও হন বিক্ষোভকারীদের একাংশ। সেসময় হোয়াইট হাউসেই ছিলেন ট্রাম্প।
পরিস্থিতি ঘোরালো হয়ে ওঠায় নিরাপত্তাকর্মীরা তাঁকে বাংকারে চলে যাওয়ার পরামর্শ দেন। সেই পরামর্শ মেনে নেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। কিছুক্ষণের মধ্যেই পুলিশ ও ন্যাশনাল গার্ডের বিশাল বাহিনী ওয়াশিংটন ডিসির পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। হোয়াইট হাউসকেও অবরোধমুক্ত করা হয়। তারপরও অবশ্য দফায় দফায় সেখানে বিক্ষোভ হয়েছে। সোমবার হোয়াইট হাউসের সামনে কয়েকশো আন্দোলনকারী জমা হয়েছিলেন। তবে এদিনের বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণই ছিল।