মার্কিন সেনা প্রত্যাহারে সংসদে প্রস্তাব পাস
প্রকাশিত হয়েছে : ২:১৯:০০,অপরাহ্ন ০৫ জানুয়ারি ২০২০ | সংবাদটি ২৩৭৯ বার পঠিত
আমাদের প্রতিদিন ডেস্ক:: ইরানের জেনারেল কাসেম সোলেইমানিকে হত্যার পর ইরাক থেকে মার্কিন সেনাদের প্রত্যাহার করতে দেশটির পার্লামেন্টে একটি প্রস্তাব পাস হয়েছে।
রবিবার (৫ জানুয়ারী) বিশেষ অধিবেশনে পার্লামেন্টের ৩২৯ সদস্যের মধ্যে ১৭০ জনই ওই প্রস্তাবে সাঁয় দিয়ে সই করেছেন।
ইরাকের পার্লামেন্টে যেকোনো বিষয় কার্যকর করতে ১৫০ ভোটের প্রয়োজন হয়। মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের প্রস্তাবটিতে তারও বেশি সদস্য স্বাক্ষর করায় এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে কোনও বাধা রইল না।
শুক্রবার (৩ জানুয়ারী) ভোরে ইরাকের রাজধানী বাগদাদে বিমানবন্দরের নিকটে অতর্কিত মার্কিন ড্রোন হামলায় নিহত হন বিশে^র প্রভাবশালী জেনারেল হিসেবে পরিচিত ইরানের কাসেম সোলেইমানি। তার মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিয়া নেতৃত্বাধীন ইরাকি সরকারের মধ্যে অবিলম্বে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের দাবি ওঠে। এরপরই পার্লামেন্টে এই প্রস্তাবটি পাস হওয়ার খবর এল।
জেনারেল সোলেইমানিকে হত্যার পর যুক্তরাষ্ট্র তড়িঘড়ি করে আরও তিন হাজার সেনা ইরাকে পাঠিয়েছে। এরাসহ বর্তমানে ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের কন্টিনজেন্টগুলোতে ৬ হাজার সেনা মোতায়েন রয়েছে বলে ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যকার উত্তেজনায় খেসারত গুণতে হতে পারে ইরাকের জনগণকে। কারণ প্রাথমিকভাবে ইরান প্রতিবেশি দেশ ইরাকে থাকা মার্কিন সেনাদের ওপর হামলা চালাতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। আর এ কারণেই ইরাকের জনগণ তাদের দেশ থেকে মার্কিন সেনাদের প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ করছে।
ইরাকের প্রধানমন্ত্রী আদেল আব্দুল মাহদি পার্লামেন্টের আইনপ্রণেতাদের সংবিধানের ৫৮ ধারার বিরোধী ‘অবৈধ কার্যকলাপের’ জন্যে পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, মার্কিন হামলা ইরাকের সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত। এই ধরনের চোরাগোপ্তা হামলা ইরাকের জাতীয় আত্মমর্যাদাবোধের জন্যে ‘অপমানজনক’।
সোলেইমানি নিহত হওয়ার ঘটনায় ইরানের পাশাপাশি ইরাকেও ব্যাপক বিক্ষোভ মিছিল হচ্ছে। কারণ দেশটিতে ইরান সমর্থিত শিয়া গোষ্ঠীর প্রভাব রয়েছে। বর্তমানে মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহার করা ইরাকের ‘জাতীয় দাবি’তে পরিণত হয়েছে।
সোলেইমানিকে হত্যার পর মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাবশালী হিজবুল্লাহসহ কয়েকটি বিদ্রোহী গোষ্ঠী অবিলম্বে ইরাক থেকে মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহারের জন্যে পদক্ষেপ নিতে ইরাক সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছিল। ফলে অনাকাক্সিক্ষত যুদ্ধের আশঙ্কায় পার্লামেন্টের সদস্যরা মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের প্রস্তাবনায় স্বাক্ষর করতে বাধ্য হয়েছে।
পার্লামেন্টে বিশেষ অধিবেশন চলাকালে ক্ষোভ প্রকাশ করে স্পিকার সালিম আল-জাবোওরি বলেন, ‘বাগদাদের বিমানবন্দরে মার্কিন সন্ত্রাসী হামলা স্পষ্টতই ইরাকের সার্বভৌমত্ব ও আন্তর্জাতিক নিয়মনীতির লঙ্ঘন।’
আমার আল-শিবলি নামের এক আইনপ্রণেতা বলেন, ‘ইরাকে জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট বা আইএসের পতনের পর আর মার্কিন সেনা থাকার কোনো প্রয়োজন নেই। আমাদের নিজস্ব সামরিক বাহিনী রয়েছে। তারাই আমাদের দেশকে রক্ষা করতে পারবে।