জরুরি অবস্থার মধ্যেই চিলির রাস্তায় দশ লাখ বিক্ষুব্ধ জনতা
প্রকাশিত হয়েছে : ১:২২:৩৮,অপরাহ্ন ২৬ অক্টোবর ২০১৯ | সংবাদটি ৩৭৪ বার পঠিত
আামদের প্রতিদিন ডেস্ক:: চিলির প্রেসিডেন্ট সেবাস্তিয়ান পিনেরার পদত্যাগের দাবিতে রাস্তায় নেমেছে দশ লাখের বেশি মানুষ। গত সপ্তাহে মেট্রোরেলের ভাড়াবৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে আন্দোলনে নামেন দেশটির মানুষ। বিক্ষোভের মুখে ভাড়াবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত থেকে সরেও আসে সরকার। এরপর জীবনযাত্রার ক্রমাগত ব্যয় বৃদ্ধিসহ প্রেসিডেন্ট পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ চালু রাখেন আন্দোলনকারীরা। এমন অবস্থায় জরুরি অবস্থা ঘোষণা দেয় সরকার। জরুরি অবস্থার মধ্যেই রাজধানী সান্তিয়াগোর রাস্তায় নেমে আসেন দশ লাখের বেশি মানুষ। এত লোকের জমায়েতকে দেশটির ইতিহাসেব ‘সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ’ বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, গত শুক্রবার সান্তিয়াগোর বিভিন্ন সড়কে দশ লাখের বেশি মানুষ জড়ো হয়েছে। রাজধানীর গভর্নর কার্লা রুবিলা বারাহোনা সমাবেশের একটি ভিডিও টুইটারে পোষ্ট করে লিখেন, ‘শুক্রবার দিনটি চিলির ইতিহাসে একটি ঐতিহাসিক দিন। সান্তিয়াগো মেট্রোপলিটন হচ্ছে দশ লক্ষাধিক মানুষের শান্তিপূর্ণ পদযাত্রার নায়ক। যারা একটি নতুন চিলির স্বপ্নের প্রতিনিধিত্ব করছে।’
জাতীয় পতাকা হাতে আন্দোলনকারীরা দেশটির একটি জনপ্রিয় প্রতিবাদী গান স্লোগানের মতো করে গান। চিলির স্বৈরশাসক অগাস্তো পিনোচেতের শাসনামলে এই গানটি ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল।
এদিকে যার বিরুদ্ধে এই বিরল বিক্ষোভ, সেই প্রেসিডেন্ট সেবাস্তিয়ানও এক টুইট বার্তায় নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করে বলেছেন, ‘আমরা সবাই বদলে গেছি। আজকের আনন্দময় এবং শান্তিপূর্ণ মিছিলে জনগণের ঐক্যবদ্ধ চিলি গড়ার দাবি ভবিষ্যতের জন্য আশার পথ উন্মুক্ত করেছে।’
মিছিলে অংশ নেওয়া ফ্রান্সিসকো অ্যাংগুইতার বলেন, ‘আমরা ন্যায়বিচার, সততা এবং নীতিবান সরকারের দাবিতে আন্দোলন করছি।’
শুক্রবার সকালে সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীরা দেশটির কংগ্রেস ভবনে প্রবেশের চেষ্টা করে। তখন পুলিশি নিরাপত্তায় রাজনীতিবিদ ও সরকারি কর্মকর্তাদের অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়।
গত ১৮ অক্টোবর মেট্রোরেলের ভাড়া বৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে দেশটিতে বিক্ষোভের সূত্রপাত হয়েছিল। পরে তীব্র বিক্ষোভের মুখে ১৯ অক্টোবর ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত স্থগিত করে দেশটির সরকার। কিন্তু গত ২৩ অক্টোবর সরকার বেতন ভাতা বাড়ানোসহ বেশ কিছু সংস্কার প্রস্তাব করলেও বিক্ষোভ থামেনি। ধীরে ধীরে আন্দোলনের সঙ্গে জীবনযাপনের ক্রমাগত ব্যয় বৃদ্ধি এবং অসমতার মতো বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত হতে থাকে।
গত এক সপ্তাহে বিক্ষোভে অন্তত ১৬ জন নিহত এবং আহত হয় শতাধিক। প্রায় সাত হাজার বিক্ষোভকারীকে আটক করেছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী।
ইতোমধ্যে দেশটির সবগুলো শহরে কারফিউ জারি করতে বাধ্য হয়েছে দেশটির সরকার। বিক্ষোভ দমাতে শুধু রাজধানী সান্তিয়াগোতেই ২০ হাজার পুলিশকে রাস্তায় নামানো হয়েছে।