পুরো গ্রামে ৯ বছর থেকে জন্মায়নি কোন পুত্র সন্তান!
প্রকাশিত হয়েছে : ৬:১৩:৫৪,অপরাহ্ন ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ | সংবাদটি ৪৬৫ বার পঠিত
আমাদের প্রতিদিন ডেস্ক:: পুরো গ্রামবাসী অপেক্ষায় দিন কাটাচ্ছেন একটি পুত্র সন্তানের জন্য। কিন্তু অপেক্ষার প্রহর যেন শেষই হয় না। কারণ, কারও ঘরেই জন্ম নিচ্ছে না পুত্রসন্তান। ২০১০ এর পর এই গ্রামের অধিবাসীরা কোনো সদ্যোজাত শিশুপুত্রের কান্না শোনেননি।
দীর্ঘ ৯ বছর ধরে সেখানে কেবল কন্যা সন্তানেরই জন্ম হয়েছে। একটি পুত্রসন্তানের আশায় অনেক কুসংস্কারেও বিশ্বাস করেছেন গ্রামের অনেক গর্ভবতী নারী। বিজ্ঞান কিংবা পুরোনো ধারণা কিছুই বাদ রাখেননি। তান্ত্রিকের দেওয়া তাবিজ, কুড়ুল রেখেছেন বালিশের নিচে, খেয়েছেন ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ খাবার। কিন্তু সব চেষ্টাই গেছে বিফলে।
প্রায় এক দশক ধরে কোনো পুত্রসন্তান জন্ম না নেওয়া এ গ্রামটির নাম মিয়েজস্কে ওদ্রজান্সকি। পোল্যান্ডের দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্তবর্তী ছোট্ট একটি গ্রাম এটি। দারুণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ এই গ্রামে ৯২টি বাড়ি রয়েছে। প্রায় ৩০০ মানুষের বসবাস এখানে, যার মধ্যে নারীর সংখ্যাই বেশি।
পুরুষের সংখ্যা কম হওয়ায় গাড়ি চালানো, ক্ষেত-খামারে চাষাবাদ থেকে শুরু করে অন্যান্য ভারী কাজও নারীরা করেন এখানে। মাঝেমধ্যে বিপদেও পড়তে হয় তাদের। গ্রামবাসীদের মতে, এখানে সব কাজই চলছে নারীদের নেতৃত্বে। কিন্তু নারীরা নিজেরাই তা চাচ্ছেন না। অনেকেই চাপ সামলাতে ব্যর্থ হচ্ছেন। পুরুষালি নানা কাজে অংশ নিতে গিয়ে সমস্যাতেও পড়ছেন মাঝেমধ্যে।
সবকিছু মিলিয়ে সদ্যোজাত পুত্রসন্তানের অপক্ষায় অধীর আগ্রহে দিন কাটাচ্ছেন মিয়েজস্কে ওদ্রজান্সকি গ্রামের বাসিন্দারা। এ মুহূর্তে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম হওয়াই গ্রামের সবচেয়ে বড় আনন্দের খবর হিসেবে বিবেচ্য। আর তাই গ্রামের মেয়র ঘোষণা দিয়েছেন, যে দম্পতি পুত্রসন্তান উপহার দেবেন, তাদের বিশেষ সম্মানে ভূষিত করা হবে। সঙ্গে থাকবে উপহারও।
তিনি জানান, সেই নবজাতকের নামে গ্রামের একটি রাস্তার নামকরণ করা হবে। তার জন্ম উপলক্ষে বপন করা হবে ওক গাছ। এসবের পাশাপাশি বর্ণিল আয়জনের মাধ্যমে সেই পুত্রসন্তানকে গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য, ইউরোপের দেশ পোল্যান্ডে সার্বিকভাবে পুত্রসন্তানের জন্মহার বেশি। দেশটির জনসংখ্যা জরিপ জানায়, ২০১৭ সালে পোল্যান্ডে ২ লাখ ৭ হাজার পুত্রসন্তানের জন্ম হয়েছে। আর কন্যাসন্তানের জন্ম হয়েছে ১ লাখ ৯৬ হাজার। কিন্তু এই গ্রামটির বেলায় পুরো চিত্রই ভিন্ন। কোনো পুত্র সন্তানই জন্মাচ্ছে না সেখানে।
বিজ্ঞানীরাও এ বিষয়ে কোনো ব্যাখ্যা খুঁজে পাননি। প্রকৃতির এই রহস্য আজও ভেদ করা যায়নি। গ্রামবাসীদের আশঙ্কা, এভাবে চলতে থাকলে অদূর ভবিষ্যতে গ্রামের মেয়েদের বিয়ে দেওয়ার জন্য পাত্র পাওয়া যাবে না।