অবশেষে অভিমান বাঙলো দেবর-ভাবির!
প্রকাশিত হয়েছে : ৯:৪৬:৩৩,অপরাহ্ন ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯ | সংবাদটি ৪৮০ বার পঠিত
আমাদের প্রতিদিন ডেস্ক:: জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদ মারা যাওয়ার আগেই দলের চেয়ারম্যান ও সংসদে বিরোধী দলীয় নেতার পদ নিয়ে অভিমান ছিলো দেবর-ভাবি খ্যাত জিএম কাদের ও রওশন এরশাদের মাঝে। এরশাদ মারা যাওয়ার পর জিএম কাদেরকে চেয়ারম্যান ঘোষণা করা হলে বেকে বসেন রওশন এরশাদ। পরবর্তীতে জিএম কাদেরকে সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা নির্বাচনের জন্য দলের পক্ষ থেকে চিঠি দেয়া হয় স্পিকারের কাছে। এমন সংবাদে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন রওশন পন্থীরা। তারাও রওশন এরশাদকে চেয়ারম্যান ঘোষণা দিয়ে বসেন। এ নিয়ে আরেক দফা বাঙনের সুর বাজতে তাকে জাতীয় পার্টিতে। অবশেষে দেবর-ভাবির অভিমান ভাঙিয়ে জিএম কাদেরকে দলীয় চেয়ারম্যান ও রওশন এরশাদকে বিরোধী দলীয় নেতার পদ দিয়ে চলমান সঙ্কটের সমাধান হয়েছে। তবে দুটি বিষয়ে মীমাংসা হলেও এখনও অমীমাংসিত রয়েছে এরশাদের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া রংপুর-৩ আসনে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন নিয়ে।
রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকালে বনানীতে সংবাদ সম্মেলন করে বিষয়টি জানান জাপার মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গা।
গত ১৪ জুলাই জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ মারা যাওয়ার আগে ছোটভাই জিএম কাদেরকে দলের চেয়ারম্যান ঘোষণা করেন। যা নিয়ে দলের দুই গ্রুপের মধ্যে মনস্তাত্বিক লড়াই শুরু হয়। এরশাদ মারা যাওয়ার পর এ নিয়ে তেমন কোনো প্রতিক্রিয়া না দেখালেও তার চেহলাম শেষে মাঠে নামেন কাদের ও রওশনপন্থী নেতারা।
নিজেকে সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে মনোনীত করতে স্পিকারকে চিঠি দেন জিএম কাদের। তার চিঠির একদিন পর স্পিকারকে চিঠি দেন রওশন এরশাদ। তার দাবি, তিনিই হবেন বিরোধীদলীয় নেতা।
পরদিন সংবাদ সম্মেলনে রওশন এরশাদকে দলের চেয়ারম্যান ঘোষণা করে জাপার একটি অংশ। এরপর থেকে জাতীয় পার্টির বিভক্তি প্রকাশ্যে চলে আসে। এমন পরিস্থিতিতে কোন্দল মেটাতে শনিবার (৭ সেপ্টেমর) বৈঠকে বসেন জি এম কাদের ও রওশন এরশাদপন্থীর নেতারা। দীর্ঘ বৈঠকে রওশন এরশাদ ও জিএম কাদেরের পক্ষের নেতারা সমঝোতায় উপনীত হন। বৈঠকে সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করেন দলটির মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গা।
শনিবারের বৈঠকের বিষয়ে জানাতে সকাল ১১টায় বনানীতে সংবাদ সম্মেলন করেন মশিউর রহমান রাঙ্গা। তিনি বলেন, এখন থেকে রওশন এরশাদ সংসদের বিরোধী দলের নেতা এবং কাউন্সিল পর্যন্ত জিএম কাদের জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবেন।
সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় পার্টির বিরোধের সময় নিজের অবস্থান নিয়ে গণমাধ্যমের খবরের প্রসঙ্গ তুলে রাঙ্গা বলেন, ‘অনেকেই বলেছেন দলের এই অবস্থায় আমি কোথায় ছিলাম? হারিয়ে গেছিলাম। আসলে যখন একটা পরিবারে মা-বাবার মধ্যে সমস্যা হয় তখন সন্তানরা বিপদে পড়ে যায়। আমার বেলায়ও সেটা হয়েছে। জাতীয় পার্টি ভেঙে যাবে এমন খবরও আসছে। আমাকে যেহেতু দুইপক্ষই মহাসচিবের দায়িত্ব দিয়েছে তাই আমি পেছনে থেকে কিভাবে সমস্যা সমাধান করা যায়, তা নিয়ে কাজ করেছি। এটাই কারণ। এরই অংশ হিসেবে গতকাল আমরা বৈঠক করেছি। সেখানে অনেকটা সমাধানে আসতে সক্ষম হয়েছি।’
সাদ এরশাদকে রংপুর-৩ আসনে প্রার্থী দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হলেও তা চূড়ান্ত হয়নি বলে জানান রাঙ্গা। তিনি বলেন, ‘এটা চেয়ারম্যান এবং আমার ওপর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। যেহেতু আমরা রংপুরের মানুষ। আশা করি দ্রুতই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানতে পারবেন। তবে সাদের পক্ষে-বিপক্ষে কথা এসেছে।’