কাশ্মীর ইস্যুতে সুপ্রিম কোর্টে ধাক্কা খেল মোদি সরকার!
প্রকাশিত হয়েছে : ২:০০:২৩,অপরাহ্ন ২৮ আগস্ট ২০১৯ | সংবাদটি ৪১৮ বার পঠিত
আমাদের প্রতিদিন ডেস্ক:: অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীর ইস্যুতে সুপ্রিম কোর্টে ধাক্কা খেল ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। দেশটির শীর্ষ আদালত চলতি মাসের শুরুর দিকে সরকারের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে আবেদনের শুনানিতে জানিয়েছে, আগামী অক্টোবরে ৩৭০ অনুচ্ছেদের অধীনে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদাকে বাতিল করার বিষয়টি পর্যালোচনা করবে আদালত।
এই বিষয়ে ভারতের শীর্ষ আদালত কেন্দ্রের কাছ থেকেও জবাব চেয়েছে। এই মাসের শুরুর দিকে সংবিধানের ৩৭০ নম্বর অনুচ্ছেদ রদ করে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদাকে বাতিল করার বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের পদক্ষেপের সাংবিধানিক বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করা হয়। কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেই সুপ্রিম কোর্টে একগুচ্ছ আবেদন জমা পড়ে, যার শুনানি ছিল বুধবার (২৮ আগস্ট)।
জম্মু ও কাশ্মীর সংক্রান্ত সমস্ত আবেদন খতিয়ে দেখার জন্যে ৫ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চের কাছে সেগুলো পাঠিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। বুধবার, শুনানি চলাকালীন, বাম নেতা সীতারাম ইয়েচুরি এবং একজন কাশ্মীরি শিক্ষার্থী, যিনি তার বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা করতে চান, দুজনকেই জম্মু ও কাশ্মীর সফরের অনুমতি দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
বুধবার প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈকে প্রধান করে বিচারপতি এস এ বোবদে এবং বিচারপতি এস এ নাজিরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ জানায়, ‘আমরা বিষয়টি পাঁচ বিচারকের সাংবিধানিক বেঞ্চের কাছে প্রেরণ করেছি’। ‘আন্তঃসীমান্ত প্রতিক্রিয়া হবে’ কেন্দ্রের দেয়া এই যুক্তিও খারিজ করে দেয় দেশটির শীর্ষ আদালত। কেন্দ্রের পক্ষ থেকে যুক্তি দেয়া হয়েছিল যে, অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে ভেনুগোপাল এবং সলিসিটার জেনারেল ছিলেন বলে এই বিষয়ে নোটিশ দেওয়ার দরকার নেই।
তবে, সরকার পক্ষের শীর্ষ আইনজীবী বলেছেন যে আদালত যা যা বলছে তা জাতিসংঘের কাছে প্রেরণ করা হয়েছে। যেহেতু উভয় পক্ষ থেকেই এ নিয়ে যুক্তি ও পাল্টা যুক্তি দেয়া হয়েছে, তাই বেঞ্চ বলেছে, ‘আমরা কী করব তা জানি, আমরা এই নির্দেশ দিচ্ছি, আমরা এতে কোনও পরিবর্তন আনব না’।
৫ অগাস্ট মোদীর বিজেপি সরকারের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর থেকেই জম্মু ও কাশ্মীর কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে রয়েছে। এ নিয়ে যে কোনও ধরণের প্রতিক্রিয়া এড়াতে ফোন এবং ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করা হয়, এবং বিশাল সমাবেশ করার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
অতিমাত্রায় সামরিক অঞ্চলটিতে অতিরিক্ত ৫০,০০০ এর সেনা মোতায়েন করাও হয়। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা এবং মেহবুবা মুফতিসহ ৪০ জন মূলধারার রাজনৈতিক নেতাকেও আটক করে রাখা হয়েছে। গণমাধ্যমের মতে আটক হয়েছে ৫ সহস্রাধিক কাশ্মীরি।
বিশেষ মর্যাদা হারানো কাশ্মীরের গণমাধ্যম অচল হয়ে গেলে নিষেধাজ্ঞা তুলে দেওয়ার জন্য শীর্ষ আদালতে মামলা করে কাশ্মীরের একটি পত্রিকার সম্পাদক। কাশ্মীর টাইমসের সম্পাদক জানান, যোগাযোগ নিষেধাজ্ঞার জন্য তিনি স্থানীয় সংস্করণও প্রকাশ করতে পারছেন না। পত্রিকাটির নির্বাহী সম্পাদক অনুরাধা ভাসিন আদালতের কাছে যোগাযোগ লাইন সচলে কেন্দ্রকে চাপ দেওয়ার আবেদন জানান।