যে কারণে খুন হলেন মুয়াজ্জিন হাফিজ সোহেল!
প্রকাশিত হয়েছে : ৩:১৪:২৫,অপরাহ্ন ২০ জুন ২০১৯ | সংবাদটি ১৫৬৮ বার পঠিত
আমাদের প্রতিদিন ডেস্ক:: ঝিনাইদহ সদর উপজেলার নলডাঙ্গা ইউনিয়নের বানিয়াবহু গ্রামের পাটক্ষেতে হাফেজ সোহেল রানা (২৩) নামে এক মুয়াজ্জিনকে কুপিয়ে ও গলাকেটে হত্যার ক্লু উদ্ধার করেছে পুলিশ।
এ ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে ঘাতক দলের দুই সদস্যকে। এরা হচ্ছে রাজু ও তার স্ত্রী জুলিয়া। পলাতক রয়েছে রাজুর বন্ধু সুমন ও মামাতো ভাই নাজমুল।
ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) কনক কুমার দাস জানান, মঙ্গলবার সকালে বানিয়াবহু গ্রামের মাঠের একটি পাটক্ষেতে এক যুবকের গলাকাটা লাশ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেয় এলাকাবাসী। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনস্থলে পৌঁছে দুপুরে তার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঝিনাইদহ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। পরিবারের লোকজন এসে তার পরিচয় নিশ্চিত করে।
নিহতের মা রেখা বেগম জানান, তার ছেলে কালীগঞ্জের চাপালি গ্রামের মসজিদে দীর্ঘ দিন ধরে মুয়াজ্জিনের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। কী কারণে তার সন্তানকে হত্যা করা হয়েছে তা তিনি জানেন না।
বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি মিজানুর রহমান খান মঙ্গলবার দুপুরে জানান, নারীঘটিত কারণে সোহেল রানাকে হত্যা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বিয়ের আগে থেকেই জুলিয়া খাতুনের সাথে নিহত সোহেল রানার দৈহিক সম্পর্ক ছিল। জুলিয়ার বিয়ে হলেও পিছু ছাড়েননি তিনি। কোটচাঁদপুর থেকে এসে ওই এলাকায় মাঝে মাঝে থাকতেন। সেইসঙ্গে মসজিদে মুয়াজ্জিনের চাকরি নেন।
এদিকে, জুলিয়া তার সাবেক প্রেমিককে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দিতে তার স্বামী রাজুকে সাথে নিয়ে হত্যার ছক কষেন। সেই পরিকল্পনা মোতাবেক সোহেল রানাকে সোমবার ধরে এনে গলা ও পুরুষাঙ্গ কেটে হত্যা করা হয়।
বুধবার দুপুরে ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার মো: হাসানুজ্জামান প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, কালীগঞ্জের বলরামপুর গ্রামের হাকিম আলীর মেয়ে জুলিয়া ও কোটচাঁদপুর উপজেলার লক্ষীপুর গ্রামের বখতিয়ার আলীর ছেলে সোহেল রানা চাপালী মাদ্রাসায় লেখাপড়া করতো। এসময় তাদের মাঝে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিষয়টি পরিবারের লোকজন জানতে পেরে গত ৪ মাস আগে জুলিয়াকে সদর উপজেলার বাগুটিয়া গ্রামের চাঁদ আলীর ছেলে রাজু আহম্মেদ’র সাথে বিয়ে দেয়। বিয়ের পরও জুলিয়ার সাথে সোহেলের সম্পর্ক ছিল। মোবাইলে কথা বলা ও দেখা করতো। এছাড়াও তাদের মাঝে অনৈতিক সম্পর্ক চলতে থাকে। বিষয়টি স্বামী রাজু আহম্মেদ জানতে পারে।
এ নিয়ে জুলিয়া আদালতে ৬ পাতার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। সেখানে হত্যার পুরো ঘটনা
এ ঘটনায় নিহতের ভাই রিংকু হোসেন বাদি হয়ে অজ্ঞাতদের আসামী করে সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) কনক কুমার দাস ও সদর থানার ওসি মিজানুর রহমান খান অভিযান চালিয়ে প্রেমিকা জুলিয়া খাতুনকে আটক করে। সে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মুলক জবানবন্দী প্রদাণ করে। পরবর্তীতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে বুধবার সকালে রাজু আহম্মেদকে গ্রেফতার করে। উদ্ধার করা হয় হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত চাপাতি ও নিহতের মোবাইল ফোন। বাকিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার মো: হাসানুজ্জামান।
ওসি মিজানুর রহমান খান বলেন, খুব দ্রুততম সময়ের মধ্যে হত্যার রহস্য উদ্ধার করতে পেরে ভাল লাগছে।
সোহেল রানা কোটচাঁদপুর উপজেলার সাব্দালপুর ইউনিয়নের লক্ষীকুন্ডু গ্রামের জোয়ারদার পাড়ার বখতিয়ার রহমানের ছেলে।