দলীয় প্যাড ‘চুরি’ নিয়ে মুখ খোললেন মোকাব্বির
প্রকাশিত হয়েছে : ১২:৪২:০২,অপরাহ্ন ০২ এপ্রিল ২০১৯ | সংবাদটি ৪৬৬ বার পঠিত
আমাদের প্রতিদিন ডেস্ক:: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মনোনয়নে সিলেট-২ আসন থেকে নির্বাচিত গণফোরাম নেতা মোকাব্বির খান শপথ নেয়ার পর দলীয় ‘প্যাড চুরি’ করে স্পিকারের কাছে চিঠি দেয়ার অভিযোগের বিষয়ে মুখ খোলেছেন।
মঙ্গলবার দুপুরে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর কাছে সংসদ ভবনে শপথ নেন মোকাব্বির। এসময় তিনি বলেন, মানসিক বিপর্যস্ত হয়ে আমার বিরুদ্ধে প্যাড চুরির অভিযোগ তোলা হয়েছে। এই অভিযোগ তুলেছেন গণফোরামের প্রেসিডিয়াম সদস্য জগলুল হায়দার আফ্রিক। এটি একটি অরুচিকর কথা। শুনতেও বাজে লাগে। আমি দল থেকে অনুমতি নিয়েই সংসদে এসেছি।
এ সময় সাংবদিকদের দলীয় প্যাড দেখিয়ে মোকাব্বির বলেন, ‘এটাকে যদি ভেরিফাই করতে চান তা হলে করতে পারেন। এখানে কোনো ধরনের বিতর্কের সুযোগ নেই। এটাকে যারা বিতর্কে নিয়ে যেতে চাচ্ছেন, আমি মনে করি তারা কোনো বিশেষ মহলের পারপাস সার্ভ করছেন অথবা তারা মানসিক বিপর্যস্ত। হয়তো তাদের একটা অ্যাসাইমেন্ট ছিল। সেই অ্যাসাইমেন্ট পালন করতে না পারায় তারা এমন আচরণ করছেন।’
এ ধরনের অভিযোগ উঠল কেন- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মোকাব্বির আহম্মেদ বলেন, ‘আমরা সবাই আদমের সন্তান। হয়তো কেউ মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। বাংলাদেশে কত ধরনের রাজনীতি হচ্ছে, অপরাজনীতি হচ্ছে। হয়তো কেউ অপরাজনীতির মানসিকতা নিয়ে বিভিন্ন মহলের ফায়দা হাসিলের জন্য এটা করে যাচ্ছেন। কারণ সব দলিলাদি যখন কথা বলে, তখন আমি মনে করি আমার নিজের মুখ থেকে তেমন কিছু বলার নেই।’
এর আগে সোমবার মোকাব্বির দলীয় প্যাড চুরি করে শপথের আবেদন করেছেন বলে অভিযোগ করেন গণফোরামের একাধিক প্রভাবশালী নেতা। এ বিষয়ে গণফোরামের প্রেসিডিয়াম সদস্য জগলুল হায়দার আফ্রিক বলেন, ‘দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে শপথ নিতে যাচ্ছেন মোকাব্বির খান। তিনি দলীয় প্যাড চুরি করে শপথ নেয়ার জন্য স্পিকারকে চিঠি দিয়েছেন।
গণফোরাম নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলছেন, মোকাব্বির দলীয় প্যাড চুরি করে স্পিকারকে চিঠি দিয়েছেন। তিনি বলেন, গণফোরামের প্যাডেই মোকাব্বির চিঠি পাঠিয়েছেন। তবে দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সেই প্যাড ব্যবহারের অনুমতি ও অধিকার রয়েছে কেবল সাধারণ সম্পাদকের। তিনি নিজে বা তার অনুমোদিত কোনো ব্যক্তি ওই প্যাড ব্যবহার করতে পারবেন। মোকাব্বির খান দলের সাধারণ সম্পাদককে না জানিয়ে যেভাবে ওই প্যাড ব্যবহার করেছেন, দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তিনি বেআইনি কাজ করেছেন।
আর জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মিডিয়া কো-অর্ডিনেটর লতিফুল বারী হামিম বলেন, মোকাব্বির ব্লাকমেইল করে গণফোরামের প্যাড ব্যবহার করেছেন। তিনি বলেন, মোকাব্বির খান দলকে ব্লাকমেইল করে গণফোরামের প্যাড ব্যবহার করেছেন। যদি উনি শপথ নেন, তা হলে তার বিরুদ্ধে দলীয় ফোরামে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
গণফোরামের প্যাড তিনি কোথায় পেলেন- এমন প্রশ্নের জবাবে লতিফুল বারী হামিম বলেন, উনি কোথা থেকে প্যাড পেলেন এ বিষয়ে আমাদের জানা নেই। হয়তো অফিসের ড্রয়ার থেকে নিতে পারেন। যদি তিনি প্যাড ব্যবহার করেন, তা হলে তাকে জবাবদিহি করতে হবে। দলীয় সিদ্ধান্ত হলে অবশ্যই এ প্যাডে গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টুর স্বাক্ষর থাকার কথা। কিন্তু ওই প্যাডে মন্টুর কোনো স্বাক্ষর নেই। এ ছাড়া স্পিকারের কাছে উনি যে চিঠি দিয়েছেন তাতেও মন্টুর স্বাক্ষর ছিল না।
প্রসঙ্গত, ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে গণফোরামের প্রতীক উদীয়মান সূর্য নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন মোকাব্বির খান। তিনি সিলেট-২ আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে পরাজিত করে জয়ী হন। এই আসনে প্রথমে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছিল বিএনপির নিখোঁজ নেতা ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদীর লুনা। তার মনোনয়ন বাতিল হলে মোকাব্বিরকে সমর্থন দেয় ঐক্যফ্রন্ট।