কোণঠাসা ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী
প্রকাশিত হয়েছে : ৬:৫৭:৫১,অপরাহ্ন ১৫ অক্টোবর ২০২২ | সংবাদটি ৫৪৫৬ বার পঠিত
আমাদের প্রতিদিন ডেস্ক:
ক্ষমতা গ্রহণের অল্প সময়ের মধ্যেই নিজ দলের এমপিদের মধ্যে কোণঠাসা হয়ে পড়ছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস। শুক্রবার হঠাৎ অর্থমন্ত্রীর পদ থেকে কোয়াসি কোয়ারটেংকে সরিয়ে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেরেমি হান্টকে এ পদে বসান তিনি। বিষয়টি ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ বা টোরি এমপিরা ভালভালে নেননি। অনেক এমপি এমনকি লিজ ট্রাস ঘনিষ্ঠরাও বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা শুরু করেছেন। সাবেক এক মন্ত্রী বলেন, আমরা এভাবে অনির্দিষ্টকাল পর্যন্ত চলতে পারি না।
এক কনজারভেটিভ এমপি জানান, প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনের পর দলের সদস্যরা ‘হতাশাগ্রস্ত’ হয়ে আছেন। ট্রাস সমর্থক স্যার ক্রিস্টোফার চোপ বলেন, এখন সময়ই বলে দেবে ট্রাস তার পদ ধরে রাখতে যথেষ্ট করেছেন কি না। কিন্তু যারা তাকে সরাতে চায়, তারা আসলে ‘হায়েনা’। আমরা এখন আরো একজন প্রধানমন্ত্রীকে পাল্টে দিতে পারি না। আমাদেরকে অবশ্যই শান্ত হতে হবে এবং প্রধানমন্ত্রীকে সমর্থন দিতে হবে। খবর বিবিসি ও এনডিটিভি অনলাইনের।
শুক্রবার অর্থমন্ত্রী কোয়ারটেংকে বরখাস্ত করেন লিজ ট্রাস। পাশাপাশি সাবেক অর্থমন্ত্রীর সময়কার ট্যাক্স নীতিতেও বড় পরিবর্তনের ঘোষণা দেন। টোরি নেতা স্যার ক্রিস্টোফার বলেন, এই পরিবর্তন প্রবৃদ্ধির পথে বাধা হয়ে দাঁড়াবে। কনজারভেটিভ এমপি এ্যান্ডু ব্রিজেন বলেন, সামনের দিনগুলোতে ট্রাসকে ক্ষমতায় থাকতে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে। প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনে ঋষি সুনাককে সমর্থন দিয়েছিলেন।
তার দাবি, পার্লামেন্টারি পার্টিতে ট্রাসের প্রধানমন্ত্রিত্ব নিয়ে ব্যাপক অসন্তুষ্টি রয়েছে। তিনি যা করতে বলেছিলেন, তা করার জন্য কোয়াসি কোয়ারটেংকে বরখাস্ত করা হলো। এতে অন্য নেতারা তার প্রতি অনুগত হওয়া থেকে বিরত থাকবেন। গোপনে অনেক কনজারভেটিভ এমপি বলেন, তারা প্রধানমন্ত্রীর এমন আচরণে প্রচণ্ড হতাশ।
অনেকে মনে করেন, লিজ ট্রাসের সময় শেষ হয়ে আসছে। জেরেমি হান্টকে অর্থমন্ত্রী করার মধ্য দিয়ে তিনি মূলত তার পরবর্তী উত্তরাধিকারী রেখে যাচ্ছেন। এটি তার পতনকে আরো এগিয়ে আনবে।
আরেক এমপি ট্রাসের সংবাদ সম্মেলনকে ‘মহাদুর্যোগ’ বলে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, লিজ ট্রাসকে পদত্যাগ করতে হবে, তিনি করবিনের থেকেও খারাপ। যদিও লিজ ট্রাস নিজে বলছেন যে, তিনি তার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মিশন শেষ না করা পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকবেন।
বরিস জনসনের ক্ষেত্রে দেখা গেছে, কোনো প্রধানমন্ত্রী যদি নিজে থেকে পদত্যাগ করতে না চান তাহলে তাকে ক্ষমতা থেকে নামানো সহজ বিষয় নয়। এর জন্য সরকার থেকে মন্ত্রীদের গণ পদত্যাগ করতে হয়। লিজ ট্রাসের মন্ত্রীরা এখনও বিদ্রোহ করেননি।
অনেকেই তার পদক্ষেপকে সমর্থন জানিয়ে পাশে থাকার চেষ্টা করছেন। উল্লেখ্য, জেরেমি হান্ট এর আগে দুবার ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির নেতৃত্বের দৌড়ে সফল হতে পারেননি। একবার তিনি বরিস জনসনের কাছে হেরে যান এবং পরেরবার দলের নেতৃত্বের প্রতিযোগিতায় প্রথম দফার ভোটেই হেরে বাদ পড়েন।
শেষ পর্যন্ত কনজারভেটিভ দলের নেতৃত্বে জয়ী হয়ে লিজ ট্রাস প্র্রধানমন্ত্রী হন। ওই প্রতিযোগিতায় ট্রাসের প্রতিপক্ষ সাবেক অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাককে সমর্থন করেছিলেন জেরেমি হান্ট। এর আগে হান্ট ব্রিটেনের স্বাস্থ্য ও সংস্কৃতিমন্ত্রীও ছিলেন। এ বছর নিয়োগ পাওয়া যুক্তরাজ্যের চতুর্থ অর্থমন্ত্রী হলেন তিনি।