হাওরজুড়ে পাকা ধান, শ্রমিক অভাবে বাড়ছে শঙ্কা!
প্রকাশিত হয়েছে : ১১:৩১:১৪,অপরাহ্ন ১৪ এপ্রিল ২০২০ | সংবাদটি ৪৫১ বার পঠিত
এ আর জুয়েল, সুনামগঞ্জ থেকে:: সুনামগঞ্জে হাওরজুড়ে বোরো ধান পেকে সোনালী রং ধারণ করেছে। মৌসুম শুরু হলেও কৃষকের এ সোনালী ধান কেটে ঘরে তোলার জন্য নেই কোনো শ্রমিক।
করোনাভাইরাসের কারণে যখন পুরো দেশের শ্রমজীবী মানুষজন কর্মহীন এমন পরিস্থিতে হাওরের কৃষকদের সোনালী ধান ঘরে তোলা নিয়ে বাড়ছে শঙ্কা।
এদিকে পাউবোর পূর্বাভাসে চলতি মাসেই হাওরে আগাম বন্যার আশঙ্কায় সময়মতো ধান কাটতে না পারায় দুশ্চিন্তা ভর করছে কৃষকদের।
লকডাউনে থাকা সুনামগঞ্জের কৃষকদের চৈত্রের নিদান আর পুরো বছরের জীবিকার আহার ঘরে তোলার সংকট নিয়ে বিপাকে হাওরের ৩ লক্ষাধিক কৃষক।
জেলা কৃষি বিভাগ কার্যালয়ে তথ্যমতে, সুনামগঞ্জে এবার ১৫৪টি হাওরে ২ লাখ ১৯ হাজার ৩০০ হেক্টর বোরো ফসলের আবাদ হয়েছে। ধানের আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১২ লাখ মেট্রিক টন।
কৃষি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, হাওরে ধান কাটার জন্য কৃষকদের বিভিন্ন উপজেলায় ধান কাটার মেশিন সরবরাহ করা হচ্ছে।
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার দেখার হাওরের কৃষক সিদ্দিক মিয়া বলেন ‘এবার অন্যের ধানি করা ৬ কেয়ার জমিতে ফসল আবাদ করেছিলাম। অনেক দেনা করে টাকা এনে জমি চাষ করেছি। জমিতে ফসল পাকা ধরায় আর ঘরে বসে থাকতে পারছি না। পরিবার নিয়েই ধান কাটছি যাই কাটা যায়।’
তাহিরপুর উপজেলার শনির হাওরে কৃষি জমির মালিক আনোয়ার হোসেন জানান, পুরো হাওরে ধান কাটার মৌসুম শুরু হয়েছে দেশের এমন পরিস্থিতিতে একসাথে এতো শ্রমিক পাওয়া কঠিন। তারপর আবার এ মাসেই আগাম বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে তাই এবার ঘরে ফসল তুলতে পারবো কিনা জানি না।
হাওর বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি বজলুল মজিদ চৌধুরী জানান, হাওরে ধান কাটার কাজে যারাই সহযোগিতা করবে তাদের সরকারি ত্রাণের আওতায় এনে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা বাড়ানোর পাশাপাশি করোনা পরিস্থিতিতে কৃষকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি প্রশাসনকে খেয়াল রাখতে হবে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ জানান, হাওরে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা করে ধান কাটতে কৃষকদের ১৩টি নির্দেশনার পাশাপাশি এবার জেলার সকল বালু পাথর শ্রমিক রিকশা চালকসহ যারাই কর্মহীন আছেন তাদের সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে দ্রুত ধান কাটার কাজে যোগ দিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এছাড়া যেসব শ্রমিক ধান কাটায় যোগ দেবেন তাদেরকে সরকারি ত্রাণের আওতায় আনা হবে বলে জানান জেলা প্রশাসক।