আজহারীর ওয়াজ নিয়ে এবার সংসদে কন্ঠশিল্পী মমতাজ!
প্রকাশিত হয়েছে : ২:০৫:২০,অপরাহ্ন ৩০ জানুয়ারি ২০২০ | সংবাদটি ১২৬৫ বার পঠিত
আমাদের প্রতিদিন ডেস্ক:: ফেসবুক, ইউটিউব খুললে ওয়াজের নামে মিথ্যা আর অকথ্য গালাগালি ভরা, এগুলো সরকারের নজরে আসা দরকার বলে সংসদকে জানিয়েছেন, মানিকগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম।
তিনি বলেন, ড. মিজানুর রহমান আজহারীসহ কিছু বক্তা ওয়াজের নাম করে হাজার হাজার মানুষের সামনে দণ্ডপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী সাঈদীর মতো লোক ঘরে ঘরে জন্মানোর আহ্বান জানানো হয়। এ বিষয়ে প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানো ও সরকারকে প্রদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান মমতাজ।
বুধবার (২৯ জানুয়ারি) রাষ্ট্রপতির ভাষণের উপর ধন্যবাদ প্রস্তাবে সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে মমতাজ বেগম এসব কথা বলেন। এসময় ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া সভাপতিত্ব করেন।
মমতাজ বেগম বলেন, ধর্ম নিরপেক্ষ, অসাম্প্রদায়িক এই সরকারের পাশে শিল্পীরা অতীতেও ছিল, বর্তমানেও আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে। কারণ আমরা দেখেছি, আমরা আগের আমলগুলো ভুলে যাইনি। ২০০১ সালে বিএনপি জামায়াত ক্ষমতায় আসার পর সব শিল্পীদের গান-বাজনা মোটামুটি বন্ধই হয়ে গিয়েছিল। তারা প্রত্যেকটা আসরে, বাজারে, সিনেমা হলে, উদীচিতে, রমনার বটমূলে একসঙ্গে সিরিজ বোমা হামলা চালায় ৬৪ জেলায়। কোথায় বোমা না মেরেছে।
প্রত্যেকটি শিল্পীদের আঘাত করা হয়েছে। কারণ শিল্পীরা অসাম্প্রদায়িক। তারা ধর্ম নিরপেক্ষতার কথা বলে, মানুষের কথা বলে, মানুষের পাশে মানুষকে দাঁড়ানোর কথা বলে। আর তাদের ঠেকানোর জন্য এক দল, একদল… আমি নাম বলবো না। তারা কিন্তু উঠে পড়ে লেগেছে।
‘ডিজিটাল বাংলাদেশ হচ্ছে, আমরা সবধরনের সুযোগ সুবিধা পাচ্ছি। কিন্তু আমার মনে হয়, কিছু কিছু জায়গায় বেকায়দাও আছি। কারণ ইউটিউব, ফেসবুক খুললে কী যে একটা অবস্থা…। অশালীন ভাষায়, অকথ্য ভাষায়, যেভাবে কোরআন শরীফকে সামনে রেখে, আল্লাহ-রাসুলকে সামনে রেখে, যেভাবে অকথ্য ভাষায় আজকাল ওয়াজ শোনা হয়।
খুললেই দেখা যায় একজন আরেকজনকে গালিগালাজ করছে। ভালো কথা ছাড়া, খারাপ কথাই সেখানে বেশি শোনা যায়। আজকে সেগুলো আমাদের খেয়াল করতে হবে। আমাদের প্রশাসনকে এগুলো দেখতে হবে। আমাদের ধর্মমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই। তিনি একটি জায়গায় একটি বক্তব্য দিয়েছেন। আমি সেটা রিপিট করবো না। এ ধরনের যারা আছেন যারা সুবিধার জন্য একেক জায়গায় একে রকমের বক্তব্য দেয়।’
তিনি আরও বলেন, এক জায়গায় বলে আল্লামা কোনো মানুষকে বলা যাবে না, আল্লামা একমাত্র আল্লাহকে বলা হবে। আবার আরেক জায়গায় বলে ঘরে ঘরে আল্লামা সাঈদী চলে এসো, সাঈদীর জন্ম হোক। ওখানে আল্লামা বলতে আর কোনো ঝামেলা নাই তাদের। আরও অনেক ধরনের কথা আছে, যেগুলো আমি আর এখন বলবো না। কিন্তু আমাদের প্রশাসন, আমাদের সরকারকে নজরদারি বাড়াতে হবে।
আমাদের কালোকে কালো বলতে হবে, সাদাকে সাদা বলতে হবে। কোনো গ্রুপ অনেক বড় তার পক্ষে থাকবো, আর যারা দুর্বল তার পক্ষে থাকবো না। এ কথা অন্তত আওয়ামী সরকার বিশ্বাসী না। তাই আমাদের সেই বিষয়গুলো মাথায় রাখতে।
এসময় মমতাজ বেগম জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে গান গেয়ে বক্তব্য শেষ করেন।
এর আগে মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সারাদেশে বিভিন্ন ধর্মীয় ওয়াজ মাহফিলে যুদ্ধাপরাধী দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর গুণগান ও ইসলামের অপব্যাখা প্রসঙ্গে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী আলহাজ অ্যাডভোকেট শেখ মো. আব্দুল্লাহ বলেছেন, ‘বিষয়টি অবশ্যই আমাদের নজরে এসেছে। আজহারি-মাজহারি জামাতের সৃষ্টি। এরা অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে জামাতের কথাই বলে। এদের বাল্যকাল থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত সেই শিক্ষা-দীক্ষাই দিয়েছে জামাত।’