মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আইসিজে’র রায়, খুশি গাম্বিয়া!
প্রকাশিত হয়েছে : ১০:৩০:৫৭,অপরাহ্ন ২৩ জানুয়ারি ২০২০ | সংবাদটি ১১৯৭ বার পঠিত
আমাদের প্রতিদিন ডেস্ক:: রোহিঙ্গা ইস্যুতে গাম্বিয়ার করা মামলার অন্তর্বর্তীকালীন রায় দিয়েছে জাতিসংঘের আদালত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস (আইসিজে)। এই রায়ে মিয়ানমারের আপত্তি অগ্রাহ্য করে রোহিঙ্গাদের সুরক্ষা দিতে আদেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলা চলবে বলেও জানিয়েছে আদালত।
আন্তর্জাতিক আদালতের রায় মিয়ানমারের বিরুদ্ধে যাওয়ায় খুশি গাম্বিয়া। অন্যদিকে এই রায়ে স্বাভাবিকভাবেই সংকটে পড়েছে মিয়ানমার। যদিও কোনো পক্ষই এখনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি।
বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগের পিস প্যালেসে বাংলাদেশ সময় বিকাল ৩টায় আইসিজের বিচারপতি ইউসুফ আলোচিত মামলাটির অন্তর্বর্তী আদেশ পাঠ শুরু করেন।
এর আগে গত ১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক আদালতে রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গাম্বিয়ার করা মামলার শুনানি শুরু হয়, যা চলে ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত। ৩ দিনের ওই শুনানিতে উভয় পক্ষ তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করে।
তখন সু চি দাবি করেন, রাখাইন রাজ্যে পুলিশ পোস্টে হামলাকে কেন্দ্র করে অভ্যন্তরীণ সশস্ত্র সংঘর্ষ শুরু হয়। ফলে বিশাল সংখ্যক রোহিঙ্গা ওই এলাকা ছাড়তে বাধ্য হন। আর এ বিষয়টিকে কোনোভাবেই গণহত্যা মানতে রাজি নন সু চি।
জাতিসংঘের আদালতে বিচারকদের উদ্দেশে সু চি বলেন, রাখাইনে সেনা অভিযানে যা ঘটেছে, তা গণহত্যার সংজ্ঞার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। যে কারণে জাতিসংঘের আদালতে গাম্বিয়ার করা মামলা কেবলই ভুল দিককে নির্দেশ করছে।
সু চি রাখাইন পরিস্থিতিকে ‘জটিল’ হিসেবে উল্লেখ করেন। একই সঙ্গে রোহিঙ্গা সংখ্যালঘুদের ‘দুর্ভোগের’ বিষয়টি স্বীকার করে জানান, রাখাইন রাজ্যের অনেকেই সুরক্ষার জন্য পাশের দেশ বাংলাদেশে পালিয়ে যায়।
রাখাইন রাজ্যে ২০১৭ সালের সামরিক অভিযানকে বারবার ‘অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষ’ হিসেবে উল্লেখ করেন মিয়ানমারের এই নেতা। এ সময় তিনি বলেন, মিয়ানমারের সামরিকবাহিনী স্থানীয় সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর হামলার জবাব দিচ্ছিল।
শুনানিতে মিয়ানমারকে রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর গণহত্যা বন্ধের আহ্বান জানায় গাম্বিয়া। এ সময় স্তব্ধ হয়ে বসে ছিলেন মিয়ানমারের প্রতিনিধি অং সান সু চি।
শুনানিতে গাম্বিয়ার বিচারমন্ত্রী আবুবাকার তাম্বাদৌ আন্তর্জাতিক আদালতের বিচারকদের উদ্দেশে বলেন, মিয়ানমারকে এ রকম নির্দয় হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করতে বলুন। তাদের বর্বরতা বন্ধ করতে বলুন, যা আমাদের সবার বিবেককে নাড়া দিচ্ছে। মিয়ানমারকে তাদের নিজেদের লোকদের ওপর গণহত্যা চালানো বন্ধ করতে বলুন।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে বিশাল সামরিক অভিযান চালায় দেশটির সেনাবাহিনী। এতে প্রায় ৭ লাখ ৫০ হাজার রোহিঙ্গা ওই রাজ্য থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। মূলত এই অভিযান নিয়েই ১০ থেকে ১২ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক আদালতের শুনানি চলবে।