নুসরাতের পক্ষে বিনা টাকায় লড়েন অ্যাডভোকেট শাহজাহান
প্রকাশিত হয়েছে : ১১:০৮:৩৭,অপরাহ্ন ২৪ অক্টোবর ২০১৯ | সংবাদটি ৪১৫ বার পঠিত
আমাদের প্রতিদিন ডেস্ক:: ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলায় মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা সহ ১৬ আসামিকেই ফাঁসির আদেশ দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে তাদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টায় ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মামুনুর রশিদ এ রায় ঘোষণা করেন। নুসরাতের পরিবারের পক্ষে আদালতে এই মামলা লড়েছেন বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্ট ও ফেনী জজ কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শাহজাহান সাজু।
মামলাটির সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, চলতি বছরের ২৭ মার্চ মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার নেতৃত্বে যৌন নিপীড়নের ঘটনায় ২৮ মার্চ মামলা করেন নুসরাতের মা। ওই মামলাটির আইনজীবী ছিলাম। এরপর ১০ এপ্রিল থেকে নুসরাত হত্যা মামলার সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছি।
অ্যাডভোকেট শাহজাহান সাজু বলেন, সম্পূর্ণ বিনা পারিশ্রমিকে এ মামলাটি স্বপ্রণোদিত হয়ে লড়েছি, অনেক সময় নিজের পকেট থেকে ব্যয় করেছি। নুসরাতের পরিবারকে এক টাকাও খরচ করতে হয়নি। একটা কাগজও কিনতে হয়নি।
তিনি বলেন, আমার নিজেরই তিনটা মেয়ে আছে, তারাও লেখাপড়া করে। আর কোনো মেয়েকে যেন শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে গিয়ে এমন নির্মমতার শিকার হতে না হয়। সেজন্য সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে আসামিদের সর্বোচ্চ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতের জন্য আইনি লড়াইয়ে লড়েছি। এতে পারিশ্রমিক নেয়ার প্রশ্নই আসে না।
এই চাঞ্চল্যকার হত্যা মামলার রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদাসার সাবেক অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা, নূর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, সোনাগাজী পৌরসভার কাউন্সিলর মাকসুদ আলম, সাইফুর রহমান মোহাম্মদ জোবায়ের, জাবেদ হোসেন ওরফে সাখাওয়াত হোসেন জাবেদ, হাফেজ আব্দুল কাদের, আবছার উদ্দিন, কামরুন নাহার মনি, উম্মে সুলতানা ওরফে পপি ওরফে তুহিন ওরফে শম্পা ওরফে চম্পা, আব্দুর রহিম শরীফ, ইফতেখার উদ্দিন রানা, ইমরান হোসেন ওরফে মামুন, মোহাম্মদ শামীম, মাদরাসার গভর্নিং বডির সহ-সভাপতি রুহুল আমীন ও মহিউদ্দিন শাকিল।
নিজ মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার যৌন নির্যাতনের প্রতিবাদ করায় গত ৬ এপ্রিল নুসরাতের শরীরে আগুন দেয়া হয়। ১০ এপ্রিল চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে মারা যায় সে। ঘটনার পর ৮ এপ্রিল আটজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত চারজনকে আসামি করে সোনাগাজী থানায় মামলা করেন নুসরাতের ভাই নোমান। শুরুতে থানা পুলিশ তদন্ত শুরু করলেও পরে মামলা পিবিআইকে হস্তান্তর করা হয়।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিখণ্ডন শেষে রায়ের তারিখ নির্ধারণ করেন ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল। মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফী হত্যা মামলার সাড়ে ৬ মাসের মাথায় এই রায় ঘোষণা হলো।