মাজার জিয়ারত করে প্রচারণায় প্রার্থীরা
প্রকাশিত হয়েছে : ৫:১৫:৫৯,অপরাহ্ন ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯ | সংবাদটি ৪৮৮ বার পঠিত
আমাদের প্রতিদিন ডেস্ক:: সিলেটের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের ২০১৯-২০ মেয়াদের নির্বাচন আগামী ২২ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন আয়োজনের সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন বোর্ড। চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রণয়নসহ ইতোমধ্যে বিতরণ করা হয়ে ভোটার কার্ডও। শুরু হয়েছে প্রচারণাও।
বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) নির্বাচনের দুটি প্যানেলে প্রতিনিধিরা হযরত শাহজালাল (রহ.) মাজার জিয়ারত করে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করেছেন। প্রথা অনুসারে রাজনৈতিক সংগঠনগুলোও জাতীয় এবং স্থানীয় নির্বাচনের প্রচারণা শুরুর আগে মাজার জিয়ারত করে থাকে। এবার চেম্বারের প্রার্থীরাও সেই পথে হাঁটলেন। তারাও শাহজালাল (রহ.) মাজার জিয়ারতের মধ্য দিয়ে প্রচারণা শুরু করেন।
বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টায় ‘সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদের’ নেতৃবৃন্দ হযরত শাহজালাল (রহ.) মাজার জিয়ারত করেন। পরে মাজার প্রাঙ্গণে ভোটারদের কাছে গণসংযোগ করেন। এসময় তারা বলেন, ‘সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদ থেকে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা সকলেই যোগ্য ও সিলেটের প্রকৃত ব্যবসায়ী। তারা নির্বাচিত হলে ব্যবসায়ীরা লাভবান হবেন। সেজন্য সর্বস্তরের ব্যবসায়ীদের স্বার্থরক্ষা ও দাবি-দাওয়া আদায়ের লক্ষে প্রকৃত নেতা নির্বাচনের মাধ্যমে সিলেট চেম্বারের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনা প্রয়োজন।’
মাজার জিয়াত ও গণসংযোগকালে উপস্থিত ছিলেন অর্ডিনারী পরিচালক প্রার্থী আবু তাহের মোহাম্মদ শোয়েব, মো. মামুন কিবরিয়া সুমন, এনামুল কুদ্দুছ চৌধুরী, মুকির হোসেন চৌধুরী, হুমায়ুুন আহমদ, ফারুক আহমদ, মো. নজরুল ইসলাম বাবুল, জুবায়ের রকিব চৌধুরী, আক্তার হোসেন খান, আব্দুল হাদী পাবেল, শহীদ আহমদ চৌধুরী ও মোহাম্মদ আব্দুল সালাম।
এছাড়া বাদ আসর মাজার জিয়ারত ও দোয়া মাহফিলের মাধ্যমে প্রথম নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন ‘সিলেট ব্যবসায়ী পরিষদ’র নেতৃবৃন্দ। এসময় তারা বলেন, ‘প্রবীন ও তরুণ নেতৃত্বে আগামী দিনে চেম্বারকে আরো গতিশীল করবে। পূর্ণ প্যানেল জয়ী হলে সিলেট চেম্বার ও ব্যবসায়ীদের সুযোগ সুবিধার বৃদ্ধি পাবে।’
উপস্থিত ছিলেন-’সিলেট ব্যবসায়ী পরিষদ’ প্যানেল অর্ডিনারী প্রার্থী -এহতেশামুল হক চৌধুরী, মো: সাহিদুর রহমান, ফালাহ উদ্দিন আলী আহমদ, মুশফিক জায়গীরদার, মো: আব্দুর রহমান জামিল, খন্দকার ইসরার আহমেদ রকী, মো: শফিকুল ইসলাম, শান্ত দেব, মো: আব্দুস সামাদ, খলিলুর রহমান চৌধুরী, ফখর উছ সালেহীন নাহিয়ান, আলীমুল এহছান চৌধুরী। এসোসিয়েট শ্রেণী-ইলিয়াছ উদ্দিন লিপু, মো: আব্দুল কালাম, কাজী মো: মোস্তাফিজুর রহমান, মনোরঞ্জন চক্রবর্তী সবুজ।
সিলেটের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের নির্বাচনী তফশিল ঘোষণা করা হয় গত ২ জুলাই। তফশিল অনুযায়ী গত ১৯ আগস্ট মনোনয়নপত্র সংগ্রহের শেষ দিন ও ২২ সেপ্টেম্বর ভোটগ্রহণের দিন ধার্য করা হয়। গত ৮ আগস্ট সংবাদ সম্মেলন করে চূড়ান্ত ভোটার তালিকাও প্রকাশ করা হয়। কিন্তু এর আগেই চেম্বারে প্রশাসক নিয়োগ ও নির্বাচন আয়োজন নিয়ে উচ্চ আদালতে রিট করেন কামিল আহমদ নামের চেম্বারের এক সদস্য। তার করা রিটের প্রেক্ষিতে আদালত দুই মাসের জন্য নির্বাচন স্থগিত করে চেম্বারে প্রশাসক নিয়োগ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না মর্মে জানতে চান। আদালতের ওই নির্দেশনা চেম্বার কার্যালয়ে এসে পৌঁছায় ৮ আগস্ট রাতে। ফলে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের পর বন্ধ হয়ে যায় নির্বাচনী কার্যক্রম।
চেম্বারের সচিব গোলাম আকতার ফারুক জানান, আদালতের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে চেম্বার জজে আপিল করে সিলেট চেম্বার অব কমার্স। আপিলের শুনানি শেষে নির্বাচনের উপর দেয়া স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে ২৬ আগস্ট শুনানির তারিখ ধার্য করেন আদালত। স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার হওয়ায় আবারও নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু করে সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের নির্বাচন পরিচালনা বোর্ড। নির্ধারিত সময় পর্যন্ত সিলেট চেম্বারের ২২টি পরিচালক পদের জন্য অর্ডিনারি (একক) ৩৪টি, এসোসিয়েট (একক) ১১টি, এসোসিয়েট (সম্মিলিত) ১টি, গ্রুপ (একক) ৭টি ও টাউন এসোসিয়েশন শ্রেণিতে ১টি সহ মোট ৫৪টি মনোনয়নপত্র জমা পড়ে।
প্রসঙ্গত, অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ও আইন জটিলতার কারণে সিলেট চেম্বারের গত নির্বাচিত কমিটি নির্দিষ্ট সময়মতো নির্বাচন আয়োজনে ব্যর্থ হয়। পরে মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটিকে বাদ দিয়ে গত ৪ জুন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদকে চেম্বারের প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। ১২০ দিনের মধ্যে তাকে নির্বাচন করার দায়িত্ব দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।