স্বপ্নের পদ্মা সেতু ও মাথা কাটা গুজব!
প্রকাশিত হয়েছে : ৫:২০:২৮,অপরাহ্ন ২৫ জুলাই ২০১৯ | সংবাদটি ১৬৮৩ বার পঠিত
::মো. রাশেদুল::
পদ্মা সেতু তৈরিতে মানুষের মাথা লাগবে বলে গুজব ডালপালা মেলছে প্রতিদিনই। দেশের বিভিন্ন এলাকায় ছেলেধরা সন্দেহে ব্যাপকভাবে গণপিটুনির ঘটনা থামছে না। বরং তা বেড়েই চলেছে।
আমাদের স্বপ্নের পদ্মা সেতু প্রধান মন্ত্রী “শেখ হাসিনার” স্বপ্ন, শুধু যে তার স্বপ্ন এটা বললে ভুল হবে। এই স্বপ্ন বাংলাদেশের সকল মানুষের। সেই স্বপ্ন নিয়ে একটু একটু করে গড়ে উঠতেছে আমাদের সকলের স্বপ্নের পদ্মা সেতু। এর মধ্যে প্রায় ৬০শতাংশ ভৌত অবকাঠামো কাজ সম্পন্ন হয়ে গিয়েছে। এরমধ্যে সামাজিক যোগাযোগর গুজুব ছড়িয়ে পড়েছে- পদ্মা সেতু নির্মাণে নাকি মানুষের মাথা লাগবে। এটা কি বিশ্বাস করার মতো কথা নাকি গুজুব। এমন একটি গুজব যে দেশের গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।
তবে, এই ধরনের গুজব এড়ানোর জন্য সেতু নির্মাণ কর্তৃপক্ষ একটি বিবৃতি জারি করেছে। সাধারণ জনগণকে এই বিষয়ে সচেতন হতে বলা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে, অনেক মানুষ মাঝে প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছে। অনেকেই বলছেন, কেন পদ্মা সেতুতে মাথা কাটার বিষয়ে গুজব ছড়িয়ে পড়ল? সাধারন মানুষের মনে একটাই প্রশ্ন যে এতে কি রাজনৈতিক দলের কোন স্বার্থ আছে।
সেতুর নির্মাণ কাজের অগ্রগতি তুলে ধরে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে যে সেতু নির্মাণে মানুষের মাথা লাগবে এটা গুজব ছাড়া কিছুই না, প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয় যে ১৯৯৮ সালে বিশ্বে ১১তম এবং দক্ষিণ এশিয়ার ৬ষ্ঠ দীর্ঘতম যমুনা সেতু নির্মাণ কাজের সময় একই গুজুব ছড়িয়ে পড়ে।
পদ্মা সেতু নির্মাণের কাছাকাছি বেশ কয়েকটি এলাকায় অপহরণের ঘটনা ঘটেছে বলে গুজব ছড়িয়ে পড়েছে। তবে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা থেকে জানা যায় যে অপহরণ রিপোর্ট পাওয়া যাইনি।
সাধারন মানুষের একটায় কথা তাহলে কান ভিত্তিহীন গুজব ছড়িয়ে পড়ার কারণে পদ্মা সেতুর প্রকল্প ব্যবস্থাপকের কার্যালয় থেকে এই প্রচারণা প্রতিবাদ করতে হয়েছিল?
ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে প্রাচীন কাল থেকে আমাদের অঞ্চলের মানুষের মধ্যে প্রাচীন কালের কুপ্রথা- কুসঙ্কার রয়েই গেছে।
ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে , ১৫৮০ সালের দিকে মৌলভীবাজারে কমলা দিঘি তৈরীর সময় যখন দিঘিতে পানি উঠেছিল না, তখন রাজা একটি ব্রাতে স্বপ্ন দেখেন যে, তাঁর স্ত্রী যদি দিঘির কাছে আত্মসমর্পণ করে তাহলেই দিঘিতে পানি উঠবে।
সেতু নির্মাণের জন্য স্তম্ভের নিচে মানুষকে মাথা দিতে হবে – এই অলৌকিকতার বিষয়ে বাঙালি সাহিত্যে অনেক গল্প রয়েছে যা আধুনিক যুগের মানুষের থেকে প্রচলিত। মিজ. চক্রবর্তী বলেন, “প্রত্যন্ত এলাকার মানুষেরা তাদের পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে যে কাহিনী শুনতে পায় তা বিশ্বাস করার দৃঢ় প্রবণতা এখন রয়েছে, যার কারনে মানুষের মধ্যে এই কুসংস্কার এখনও পাওয়া যায়।
তাছাড়া যখন আমাদের স্বপ্নের পদ্মা সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয় তখনই এই বিষয় নিয়ে বিতর্ক হয়। অতএব, বিভিন্ন উপায়ে নির্মাণের কাজকে নষ্ট করে রাজনৈতিক সুবিধা অর্জনের চেষ্টা করতে পারে। তাই আমাদের সকলের উচিৎ এই গুজবে কান না দেওয়া।
বর্তমানে সময়ের নতুন নতুন আলোচনা বা সমালোচনা বিষয় জানতে আমাদের প্রতিদিনের সাথেই থাকুন। আমারা নিয়মিত নতুন নতুন প্রতিবেদন নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হবো ইনশাআল্লাহ।
https://shineskinbd.com/acne/