স্বামী হত্যায় নাটকীয়ভাবে রাতে ‘মিন্নি’ গ্রেফতার!
প্রকাশিত হয়েছে : ৬:৩৭:৩০,অপরাহ্ন ১৬ জুলাই ২০১৯ | সংবাদটি ১৭২০ বার পঠিত
আমাদের প্রতিদিন ডেস্ক:: অবশেষে বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলার প্রধান সাক্ষী ও নিহত রিফাতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে রাতে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
হত্যা মামলার বাদী ও রিফাত শরীফের বাবা আবদুল হালিম দুলাল শরীফের অভিযোগ আমলে নিয়ে পুলিশ মিন্নিকে গ্রেফতার করে।
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) রাত ৯টার দিকে তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
এর আগে মঙ্গলবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে বরগুনা পৌরসভার মাইঠা এলাকার নিজ বাসা থেকে তাকে পুলিশ লাইনে আনা হয়। রাতে তাকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বরগুনার পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন।
এ বিষয়ে পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন বলেন, রিফাত শরীফ হত্যা মামলার ১ নম্বর সাক্ষী ও প্রত্যক্ষদর্শী মিন্নি। তার বক্তব্য রেকর্ড ও তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বরগুনা পুলিশ লাইনে আনা হয়। রাতে তাকে এ মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।
মঙ্গলবার সকালে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মিন্নিকে পুলিশ লাইনে আনার সময় তার সঙ্গে বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোরও আসেন। মোবাইল ফোনে পুলিশ লাইন থেকে তিনি বলেন, রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডে জড়িত এক অভিযুক্তকে শনাক্ত করার জন্য মিন্নিকে বরগুনার পুলিশ লাইনে আনা হয়েছে। শনাক্তকরণ শেষ হলে মিন্নিকে আবার বাড়ি নিয়ে যাওয়া হবে। কিন্তু এরই মধ্যে তাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এর আগে গত শনিবার রাত ৮টার দিকে সংবাদ সম্মেলন করেন নিহত রিফাত শরীফের বাবা মিন্নির শ্বশুর আব্দুল হালিম দুলাল শরীফ। তিনি রিফাতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানান।
এর আগে পুলিশ সুপার মারুফ হাসান জানান, হত্যা মামলাটির অন্যতম সাক্ষী হিসেবে মিন্নিকে ডেকে নিয়ে সাক্ষ্য নেয়া হয়।
সদর থানার ইন্সপেক্টর হুমায়ুন কবির ও এসপি মারুফ হাসানসহ মামলার তদন্তের সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬১ ধারায় সাক্ষী হিসেবে মিন্নির বক্তব্য নেন। পুলিশ এ সময় সন্দেহজনক আসামিদের শনাক্ত করতে মিন্নির সহায়তা নেন।
এদিকে রিফাত হত্যার ঘটনায় স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি জড়িত দাবি করে গত ১৪ জুলাই বরগুনায় সর্বস্তরের জনগণের ব্যানারে একটি মানববন্ধন করা হয়েছে।
মানববন্ধনের পরপরই বাবার বাড়িতে এক সংবাদ সম্মেলনে মিন্নি দাবি করেন, মামলায় অভিযুক্ত আসামিদের আড়াল করতেই তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। এসময় তিনি অপপ্রচারকারীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।
উল্লেখ্য, গত ২৬ জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে রিফাত শরীফকে সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বিকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
এ ঘটনায় রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা সাতজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন।
রিফাত হত্যা মামলায় এ পর্যন্ত ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ২ জুলাই ভোররাতে মামলার প্রধান আসামি নয়ন বন্ড পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। এখন পর্যন্ত এজাহারভুক্ত তিনজনসহ সাত আসামি হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। এ ঘটনায় বর্তমানে ছয়জনকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।