বরখাস্ত হতে পারেন ইফা ডিজি শামীম আফজাল!
প্রকাশিত হয়েছে : ৯:০৪:৫০,অপরাহ্ন ১৩ জুন ২০১৯ | সংবাদটি ১০২৯ বার পঠিত
আমাদের প্রতিদিন ডেস্ক:: যেকোন সময় বরখাস্ত হতে পারেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের (ইফা) মহাপরিচালক (ডিজি) শামীম মোহাম্মদ আফজাল। ইতোমধ্যে ইসলামী ব্যাংকের পরিচালক পদ থেকেও অব্যাহতি দেয়া হয়েছে আলোচিত এ ডিজিকে।
শামীম মোহাম্মদ আফজালের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, বেআইনি ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কাজ এবং স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এনেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। তার বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ জারি করা হয়েছে। এসব অভিযোগে তার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিলের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে কেন অবহিত করা হবে না তা সাত কার্যদিবসের মধ্যে ধর্ম মন্ত্রণালয়কে লিখিতভাবে জানাতে বলা হয়েছে।
গত রবিবার ঈদের ছুটি শেষে প্রথম কার্যদিবসে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব (সংস্থা) জিয়া উদ্দিন ভূঞা স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এই ব্যাখ্যা চাওয়া হয়।
শামীম আফজাল বেকায়দায় পড়েছেন ফাউন্ডেশনের মসজিদ ও মার্কেট বিভাগের পরিচালক মহীউদ্দিন মজুমদারকে সাময়িক বরখাস্ত করে। মজুমদার এই আদেশ পর্যালোচনার জন্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন। আর মন্ত্রণালয় পর্যালোচনা করে দেখেছে, মজুমদারকে বরখাস্তের এই আদেশ ফাউন্ডেশনের বোর্ড অব গভর্নসে অনুমোদিত হয়নি। গভর্নসের চেয়ারম্যান তখন সরকারি সফরে সৌদি আরব ছিলেন। এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে তার কাছ থেকে মৌখিক সম্মতিও নেওয়া হয়নি। আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য মজুমদারকে কারণ দর্শানোর নোটিশও দেওয়া হয়নি।
শামীম মোহাম্মদ আফজালের এই আদেশকে ‘ক্ষমতাবহির্ভূত, বে-আইনি, অসৎউদ্দেশ্য প্রণোদিত, স্বেচ্ছাচারিতা ও ক্ষমতার অপব্যবহার’ হিসেবে উল্লেখ করে মন্ত্রণালয় বলেছে, এই আদেশ বাতিলযোগ্য। মহীউদ্দীন মজুমদারকে স্বপদে বহালও করা হয় চিঠিতে।
ওই চিঠিতে বলা হয়, ‘ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক ক্ষমতা বহির্ভূত, বেআইনি, অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, স্বেচ্ছাচারিতা ও ক্ষমতার অপব্যবহারের কারণে কেন তার চুক্তি বাতিলের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে না তা লিখিতভাবে পত্র প্রাপ্তির সাত কার্যদিবসের মধ্যে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় বরাবর প্রেরণের জন্য অনুরোধ করা হলো।’
মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে আফজালের বিরুদ্ধে বিভিন্ন গণমাধ্যমে নিয়োগ, পদোন্নতি ক্রয়সহ নানা অভিযোগের কথাও উল্লেখ করা হয়। জানানো হয়, সম্প্রতি দুর্নীতি দমন কমিশন থেকে গত তার বিরুদ্ধে প্রাপ্ত সুনির্দিষ্ট কিছু অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করতে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। আর এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয় জানতে চেয়েছে তাকে কেন সাময়িক বরখাস্তের আদেশ দেওয়া হবে না।
এই চিঠির বিষয়ে শামীম আফজাল ব্যস্ততার কথা বলে মিডিয়ায় কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর টানা ১০ বছর ধরেই গুরুত্বপূর্ণ এই প্রতিষ্ঠানটির প্রধান দায়িত্ব পালন করে আসছেন সাবেক জেলা জজ। সরকারের সঙ্গে তার বেশ ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে, এটা এতেই স্পষ্ট। তবে সম্প্রতি তিনি বেশ বেকায়দায় আছেন। তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট দূর্নীতির কয়েকটি অভিযোগ রয়েছে।
২০০৯ সালের জানুয়ারিতে ইসলামিক ফাউন্ডেশনে মহাপরিচালক নিয়োগ দেওয়া হয় শামীম মোহাম্মদ আফজালকে। ২০১৬ সালের ২০ ডিসেম্বর তার মেয়াদ বাড়ানো হয়। ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর আরো দুই বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়।
গত মে মাসের শুরুতে শামীম মোহাম্মদ আফজালকে ইসলামী ব্যাংকের পরিচালকের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। আর কেন এই সিদ্ধান্ত তার কারণও ব্যাখ্যা করা হয়নি স্পষ্ট করে। বিষয়টি অনেকটাই গোপনে হয়েছে। ২০১৬ সালে তিনি এই নিয়োগ পেয়েছিলেন।