প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সের টাকা তুলতে গ্রাহকদের ভোগান্তি
প্রকাশিত হয়েছে : ১১:১৯:০৮,অপরাহ্ন ০৫ মে ২০১৯ | সংবাদটি ৬৯৫ বার পঠিত
ইমরান আহমদ:: রমজানকে সামনে রেখে প্রতিবছরই রেমিটেন্সে প্রচুর পরিমাণ টাকা দেশে পাঠান প্রবাসীরা। এবার রমজানের পূর্ব মুহুর্তে রেমিটেন্সের উপর অফার দেয় ডাচ বাংলা ব্যাংক লিমিটেড। এজন্য বেশিরভাগ প্রবাসী এ ব্যাংকের মাধ্যমেই পরিবারের খরচের জন্য রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন। কিন্তু গ্রাহকরা টাকা তুলতে এসে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। নেটওয়ার্কের অজুহাতে শতশত গ্রাহকদের আটকে রাখে কর্তৃপক্ষ। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে অনেক গ্রাহক টাকা না তুলেই ফিরে যান।
রবিবার সিলেট নগরীর বারুতখানাস্থ ডাচ বাংলা ব্যাংক সিলেট ব্রাঞ্চ অফিসে বিকাল সাড়ে ৩ টায় গিয়ে এমন চিত্র দেখাযায়।
রেমিটেন্সে আসা টাকা তুলতে সকাল সাড়ে ১১টা থেকে বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত বসে আছেন নগরীর লামাবাজার এলাকার বাসিন্দা আমেনা খাতুন। তিনি জানান আমার আগে আসা অনেকে অপেক্ষা করে ফিরে গেছেন। কর্তৃপক্ষ একেক সময় একেক কথা বলে। কখনও তারা বলে নেটওয়ার্ক সমস্যা একটু অপেক্ষা করুন। আবার বলে টাকা নাই কাল আসেন। শুধু আমেনা খাতুন নয়, ওসমানীনগর উপজেলার কিয়ামপুর গ্রামের ষাটোর্ধ মাওলানা জিয়াউর রহমান দুপুর সাড়ে ১২ টা থেকে বসে আছেন। বারবার তিনি কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করলে কর্তৃপক্ষ জানায়, চাচা আজ চলে যান, আগামীকাল সকালে চলে আসেন। তাড়াতাড়ি পেয়ে যাবেন।
এসময় অনেকে বলেন, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সেই দেশের অর্থনীতি সচল। কিন্তু প্রবাসীদের পাঠানো টাকা তুলতে তাদের পরিবারকে শিকার হতে হয় নানা ভোগান্তির। অনেকে বলেন প্রচুর পরিমাণের রেমিটেন্স আসায় নেটওয়ার্কের অজুহাতে তারা একদিনের জন্য হলেও জব্ধ করে রাখতে চায়। এটা তাদের লাভ। তারা গ্রাহকদের সাথে প্রতারণা করছে।
ছাদেক আহমদ নামে এক গ্রাহক রেমিটেন্সের টাকা তুলতে এসে এমন অবস্থা দেখে শাখা উপ-ব্যবস্থাপকের কাছে অভিযোগ করলে তিনিও কড়া স্বরে বলেন অপেক্ষা করেন, সবাই পেলে আপনিও পাবেন। এসময় ছাদেক আহমদ ক্ষুব্ধ হয়ে টাকা প্রেরণকারী প্রবাসীকে ফোনে ধমক দিয়ে বলেন, ‘আর কোন ব্যাংক নাইনি টাকা পাঠাইবার, দয়া করি তুমি ডাচবাংলা আর ব্রাক ব্যাংকে টাকা পাঠাইও না’। তার কথা শুনে অনেকেই বলেন এ দুই ব্যাংকে গ্রাহকদের যেভাবে ভোগান্তিতে পড়তে হয়, সরকারী ব্যাংক তাদের চেয়ে অনেক ভাল।
শুধু রেমিটেন্স নয় ব্যাংকে লেনদেন করতে আসা সকল গ্রাহককই ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন জিন্দাবাজারের ব্যবসায়ী সাবিল আহমদ।
অপেক্ষমান শতশত গ্রাহক বলেন, ডাচবাংলা ব্যাংকের কর্তৃপক্ষের ব্যবহারও ভালো নয়। গ্রাহকদের শান্তনা দিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা রাখা যায়। কিন্তু কড়া মেজাজ দেখিয়ে তারা গ্রাহক খোয়াচ্ছে। এটা একটা বেয়াদব ব্যাংক। তারা গ্রাহকদের নিয়ে তামাসা করছে। তারা বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
তবে যারা অপেক্ষা করে টাকা পাচ্ছেন তারা দীর্ঘশ্বস ছেড়ে বেরিয়ে যেতে যেতে বলছেন ‘মনে হচ্ছে লন্ডনের ভিসা পাইছি’।
এব্যাপারে জানতে চাইলে রেমিটেন্স বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, শুধু আমাদের এ শাখা নয় সব শাখায়ই সমস্যা হচ্ছে। অল্প সময়ের মধ্যে সামাধান হবে বলেও তিনি জানান।