প্রবাসীদের হয়রানি বন্ধে বিমানবন্দরে সিসি ক্যামেরা: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
প্রকাশিত হয়েছে : ৬:০০:৪৭,অপরাহ্ন ১৭ মার্চ ২০১৯ | সংবাদটি ৪৮২ বার পঠিত
আমাদের প্রতিদিন ডেস্ক:: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, প্রবাসীদের হয়রানি বন্ধে বিমানবন্দরে ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে এই কাজ শুরু হয়ে গেছে। সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে প্রতিনিয়ত মনিটর করা হবে।’ তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। সেই সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার জন্য আজকের প্রজন্মকে সোনার মানুষ হিসেবে তৈরি করতে হবে। শনিবার (১৬ মার্চ )সিলেটে পৃথক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন মন্ত্রী।
প্রত্যেক নাগরিকের সমান সুযোগ সুবিধা নিশ্চিতের কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এক্ষেত্রে যদি পার্টিইজম ঢুকে তাহলে ভবিষ্যতে আমরা অনেককে হারাবো। তাই, শিক্ষার ক্ষেত্রে উদার হতে হবে। শিক্ষা যদি উন্নত না হয় তাহলে ভবিষ্যত উজ্জল হবে না। শিক্ষায় ‘এথিকস এন্ড মরালিটি’ যেনো সবচেয়ে বড় হয়। আমরা চাই মানুষের মত মানুষ। আমরা চাই বঙ্গবন্ধুর সেই সোনার বাংলা।
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের জনগণের অর্ধেকের বয়স ২৫ বছরের নিচে। এক-তৃতীয়াংশ লোকের বয়স ১৮-৩৪ বছর। আমরা খুবই ভাগ্যবান যে, কর্মক্ষম এতো লোক আমরা পেয়েছি। এই বিশাল জনশক্তি সত্যিকার অর্থে তখনই কাজে লাগবে যখন তারা উন্নত প্রযুক্তি ও গুণগত শিক্ষায় শিক্ষিত হবে। অন্যথায়, এরা আমাদের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়াবে।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের জনশক্তিকে সুশিক্ষিত করে তুলতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বছরের প্রথমদিনে স্কুলের শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেন। সারাদেশে এখন স্কুল-কলেজে ডিজিটাল ল্যাব তৈরি করা হচ্ছে। সরকার একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সারাদেশের ১লাখ ৫৬ হাজার স্কুলে একটি করে স্মার্টবুক দেয়া হবে। প্রকল্প অনুমোদন হয়ে গেছে। এর মাধ্যমে ছেলেমেয়েরা প্রযুক্তিতে আরো দক্ষ হবে বলে মনে করেন তিনি।
‘শিক্ষাক্ষেত্রে সিলেট অনেক পিছিয়ে পড়েছে’ জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সারা বাংলাদেশের তুলনায় সিলেট সবচেয়ে দুর্বল, সবচেয়ে পিছিয়ে। এর কারণ হচ্ছে, সিলেটের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো অত্যন্ত দুর্বল।
তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, বরিশাল ও সিলেট জেলার জনসংখ্যা প্রায় সমান হলেও বৃহত্তর বরিশালে সিলেটের তুলনায় সাড়ে তিনগুণ বেশি স্কুল রয়েছে। তাই, সিলেটে ১টি ছেলে গ্র্যাজুয়েট হলে বরিশালে ৬টি ছেলে গ্র্যাজুয়েট হয়। এ কারণে চাকুরীক্ষেত্রেও সিলেট পিছিয়ে পড়ে।
ড. মোমেন বলেন, বৃহত্তর সিলেটে সরকারি ও বেসরকারি ১৩৭টি কলেজ রয়েছে। কিন্তু শুধুমাত্র ঢাকা জেলায় ৮৮৫টি কলেজ রয়েছে। এ বিষয়ে আমি কথা বলেছি। সরকার আমার বক্তব্য গ্রহণ করেছেন। শিক্ষামন্ত্রণালয় সিলেটের ১২২টি কলেজকে উন্নত করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
শিক্ষক ও স্কুল পরিচালনার দায়িত্বে থাকা কমিটির উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, শিক্ষালয়ে যারা আছেন, ম্যানেজমেন্টে যারা আছেন, সকলের কাছে আমার অনুরোধ- শিক্ষায় যেনো কোনধরণের পক্ষপাতিত্ব করা না হয়। মেধাকে যেনো মূল্যায়ন করা হয়। এখানে অন্য কোন রাজনৈতিক ইস্যু যেনো না আসে।
মোমেন বলেন, সোনার বাংলার স্বপ্ন অর্জন করতে হলে সোনার মানুষ দরকার। সেটা তখনই সফল হবে যখন আজকের প্রজন্মকে যথাযথ মূল্যায়ন ও পরিচর্যার মাধ্যমে সৃজনশীল মেধাবী ও যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়তে পারবো।
সিলেট-১ আসনের সংসদ সদস্য ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, গত দুই মাস ধরে আমি এই এলাকার জনপ্রতিনিধি ও মন্ত্রী হিসেবে আছি। কিন্তু গত তিনবছর এই এলাকায় ঘোরাঘুরির কারণে আমি আপনাদের অনেক সমস্যার কথা জানি। ইতোমধ্যে অনেকগুলো কাজ হাতে নিয়েছি। দায়িত্ব গ্রহণ করার পর সিলেটের ১৪টি স্কুল ও ৩টি মাদ্রাসার অবকাঠামো উন্নয়নের আবেদন করেছি। এর মধ্যে ৮টি স্কুল ও ৩টি মাদ্রাসা অনুমোদন পেয়ে গেছে। এগুলো চারতলা ও ছয়তলা ভবন হবে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানুষের মঙ্গলের জন্যে, শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্যে কাজ করে যাচ্ছেন। গত ১০ বছরে শেখ হাসিনা সরকার অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছে। যার কারণে মানুষের আশাআকাক্সক্ষা অনেক বেড়ে গেছে।
জেলা শিল্পকলা একাডেমি: জেলা পর্যায়ে শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতিতে সামগ্রিক অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ সিলেট জেলার ১৪জন গুণীশিল্পী ও ১টি সৃজনশীল সংগঠনকে গতকাল রোববার প্রদান করা হয় জেলা শিল্পকলা একাডেমি সম্মাননা পদক। জেলা শিল্পকলা একাডেমি সিলেটের উদ্যোগে বিকেল সাড়ে ৪টায় নগরীর পূর্ব শাহী ঈদগাহস্থ একাডেমি প্রাঙ্গণে আয়োজন করা হয় এই পদক প্রদান অনুষ্ঠানের। ২০১৬ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ৫টি ক্যাটাগরিতে প্রতি বছর ৫জন করে মোট ১৪জন গুণীশিল্পী ও ১টি সৃজনশীল সংগঠনকে এই পদক প্রদান করা হয়।
সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলামের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন এমপি।
সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা কালচারাল অফিসার অসিত বরণ দাশগুপ্ত। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট সিলেটের সাধারণ সম্পাদক গৌতম চক্রবর্ত্তী এবং সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেটের সাধারণ সম্পাদক রজত কান্তি গুপ্ত। পদক প্রাপ্ত গুণীশিল্পীদের পক্ষ থেকে অনুভূতি জ্ঞাপন করেন অধ্যাপক ড. আবুল ফতেহ ফাত্তাহ, শামীমা চৌধুরী ও শুভেন্দু ইমাম।
প্রধান অতিথির কাছ থেকে জেলা শিল্পকলা একাডেমি সম্মাননা ২০১৬ গ্রহণ করেন কণ্ঠসংগীতে জামাল উদ্দিন হাসান বান্না, যন্ত্রশিল্পী হিসেবে ক্ষিতীশ দাশ, ফটোগ্রাফিতে আতাউর রহমান আতা, চলচ্চিত্রে শাকুর মজিদ ও লোকসংস্কৃতিতে অধ্যাপক ডক্টর আবুল ফতেহ ফাত্তাহ।
জেলা শিল্পকলা একাডেমি সম্মাননা পদক ২০১৭ গ্রহণ করেন কণ্ঠসংগীতে রানা কুমার সিন্হা, যন্ত্রশিল্পী হিসেবে মো: মধু খান, নাট্যকলায় কাজী আয়েশা বেগম, আবৃত্তিতে শামীমা চৌধুরী ও আঞ্চলিক সৃজনশীল সংগঠন হিসেবে নৃত্যশৈলী সিলেট।
জেলা শিল্পকলা একাডেমি সম্মাননা পদক ২০১৮ গ্রহণ করেন কণ্ঠসংগীতে মালতী পাল, যন্ত্রশিল্পী হিসেবে বিশ^জিৎ দে অনু, নাট্যকলায় সুনির্মল কুমার দেব মীন, আবৃত্তিতে মোকাদ্দেস বাবুল ও লোকসংস্কৃতিতে শুভেন্দু ইমাম।
রিফাত আরা ও আবু বকর মো. আল আমিন সঞ্চলনায় সম্মাননা প্রদান শেষে পরিবেশিত হয় একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
রসময় মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয় ঃ রসময় মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আফসার আজিজের সভাপতিত্বে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক সেলিম উদ্দিন আহমদ। শ্রদ্ধাঞ্জলি পাঠ করেন শিক্ষক তাহমিনা আক্তার।
উপস্থিত ছিলেন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী, মহানগর সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট সুব্রত পুরকায়স্থ, মহানগর আওয়ামী লীগের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ও সিটি কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ, রসময় স্কুলের সাবেক প্রধান শিক্ষক অঞ্জলি প্রভা প্রমুখ।
রাজা জিসি হাইস্কুল ঃ সকালে রাজা জিসি হাইস্কুল পরিচালনা পরিচালনা কমিটির সভাপতি, সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামানের সভাপতিত্বে বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী, সিলেট শিক্ষা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান এ কে এম গোলাম কিবরিয়া তাপাদার।
শিক্ষক ফৌজিয়া খানমের পরিচালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল মোমিত।