গরীবের চাল গোপনে বিক্রি, চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ!
প্রকাশিত হয়েছে : ১১:৫৪:২১,অপরাহ্ন ২০ এপ্রিল ২০২০ | সংবাদটি ৫৮১ বার পঠিত
দেবীগঞ্জ (পঞ্চগড়) থেকে সংবাদদাতা:: পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে এক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সরকারী ত্রাণ গোপনে বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে।
এদিকে, গরীবের ত্রাণ আত্মসাত করায় ইউনিয় পরিষদের সামনে বিক্ষোভ করেছেন স্থানীয়রা।
আত্মসাৎকারী জনপ্রতিনিধি উপজেলার দেবীডুবা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক।
রবিবার (১৯শে এপ্রিল) বিকালে ওই ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য কালীপদ রায়সহ ৭ জন বাসিন্দা দেবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে লিখিতভাবে এই অভিযোগ করেন। এমনকি সন্ধ্যায় তারা দেবীডুবা ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে ত্রাণের চাল বিক্রির ঘটনার প্রতিবাদ জানান।
লিখিত অভিযোগে তারা উল্লেখ করেন, গত ৬ই এপ্রিল করোনা পরিস্থিতিতে হতদরিদ্রদের জন্য সরকারি ত্রাণ সহায়তা হিসেবে ২ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়। কিন্তু চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক তা দরিদ্রদের মধ্যে বিতরণ না করে সব চাল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম সরকারের কাছে বিক্রি করে দেন। চাল বিক্রির সব টাকা তিনি আত্মসাৎ করেন বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। তারা আরও উল্লেখ করেন এর আগেও চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে ভিজিএফের চাল অনিয়মের অভিযোগে মামলা হয়। এমনকি বিষয়টি দুদক তদন্ত করছে। ত্রাণের চাল বিক্রির অভিযোগ করার পর থেকেই অভিযোগকারীদের ওই চেয়ারম্যান ও তার লোকজন নানাভাবে হুমকি ধামকি দিচ্ছে বলেও জানান তারা। তারা প্রশাসনের কাছে বিষয়টি তদন্ত করে বিচার দাবি করেন।
অভিযোগকারী ইউপি সদস্য কালীপদ রায় বলেন, নির্বাচিত হয়েই চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক বিভিন্ন অনিয়ম শুরু করেন। কোন সরকারি বরাদ্দ এলেই তিনি তার স্বজনদের মাঝে বিতরণ করেন। কয়েক বছর আগে ভিজিএফের চাল আত্মসাতের সময় স্থানীয়রা বিষয়টি ধরে ফেলে। পরে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। বিষয়টি দুদকে তদন্তাধীন রয়েছে। সম্প্রতি করোনায় বরাদ্দ পাওয়া ২ মেট্রিক টন চাল দরিদ্রদের মাঝে বিতরণ না করে তিনি তা ইউনিয়ন আ. লীগের সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম সরকারের কাছে বিক্রি করে সব টাকা আত্মসাৎ করেন। আমি ও ইউনিয়নের কয়েকজন সচেতন ব্যক্তি বিষয়টির প্রতিবাদ জানালে তিনি ও তার লোকজন আমাদেরকে প্রাণনাশসহ বিভিন্ন হুমকি ধামকি দিতে থাকেন। আমরা এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
দেবীডুবা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম সরকার বলেন, আমি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাকের কাছে ২ মেট্রিক টন চাল কিনে বিতরণ করেছি। সেই চালটি ত্রাণের কিনা আমি বলতে পারবো না। ৩৪ হাজার টাকা মেট্রিক টন দরে আমি চালগুলো কিনে নেই।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমার সুনাম ক্ষুন্ন করার জন্যই আমার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ এমন মিথ্যে অভিযোগ করেছে। এর আগেও তারা মিথ্যে অভিযোগ করেছিলো, তা মিথ্যে প্রমাণিত হওয়ায় খারিজ হয়ে গেছে। আমরা সরকারি যে ত্রাণ সহায়তা পেয়েছি তা তিনজন সরকারি ট্যাগ অফিসারের উপস্থিতিতে বিতরণ করা হয়েছে। তাই অনিয়মের কোন সুযোগ নেই। সরকারি ত্রাণের পাশাপাশি আমি ব্যক্তিগত উদ্যোগে আড়াইশ মানুষকে ত্রাণ দিয়েছি। এই করোনা পরিস্থিতির মধ্যে তারা আমার নামে বদনাম ছড়িয়ে ফায়দা নিতে চাচ্ছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখলেই সত্যটা পাওয়া যাবে।
দেবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রত্যয় হাসান বলেন, দেবীডুবা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে ত্রাণের চাল বিক্রির অভিযোগ করেছেন ওই ইউনিয়নের এক ইউপি সদস্যসহ কয়েকজন ব্যক্তি। বিষয়টি তদন্ত করার আমরা তিন সদস্য বিশিষ্ট একটা কমিটি গঠন করছি। তদন্ত প্রতিবেদন পেলেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।