গাছ কাটা নিয়ে সংঘর্ষে বিজিবি সদস্যসহ নিহত ৫
প্রকাশিত হয়েছে : ১:৫৬:৩৫,অপরাহ্ন ০৩ মার্চ ২০২০ | সংবাদটি ৩৭২ বার পঠিত
খাগড়াছড়ি থেকে সংবাদদাতা:: গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় গ্রামবাসীর সঙ্গে সংঘর্ষে এক বিজিবি সদস্যসহ পাঁচজন নিহত হয়েছেন।
অন্য নিহতদের মধ্যে এক বাবা ও তার দুই ছেলে রয়েছেন। ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩ মার্চ) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার গাজিনগর এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- ৪০ বিজিবির সিপাহি শাওন, আলুটিলা বটতলী গ্রামের সাহাব মিয়া (৭০), তার ছেলে মো. আলী আকবর ও মো. আহাম্মদ আলী ও সিরাজ মিস্ত্রির ছেলে মফিজ মিয়া।
স্বামী ও দুই সন্তানের মৃত্যুর খবর শুনে আলুটিলা বটতলীর নিজ বাড়িতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে সাহাব মিয়ার স্ত্রী রঞ্জু বেগমও মারা গেছেন বলে জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গাজীনগর গ্রামের সাহাব মিয়া সকালে তার নিজের বাগান থেকে কয়েকটি গাছ কাটেন। গাছগুলো ভ্যানে করে নিয়ে যাওয়ার সময় সেগুলো অবৈধ দাবি করে বিজিবি সদস্যরা জব্দ করতে চান। এক পর্যায়ে গ্রামবাসীরা এক হয়ে বিজিবি সদস্যদের প্রতিহত করার চেষ্টা করলে সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় বিজিবি সদস্যরা গুলি ছোড়েন। সংঘর্ষে ঘটনাস্থলে বিজিবির সিপাহি শাওন, সাহাব মিয়ার ছেলে মো. আলী আকবর ও মো. আহাম্মদ আলীর মৃত্যু হয়।
গুরুতর আহত অবস্থায় মো. মফিজ মিয়া ও মো. হানিফ নামে দুইজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হলে মফিজ মিয়া পথে মারা যান। আর বৃদ্ধ সাহাব মিয়াকে মাটিরাঙ্গা হাসপাতালে পাঠানো হলে সেখানে তার মৃত্যু হয়।
মাটিরাঙ্গা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামছুদ্দিন ভুঁইয়া সংঘর্ষে চারজন নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, এ ঘটনায় নিহত বিজিবি সদস্যসহ দুজনের মরদেহ হাসপাতালে রয়েছে। অন্য দুজনের মরদেহ ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে বলেও তিনি জানান।
এদিকে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে দুই জনকে আটক করেছে মাটিরাঙ্গা থানার পুলিশ। তবে মাটিরাঙ্গা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্ত (ওসি) শামছুলদ্দিন ভুঁইয়া জানান তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।
এদিকে ঘটনার পর বিকাল তিনটার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন সেনাবাহিনীর গুইমারা রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ শাহরিয়ার জামান, খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস, পুলিশ সুপার মো. আব্দুল আজিজ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এমএম সারাহ উদ্দিন, মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিভীষণ কান্তি দাশ, মাটিরাঙ্গা পৌরসভার মেয়র ও মাটিরাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম হুমায়ুন মোরশেদ খান।
এ সময় স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে খন্দকার রিয়াজুল ইসলামকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।