প্রেস লেখা স্কুটিসহ রাস্তায় নিহত দুই নারীর পরিচয় মিলেছে
প্রকাশিত হয়েছে : ১২:২৪:৪২,অপরাহ্ন ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ | সংবাদটি ৩৪৬ বার পঠিত
আমাদের প্রতিদিন ডেস্ক:: রাজধানীর মহাখালী সেতু ভবনের সামনের রাস্তা থেকে উদ্ধার নিহত দুই নারীর পরিচয় পাওয়া গেছে।
এদের একজন সৈয়দা কচি (৩৮)। কিশোরগঞ্জ কুলিয়ারচর পৌরসভার পাচুলিয়া বাজিতপুর এলাকার মৃত সৈয়দ ফজলুল হকের মেয়ে তিনি। নিহত অপরজন সৈয়দা সোনিয়া আমিন (২৫)। ভোলা সদর উপজেলার সিকদার বাড়ির নুরুল আমিনের মেয়ে তিনি।
মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে রাজধানীর মহাখালী সেতু ভবনের সামনের রাস্তা থেকে এ দুই নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়। রাস্তার ওপর স্কুটারসহ পড়ে ছিল তারা। তাদের স্কুটারে লেখা ছিলো প্রেস। প্রাথমিকভাবে পুলিশের ধারণা তারা সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন।
তবে, তাদের মৃত্যু নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন সৈয়দা কচির মামা।
নিহত কচির মামা অ্যাডভোকেট নুরুল আমিন ভূঁইয়া জানান, তিনি মিরপুর ১ নম্বরে থাকেন। রাতে তার গ্রামের বাড়ি থেকে ফেসবুকে কচির নিউজ ও ছবি দেখে একজন ফোন দিয়ে জানায়। এরপর ভোরে ঢাকা মেডিকেলের মর্গে কচির লাশ সনাক্ত করেন তিনি।
তিনি জানান, কচি উত্তরায় পার্ল ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশে আর্ন্তজাতিক মানের কসমেটিকস পণ্য বিপণন ও বিতরণকারী প্রতিষ্ঠানের চাকরি করত। বাণিজ্যমেলায়ও তাদের স্টল ছিল। সাত/আট বছর ধরে সে এই চাকরি করত। অবিবাহিতা ছিল কচি। দুই বোনের মধ্যে সে ছোট। তার বাবা-মা দুজনই মৃত। বড় বোনের নাম চুমকি। কল্যাণপুরের একটি বাসায় এক রুমে ভাড়া থাকত সে। নিজের স্কুটার দিয়েই চলাফেরা করত। বছরখানেক আগে সে একটি পত্রিকায় রিপোর্টিংয়ে চাকরি নিয়েছিল বলে শুনেছিলাম। তবে তারপর সে পত্রিকার চাকরি ছেড়ে দেয়। কোন পত্রিকায় চাকরি নিয়েছিল তা বলতে পারছি না। তখনই তার স্কুটারে প্রেস লেখা ছিল।
তিনি বলেন, কচি সকাল ৯টায় বাসা থেকে বের হয়ে অফিসে যেত। আবার রাত ১১টার আগেই বাসায় ফিরত। তবে গতকাল (মঙ্গলবার) এত রাতে কোথায় যাচ্ছিল তা বলতে পারি না। আর এত জনবহুল জায়গায় এমন দুটি মেয়ের লাশ পড়ে ছিল কেউ কিছু বলতে পারছে না, বিষয়টা আমরা বুঝতে পারছি না। সেখানে আশেপাশে অনেক সিসিটিভি ক্যামেরাও থাকবে। পুলিশও কিছুই বলতে পারে না কোনো গাড়ি ধাক্কা দিয়েছে কি না। আমাদের কাছে মনে হচ্ছে অন্য কোনো ঘটনা।
নিহত সোনিয়ার মা মনোয়ারা বেগম জানান, দুই মেয়ে, দুই ছেলের মধ্যে সোনিয়া ছিল তৃতীয়। সে আগে ভারতীয় কসমেটিকস কোম্পানিতে চাকরি করত। মাঝেমাঝেই ভারতে যেত। সেখানে থাকত। সেখানে চাকরি করা অবস্থায় সৈয়দ মহাসিন নামের এক যুবকের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক হয়। এরপর নয় মাস আগে তারা বিয়ে করে। কিছুদিন আগে সে দেশে আসে। তার পরিবার মিরপুর ১ নম্বর শাহআলী থানার পাশে থাকে।
তিনি জানান, কচি আর সোনিয়া রাতে বনানীতে নীলু নামের আরেক তাদের এক আপার বাসায় যায়। সেখান থেকেই রাতে দুজনে মিরপুরের বাসায় ফিরছিল। বর্তমানে সে বেকার ছিল। চলতি মাসের ১৭ তারিখ সে ভারতে যাওয়ার কথা ছিল। তবে করোনাভাইসারের কারণে সে ভিসা জটিলতায় আর যেতে পারেনি। আগামী মাসে যাওয়ার কথা ছিল।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের পরিদশর্ক মো. বাচ্চু মিয়া জানান, মঙ্গলবার রাত দেড়টার দিকে অচেতন অবস্থায় দুজনকে হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নিয়ে আসেন পথচারীরা। পরে চিকিৎসকরা তাদের দুজনকে দেখে মৃত ঘোষণা করেন। পরে মৃতদেহ দুটি মর্গে পাঠানো হয়।
বনানী থানার ডিউটি অফিসার মো. ফজল ইসলাম জানান, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে রাত পৌনে ১টার দিকে সেতু ভবনের সামনে স্কুটার চালিয়ে যাওয়ার সময় কোনো যানবাহনের ধাক্কায় স্কুটারে থাকা দুই নারী আহত হযন। পরে তাদের হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।