বই মেলায় ইচ্ছেমতো ঘুরতে না পারার আক্ষেপ প্রধানমন্ত্রীর
প্রকাশিত হয়েছে : ৩:০৯:০৯,অপরাহ্ন ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ | সংবাদটি ৪৮৫ বার পঠিত
আমাদের প্রতিদিন ডেস্ক:: একুশে বই মেলায় আগের মতো ঘুরতে না পারার আক্ষেপের কথা জানালেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ছাত্রজীবনে এমনও হয়েছে, সারাদিন বই মেলায় কাটতো, আবার কোনো দিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটাতাম। কিন্তু এখন সেই স্বাধীনতা নেই।
রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে মাসব্যাপী অমর একুশে বইমেলার উদ্বোধনকালে তিনি এ আক্ষেপের কথা জানালেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের শুরুতেই জাতীয় সঙ্গীত ও সূচনা সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়। মহান ভাষা আন্দোলনে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
বাংলা একাডেমির সভাপতি ও জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামানের সভাপতিত্বে সূচনা বক্তব্য রাখেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাঙালির যা কিছু অর্জন তা রক্ত দিয়েই অর্জন করতে হয়েছে। ভাষা পাওয়ার ক্ষেত্রেও রক্ত দিতে হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলা ভাষা আজ দেশের সীমানা ছাড়িয়ে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে মানুষের প্রাণে অনুরণিত হয়। ২১ ফেব্রুয়ারি এখন ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’। এ স্বীকৃতি আদায়ের জন্য কানাডা প্রবাসী সালাম ও রফিকসহ কয়েকজন বাঙালি উদ্যোগ গ্রহণ করেন। পরবর্তীকালে আওয়ামী লীগ সরকার এ বিষয়ে জাতিসংঘে প্রস্তাব উত্থাপন করে। যার ফলে ইউনেস্কো ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
বাংলাকে জাতিসংঘের অন্যতম সরকারি ভাষা হিসেবে স্বীকৃতিদানের জন্য ইতোমধ্যে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে দাবি উত্থাপন করা হয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্বের সকল ভাষাগোষ্ঠীর মাতৃভাষা সংরক্ষণ, বিকাশ ও চর্চার লক্ষ্যে আমরা ঢাকায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করেছি। জ্ঞানচর্চা ও পাঠচর্চা বিস্তারে গ্রন্থমেলা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গ্রন্থমেলা এমন একটি মাধ্যম, যা জাতির অগ্রগতির ও উন্নয়নের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। গ্রন্থমেলা আমাদের অস্তিত্ব, জীবনবোধ এবং চেতনাকে জাগ্রত করে।
বইয়ের মাধ্যমে মহান মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস ও বঙ্গবন্ধুকে যথাযথভাবে তুলে ধরতে প্রকাশক ও লেখকদের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু রচিত ‘আমার দেখা নয়া চীন’ বইয়ের বিষদ বর্ণনা দেন।
তিনি বলেন, চীনে যাওয়ার আগে পাকিস্তানিরা তাকে (বঙ্গবন্ধু) নানাভাবে অত্যাচার-নির্যাতন করেছে, তারপরও তিনি চীনে গিয়ে নিজের দেশের দুর্নাম করেননি। এখন তো অনেকে বিদেশে গিয়ে যা ঘটেছে তার চেয়ে আরও বেশি করে বদনাম গায়।
বইমেলার উদ্বোধনী শেষে মেলা পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগে অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য রাখেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী।
অনুষ্ঠানে ১০ জনকে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এবার পুরস্কারের অর্থমূল্য বাড়িয়ে করা হয়েছে তিন লাখ টাকা।
বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু রচিত ‘আমার দেখা নয়া চীন’ গ্রন্থটির মোড়ক উম্মেচন করা হয়। মুজিববর্ষ উপলক্ষে এবারের বইমেলা উৎসর্গ করা হয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে।
আয়তনের দিক থেকে এবারের মেলা হবে বৃহৎ আয়োজন। এবার বইমেলার একটি নতুন থিম নির্ধারণ করা হয়েছে। আর তা হলো ‘বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ’। স্থপতি এনামুল করিম নির্ঝর বঙ্গবন্ধুকে কেন্দ্র করে মেলার আঙ্গিক ও সামগ্রিক পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছেন। বৃহৎ পরিসর হওয়ায় বইপ্রেমীরা এবার স্বাচ্ছন্দ্যে মেলায় ঘুরতে এবং পছন্দের বই কিনতে পারবেন বলে আশা করছেন আয়োজকেরা। গ্রন্থমেলা ২ থেকে ২৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। ছুটির দিন বেলা ১১টা থেকে রাত ৯ টা এবং ২১ ফেব্রুয়ারি সকাল ৮টা থেকে রাত ৮ টা ৩০মিনিট পর্যন্ত মেলা চলবে।