এলডিপি’র পাল্টা কমিটি নিয়ে যা বললেন কর্নেল অলি!
প্রকাশিত হয়েছে : ১:০৯:২৮,অপরাহ্ন ১৮ নভেম্বর ২০১৯ | সংবাদটি ৬৪৯ বার পঠিত
আমাদের প্রতিদিন ডেস্ক:: বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক কর্নেল (অব.) অলি আহমদের লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টিতে (এলডিপি) ভাঙন দেখা দিয়েছে। দলীয় প্রধান অলিকে বাদ দিয়ে নয় সদস্যের নতুন কমিটি ঘোষণা করেছেন বিদ্রোহীরা।
সোমবার (১৮ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের মওলানা আকরম খাঁ হলে এই কমিটি ঘোষণা করা হয়। নতুন কমিটির সভাপতি করা হয়েছে আবদুল করিম আব্বাসীকে। আর মহাসচিব হয়েছেন শাহাদাত হোসেন সেলিম।
বর্ধিত সভা করে এলডিপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হবে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। নতুন এলডিপি ২০ দলেই থাকবে বলেও জানানো হয়েছে।
এদিকে, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) কর্তৃত্ব নেওয়ার আইনগত অধিকার কারোর নেই বলে মন্তব্য করেছেন কর্নেল অলি আহমদ। দলের নিবন্ধন তার নামে করা বলেও বিরোধীতাকারীদের তিনি স্মরণ করিয়ে দেন।
সোমবার (১৮ নভেম্বর) বিকালে সংবাদ সম্মেলনে এসে এলডিপি চেয়ারম্যান সাংবাদিকদের একথা বলেন।
বিএনপি ভেঙে গড়ে তোলা দল এলডিপিতে অস্থিরতা চলছে বেশ কয়েক মাস ধরেই। গত জুনে এলডিপি ছাড়েন সাবেক সাংসদ আব্দুল করিম আব্বাসী, আব্দুল্লাহ ও আব্দুল গনি। সংগঠনের নিয়মিত কার্যক্রম না থাকা, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন না দেওয়া ও রাজনৈতিকভাবে মূল্যায়ন না করার অভিযোগে তারা পদত্যাগ করেন। একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে এলডিপি ছাড়েন প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক হুইপ আবু ইউসুফ খলিলুর রহমান।
গত ৯ নভেম্বর ২০৩ সদস্য বিশিষ্ট দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির তালিকা প্রকাশ করে এলডিপি। সাত মাস ধরে দলের কোনো কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত না থাকার অভিযোগে এই কমিটিতে সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিমকে রাখা হয়নি।
এরপর থেকেই এলডিপিতে ভাঙনের গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। এর মধ্যে গত শনিবার রাজধানীর উত্তরায় বৈঠক করেন অলিবিরোধী নেতারা। সেই বৈঠকেই সিদ্ধান্ত হয় নতুন কমিটি করার।
পাল্টা কমিটি গঠনের কয়েকঘণ্টা পর অলি আহমদ বলেন, ‘এলডিপি নির্বাচন কমিশনে (ইসি) নিবন্ধিত এক নম্বর রাজনৈতিক দল। গত ১২ বছর ধরে আমি এই দলের সভাপতি।’
‘সুতরাং এই রাজনৈতিক দলকে অন্য কারও নেওয়ার আইনগত সুযোগ নেই; এমনকি কোনো অধিকারও নেই। এলডিপির নিবন্ধন আমার নামে। ফলে আমার দলই মূল দল।’
জাতীয় প্রেসক্লাবের পেঁয়াজসহ নিত্য প্রযোজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে জাতীয় মুক্তিমঞ্চের উদ্যোগে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে অলি দল ছেড়ে যাওয়া নেতাদের বিষয় ছাড়াও নানা প্রসঙ্গে কথা বলেন। জাতীয় মুক্তিমঞ্চের আহবায়কও তিনি।
পাল্টা কমিটির নেতাদের অভিযোগ তাদের বঞ্চিত করা হয়েছে- এ বিষয়ে অলি আহমদ বলেন, ‘এলডিপির কোনও ত্যাগী নেতাকে বঞ্চিত করেনি। বরং এলডিপির সাবেক যুগ্ম মহাসচিব শাহাদত হোসেন সেলিম সব সময় নিজেকে সিনিয়র যুগ্ম মহাসচির বলে পরিচয় দিতেন।’
‘অথচ আমার দলের গঠনতন্ত্র অনুযাযী সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিবের কোনো পদ নেই। পদ আছে যুগ্ম মহাসচিব। তাকে নিষেদ করার পরও সব সময় এই পদটি ব্যবহার করত। তাই তাকে দল থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।’
এক প্রশ্নের জবাবে অলি আহমদ বলেন, ‘তাদের ২০ দলীয় জোটে নেওয়া হবে কিনা এ বিষয়ে আমার কোনো বক্তব্য নেই। সেটা ২০ দল সিদ্ধান্ত নেবে।’
তাদের বিরুদ্ধে কোনো সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে কি না- প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তারা দলের কোনো গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি না যে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে কিংবা দল থেকে বহিষ্কার করার পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
এলডিপির সভাপতি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে অনেক রাজনীনৈতিক দল রযেছে। আরেকটি দল হলো। তারা প্রেসক্লাবে, ফুটপাতে বসে নানান কর্মসূচি পালন করবে। এতে অনেকের সুবিধা হবে। অসুবিধা কি?’
অলি আহমদ বলেন, ‘গত ১১ বছর ধরে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় রয়েছে। তাদের ক্ষমতায় থাকাকালে জনজীবন দূর্বিসহ হয়ে উঠেছে। দেশে মানবাধিকার বিঘ্নিত হচ্ছে, গণতন্ত্র নেই। ব্যাংকে টাকা নেই, সর্বত্র লুটপাট চলছে। বিদেশে টাকা পাচার হচ্ছে, ব্যবসা বাণিজ্য মন্দা।’
এ সময় বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মোহাম্মদ ইব্রাহিম ও এলডিপির মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমদ উপস্থিত ছিলেন।