ক্ষমা চাইলেন জাপা মহাসচিব রাঙ্গা!
প্রকাশিত হয়েছে : ১০:৪১:৫৬,অপরাহ্ন ১২ নভেম্বর ২০১৯ | সংবাদটি ৪৩৪ বার পঠিত
আমাদের প্রতিদিন ডেস্ক:: এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম মহানায়ক শহীদ নূর হোসেনকে নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করায় তোপের মুখে পড়েন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা। তোপের মুখে একটি গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে স্লিপ অব টাং হয়েছে বলে জানান। এবার প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে পরিবারসহ সকলের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) এক লিখিত প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নূর হোসেনের পরিবারসহ সকলের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন মসিউর রহমান রাঙ্গা।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তিনি বলেন, গত ১০ নভেম্বর জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের বনানীস্থ কার্যালয়ের মিলনায়তনে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ঘরোয়াভাবে আয়োজিত গণতন্ত্র দিবসের আলোচনা সভায় আমার কিছু বক্তব্য নিয়ে কোনো কোনো মহল এবং বিশেষ করে নূর হোসেনের পরিবারের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
রাঙ্গা বলেন, প্রতি বছর নূর হোসেনের মৃত্যুবার্ষিকীর দিনে কয়েকটি সংগঠনের আলোচনা, বক্তব্য ও বিবৃতিতে জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে হেয় প্রতিপন্ন করা হয়। এমনকি তাকে অশ্রাব্য ভাষায় গালাগালিও করা হয়। এর ফলে জাতীয় পার্টির কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। সেই প্রেক্ষিতে কর্মীদের উত্তেজনার মধ্যে বক্তব্য প্রদানকালে অনিচ্ছাকৃতভাবে আমার মুখ থেকে নূর হোসেন সম্পর্কে কিছু অযাচিত কথা বেরিয়ে গেছে। যা নূর হোসেনের পরিবারের সদস্যদের মনে আঘাত করেছে। এর জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত ও অনুতপ্ত।
তিনি আরও জানান, নূর হোসেনের পরিবারের প্রতি আমাদের প্রয়াত চেয়ারম্যান এরশাদও সমব্যথী ছিলেন। অতএব অসতর্কভাবে বলে ফেলা আমার বক্তব্যে যে আঘাত লেগেছে তার জন্য আমি নূর হোসেনের মায়ের কাছে আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি। একই সাথে আমার যে বক্তব্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে সেসব বক্তব্য প্রত্যাহার করে নিচ্ছি। আমি আশা করি এই বিষয়ে আর কোনো ভুল বোঝাবুঝির অবকাশ থাকবে না।
উল্লেখ্য, গত ১০ নভেম্বর জাতীয় পার্টির বনানী কার্যালয়ে গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় শহীদ নূর হোসেনকে মাদকাসক্ত বলে আখ্যায়িত করেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা।
শহীদ নূর হোসেনকে নিয়ে রাঙ্গা বলেন, নুর হোসেন ইয়াবাখোর ফেনসিডিলখোর ছিলেন। যারা গণতন্ত্রের গ-ও বুঝে না, সেই অ্যাডিক্টেড ছেলেকে নিয়ে নাচানাচি করছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। তাদের কাছে ইয়াবা-ফেনসিডিলখোর ও ক্যাসিনো ব্যবসায়ীদের গুরুত্ব বেশি। এরশাদ সাহেবের কাছে এরা কোনো গুরুত্ব পায়নি।
নূর হোসেনের হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে তিনি আরও বলেন, পুলিশ গুলি করল সামনে থেকে আর ঘুরে গিয়ে পেছন থেকে লাগল। কি হাস্যকর যুক্তি। তখন তো একজন মারা গেছে, এখন প্রতিদিনই মানুষ মরছে।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বৈরাচারী শাসক বলে মন্তব্য করে জাপা মহাসচিব বলেন, এরশাদ স্বৈরাচার ছিলেন না। খালেদা জিয়া স্বৈরাচার। খালেদা স্বৈরাচার হলে শেখ হাসিনাও স্বৈরাচার।
তিনি আরও বলেন, এরশাদের অনুগ্রহে একুশ বছর পর ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। আর সেই আওয়ামী লীগ তার বিরুদ্ধে মামলা দেয়। নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করে।
জাতীয় পার্টির এই নেতা বলেন, আওয়ামী লীগ বিএনপি গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। ওদের মুখে গণতন্ত্র মানায় না। আগে গণতন্ত্র বুঝতে হবে। এই গণতন্ত্র মুখে দেয় নাকি মাথায় দেয়।