সাজা কমতে পারে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত নবজাতকের মা মনির!
প্রকাশিত হয়েছে : ১০:৫৩:১৪,অপরাহ্ন ২৬ অক্টোবর ২০১৯ | সংবাদটি ৮৯১ বার পঠিত
আমাদের প্রতিদিন ডেস্ক:: আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানিয়েছেন, উচ্চ আদালত বিশেষভাবে বিবেচনা করলে ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির মামলায় সাজা পাওয়া দুই-একজনে শাস্তি কম হতে পারে। তাদের মধ্যে সদ্য নবজাতকের মা নুসরাতের সহপাঠী ও হত্যাকায় সরাসরি জড়িত মনির নাম রয়েছে।
শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর গুলশানে নিজ বাসভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
নুসরাত জাহান রাফির ১৬ জনের সবার ফাঁ’সির রায় উচ্চ আদালতে কতটুকু গ্রহণযোগ্য হবে জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, দেশের আইনে যেটা বলে, এ রকম হ’ত্যাকা’ণ্ডে সবচেয়ে আগে ক্যাপিটাল পানিশমেন্টের কথা চিন্তা করতে হবে। যদি কোনো ‘মিটিগেটিং সারকামস্ট্যান্সেস’ থাকে তাহলে যাবজ্জীবনের কথা চিন্তা করা হয়।
রাফি হত্যা মামলার রায় উচ্চ আদালতে বহাল থাকবে কিনা সেই বিষয়ে তিনি বলেন, আমার মনে হয় দু’একজন বাদে সবার রায়ই বহাল রাখবেন হাইকোর্ট। তাছাড়া এ মামলায় ১২ জন দোষ স্বীকার করেছে, ৯২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। দু’একজন নারী রয়েছে, তাদের মধ্যে একজনের বাচ্চাও রয়েছে। উচ্চ আদালত বিশেষভাবে বিবেচনা করলে তাদের সাজা কম হতেই পারে।
প্রসঙ্গত, সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী ছিলেন নুসরাত জাহান রাফি। মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলা নিজ কক্ষে ডেকে নিয়ে তাকে যৌ’ন হয়’রানি করেন। এ ঘটনায় রাফির মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে ২৭ মার্চ সোনাগাজী থানায় মা’মলা দায়ের করেন। এরপর অধ্যক্ষকে গ্রে’ফতার করে পুলিশ। পরে মা’মলা তুলে নিতে বিভিন্নভাবে রাফির পরিবারকে হুমকি দেয়া হয়।
৬ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে আলিম পর্যায়ের আরবি প্রথম পত্রের পরীক্ষা দিতে ওই মাদ্রাসার কেন্দ্রে যায় রাফি। এ সময় বোরকা পরিহিত কয়েকজন তাকে পাশের বহুতল ভবনের ছাদে ডেকে নিয়ে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে মামলা তুলে নিতে চাপ দেয়। রাজি না হলে রাফির গায়ে কে’রোসিন ঢেলে আ’গুন দেয় তারা।
এতে রাফির পুরো শরীর দগ্ধ হয়। ১০ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মা’রা যায়। এ ঘটনায় নুসরাতের বড় ভাই বাদী হয়ে ৮ এপ্রিল সোনাগাজী মডেল থানায় মা’মলা করেন।
ফাঁ’সির দ’ণ্ডপ্রাপ্ত
রাফি হত্যা মামলায় পুলিশ ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলাসহ ২১ জনকে বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রে’ফতার করে। পরে ২৯ মে ১৬ জনকে আসামি করে ৮০৮ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র দাখিল করে পিবিআই।
চার্জশিটভুক্ত ১৬ আসামির মধ্যে ১২ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
৩০ মে মামলাটি ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়। ১০ জুন আদালত মামলাটি আমলে নিলে শুনানি শুরু হয়। ২০ জুন অভিযুক্ত ১৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন বিচারিক আদালত।
২৭ ও ৩০ জুন মা’মলার বাদী মাহমুদুল হাসান নোমানকে জেরার মধ্য দিয়ে বিচারকাজ শুরু হয়। এরপর ৯২ সাক্ষীর মধ্যে ৮৭ জন সাক্ষ্য দেন আদালতে।