মাদরাসা ছাত্রী নুসরাত হত্যায় অধ্যক্ষসহ ১৬ জনের ফাঁসি
প্রকাশিত হয়েছে : ১০:২৩:০৫,অপরাহ্ন ২৪ অক্টোবর ২০১৯ | সংবাদটি ৪৪০ বার পঠিত
আমাদের প্রতিদিন ডেস্ক:: ফেনীর আলোচিত মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যায় মাদরাসা অধ্যক্ষসহ ১৬ জনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড করা হয়।
বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) সকাল সোয়া ১১টার দিকে ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মামুনুর রশিদ এই রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় দণ্ড পাওয়া সব আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
এই রায় ঘোষণার মাধ্যমে হলে অল্প সময়ে একটি চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার রায়ের দৃষ্টান্ত স্থাপন হলো।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদাসার সাবেক অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা, নূর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, সোনাগাজী পৌরসভার কাউন্সিলর মাকসুদ আলম, সাইফুর রহমান মোহাম্মদ জোবায়ের, জাবেদ হোসেন ওরফে সাখাওয়াত হোসেন জাবেদ, হাফেজ আব্দুল কাদের, আবছার উদ্দিন, কামরুন নাহার মনি, উম্মে সুলতানা ওরফে পপি ওরফে তুহিন ওরফে শম্পা ওরফে চম্পা, আব্দুর রহিম শরীফ, ইফতেখার উদ্দিন রানা, ইমরান হোসেন ওরফে মামুন, মোহাম্মদ শামীম, মাদরাসার গভর্নিং বডির সহ-সভাপতি রুহুল আমীন ও মহিউদ্দিন শাকিল।
এর আগে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে আসামিদের কারাগার থেকে আদালতে আনা হয়। পরে তাদের এজলাসে তোলা হয়। এর কিছুক্ষণ পরই বিচারক রায় ঘোষণা করেন।
গত ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলা নিজ কক্ষে ডেকে নিয়ে নুসরাতের শ্লীলতাহানি করেন। এ ঘটনায় তাঁর মা শিরিনা আক্তার বাদী হয়ে সোনাগাজী থানায় মামলা করলে অধ্যক্ষকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মামলা তুলে না নেওয়ায় ৬ এপ্রিল মাদ্রাসার প্রশাসনিক ভবনের ছাদে ডেকে নিয়ে নুসরাতের হাত-পা বেঁধে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয় বোরকা পরা পাঁচ দুর্বৃত্ত। ১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অগ্নিদগ্ধ নুসরাতের মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান (নোমান) সোনাগাজী থানায় মামলা করেন। পরে মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হয়। গত ২৮ মে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তদন্ত শেষে মাদ্রাসার অধ্যক্ষসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে ৮৬৯ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র দাখিল করে। মাত্র ৬১ কার্যদিবসে মামলার কার্যক্রম শেষ হয়। আর মামলার তদন্ত কার্যক্রম শেষ করতে পিবিআইয়ের লাগে ৩৩ কার্যদিবস।
হত্যাকাণ্ডের মাত্র সাত মাসের মধ্যেই হতে যাওয়া এই রায়কে ঘিরে সতর্ক অবস্থায় নেয় ফেনী পুলিশ। এজন্য আদালত চত্বর এলাকায় নেওয়া হয় কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা। রায়ে সব আসামির সর্বোচ্চ সাজা হওয়ায় খুশি নুসরাতের পরিবার ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা।