ডিসি কেলেঙ্কারী সেই নারী অফিসে এসে জ্ঞান হারালেন, সন্তানের জন্য বাঁচার আকুতি!
প্রকাশিত হয়েছে : ২:৫৯:২২,অপরাহ্ন ২৬ আগস্ট ২০১৯ | সংবাদটি ৬৫৫ বার পঠিত
আমাদের প্রতিদিন ডেস্ক:: সদ্য ওএসডি হওয়া জামালপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) আহমেদ কবীরের সঙ্গে আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল হওয়া সেই নারী অফিস সহকারী অফিসে এসেই জ্ঞান হারিয়েছেন।
সোমবার (২৬ আগস্ট) অফিসে এসে জ্ঞান হারান সমালোচিত ওই নারী। এ সময় তার হাতে শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে লেখা ছুটির আবেদনপত্র পাওয়া যায়। পরে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। এর কিছুক্ষণ পর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ত্যাগ করেন ওই নারী।
অফিস সহকারীর ছুটির আবেদনপত্র পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে জামালপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রাজীব কুমার সরকার বলেন, “ওই অফিস সহকারী ছুটির আবেদন করেছেন। তার আবেদনটি গ্রহণ করা হয়েছে। নতুন জেলা প্রশাসক কর্মস্থলে যোগদান করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবেন।”
এদিকে, সেই নারী বাঁচার আকুতি জানিয়েছেন। বলেছেন, তিনি বাঁচতে চান না, কিন্তু সন্তানের কথা ভেবে তাঁকে বাঁচতে হবে। ১০ বছর বয়সী সন্তানের কথা ভেবে এই আকুতি জানিয়ে ওই নারী বলেন, ‘আপনারা আমার দিকে না তাকিয়ে, আমাকে এভাবে ধিক্কার না দিয়ে আমার এতিম সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে আমাকে বাঁচার ব্যবস্থা করে দিন।’
সব দোষ নিজের কাঁধে তুলে নিয়ে তিনি এও বলেছেন, এখানে ‘স্যারের’ (পদ হারানো জেলা প্রশাসক আহমেদ কবির) কোনো দোষ নেই।
ওই নারীও জামালপুরের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে কাজ করতেন। বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) মধ্যরাতে তার সঙ্গে সদ্য সাবেক জেলা প্রশাসক আহমেদ কবিরের শারীরিক সম্পর্কের ভিডিও ফাঁস হয়।
রবিবার পদ হারান আহমেদ কবির। তাকে প্রত্যাহার করে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা ওএসডি করা হয়েছে। রবিবার কাজে আসেননি ওই নারী। পরদিন সোমবার (২৬ আগস্ট) সকালে তিনি ভিন্ন বেশে কার্যালয়ে যান ছুটির দরখাস্ত দিতে।
এ সময় গণমাধ্যমকর্মীরা ওই নারীর সঙ্গে কথা বলেন। এক পর্যায়ে তিনি অজ্ঞান হয়ে মেঝেতে পড়ে যান। এ সময় তার হাতে ‘শারীরিক অসুস্থতার কারণে; ২৭ আগস্ট থেকে ৩ দিনের ছুটির আবেদনপত্র দেখা যায়।
পরে জ্ঞান ফিরলে ফাঁস হওয়ার ভিডিওর ব্যাপারে জানতে চাইলে ওই নারী বলেন, বিষয়টি মানবিক দৃষ্টিতে দেখার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার এমনি বাঁচার কোনো ইচ্ছা নেই। আমি বাঁচতে চাই না, আমার সন্তানের জন্য আমাকে বাঁচান। এভাবে ধিক্কার না দিয়ে আমাকে বাঁচার মতো বাঁচতে দিন।’
ফাঁস হওয়া ভিডিওর বিষয়ে জানতে চাইলে ওই নারী বলেন, ‘আমি ভিডিও দেখেছি। কিন্তু এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। কীভাবে এসব হলো তা আমার জানা নেই। এসব কে করল তা আপনারা বের করে তদন্ত করুন। আমি বিচার চাই, কিন্তু স্যারের কোনো দোষ নেই।’
‘স্যার নির্দোষ, কারণ স্যার আমার কোনো ক্ষতি করে নাই।’
বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে খন্দকার সোহেল আহমেদ নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে ৪ মিনিট ৫৭ সেকেন্ডের ভিডিও পোস্ট করা হয়। শুক্রবার ভোরের মধ্যেই সেটি ভাইরাল হয়ে যায়। যদিও শুক্রবার সকাল আটটা থেকে ওই আইডিতে ভিডিওটি আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। পরে সেটি ছড়াতে থাকে ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে।
পরদিন ২৪ মিনিট ৫৮ সেকেন্ডের পুরো ভিডিওটি পর্ন সাইটে আপ হয়ে যায়। বাংলাদেশে এই সাইটগুলো বন্ধ করে দেওয়া হলেও বিকল্প পন্থায় এখনো তা দেখা যায় এবং তার মাধ্যমেই এই ভিডিওটিও ছড়িয়ে পড়ে।
এই ঘটনায় আহমেদ কবিরকে প্রত্যাহারের পাশাপাশি ঘটনার তদন্তে একটি কমিটি গঠন করা হয়। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাকে বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে বলে জানান জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। আর মন্ত্রিপরিষদ সচিব শফিউল আলম জানিয়েছেন, অপরাধ প্রমাণ হলে চাকরিচ্যুতও হতে পারেন আহমেদ কবির।