মিরপুরে আগুন নিভলেও পুড়ে ছাই হাজারো পরিবারের স্বপ্ন!
প্রকাশিত হয়েছে : ৮:৩০:৪০,অপরাহ্ন ১৬ আগস্ট ২০১৯ | সংবাদটি ১২৪৯ বার পঠিত
আমাদের প্রতিদিন ডেস্ক:: হাজারেরও বেশি পরিবারের সাজানো সংসার পুড়ে নিভেছে রাজধানীর মিরপুর সেকশন-৭ এর চলন্তিকা বস্তির আগুন। প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা জ্বলা আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে পুরো বস্তিটি। পুড়েছে আশপাশের স্থাপনাও। আহত হয়েছেন চারজন।
শুক্রবার (১৬ আগস্ট) সন্ধ্যা ৭টার কিছু পরে বস্তিটিতে আগুনের সূত্রপাত হয়।
ফায়ার সার্ভিস জানায়, সন্ধ্যা ৭টা ২২ মিনিটে তাদের আগুন লাগার কথা জানানো হলে ছয় মিনিটের মাথায় তাদের সাতটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে।
আগুনের তীব্রতা বেশি থাকায় একেএকে ইউনিট সংখ্যা বাড়ানো হয়। ফায়ার সার্ভিসের কন্ট্রোল রুমসহ আশপাশের আরো তিনটি ফায়ার স্টেশন থেকে মোট ২৪টি ইউনিটের দেড়শ দমকলকর্মী এই আগুন নিয়ন্ত্রণে অংশ নেন।
ফায়ার সার্ভিসের সাথে এগিয়ে আসেন স্থানীয় বাসিন্দারাও। ঘটনাস্থলে আসে র্যাব, পুলিশ ও ওয়াসার কর্মকর্তারা। কিন্তু আগুনের তীব্রতায় একাধিকবার পিছু হটতে হয়েছে আগুন নিয়ন্ত্রণে চেষ্টাকারীদের।
অবশেষে প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে আসে আগুন। ততক্ষণে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে বস্তিতে বসবাসকারী প্রায় হাজারেরও বেশি পরিবারের সাজানো সংসার।
স্থানীয়রা জানায়, আগুন লাগার সময় বস্তিতে বসবাসকারীরা ছুটে বাইরে বের হয়ে আসেন। জীবন নিয়ে বের হতে পারলেও কোনো জিনিসপত্র বের করে আনতে পারেননি। তবে ভেতরে কেউ রয়ে গেছে কিনা তা কেউ নিশ্চিত করতে পারেননি।
প্রাথমিক ধারণা থেকে ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে। অগ্নিকাণ্ডের মূল কারণ সম্পর্কে জানতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের অপারেশন বিভাগের পরিচালক জিল্লুর রহমান।
জানা গেছে, প্রায় ত্রিশ বিঘা জমির উপরে গড়ে ওঠা বস্তিটিতে প্রায় ২২ হাজার মানুষ বসবাস করতেন।
স্থানীয় বাসিন্দা দীন ইসলাম জানান, বস্তিটিতে প্রায় দুই হাজারের বেশি ঘর ছিল।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের বস্তি উন্নয়ন কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন ভূঞা ঢাকাটাইমসকে জানান, এ বস্তিতে কি পরিমাণ মানুষ বসবাস করে কিংবা কতগুলো ঘর ছিল তার কোনো সুস্পষ্ট তথ্য তাদের কাছে নেই।
এদিকে রাত সাড়ে দশটা নাগাদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম ও স্থানীয় সংসদ সদস্য ইলিয়াস আলী মোল্লা।
এসময় ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার আশ্বাস দিয়ে ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ‘যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমি তাদের আশ্বাস দিচ্ছি- আমাদের পক্ষ থেকে যতটুকু সম্ভব সহায়তা করা হবে। মাননীয় সাংসদ এবং দুর্যোগ মন্ত্রণালয়কে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।’
আর স্থানীয় সাংসদ এই ঘটনাকে দুর্ঘটনা আখ্যা দিয়েছেন। এছাড়া স্থানীয় স্কুলগুলোতে ভুক্তভোগীদের রাতে থাকা এবং খাওয়ার ব্যবস্থা করা হবে বলেও তিনি জানান।