ভিআইপি, একমাত্র রাষ্টপতি ও প্রধানমন্ত্রী!
প্রকাশিত হয়েছে : ১:১৯:৪৫,অপরাহ্ন ৩১ জুলাই ২০১৯ | সংবাদটি ৪২০ বার পঠিত
আমাদের প্রতিদিন ডেস্ক:: রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী ছাড়া দেশে আর কেউ অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বা ভিআইপি নয় বলে জানিয়ে দিয়েছে হাইকোর্ট। দুই বিচারপতির বেঞ্চ বলেছে, যত বড় কর্মকর্তাই হোক, তারা সবাই জনগণের সেবক মাত্র।
একজন উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তার জন্য তিন ঘণ্টা ফেরি আটকে রাখায় গুরুতর আহত এক স্কুল ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় সমালোচনার মধ্যেই এই বক্তব্য এলো।
বুধবার (৩১ জুলাই) বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে হাইকোর্ট বেঞ্চে ফেরি আটকে রাখা সংক্রান্ত রিটের শুনানি হয়।
গত বৃহস্পতিবার রাতে মাদারীপুরের কাঁঠালিয়া ফেরিঘাটে সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আগত কিশোর তিতাসকে বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স তিন ঘণ্টা আটকে থাকে। সরকারের এটুআই প্রকল্পে কাজ করা যুগ্ম সচিব আবদুস সবুর মণ্ডল নদী পার হবেন বলে ফেরিটি তিন ঘণ্টা আটকে রাখা হয়। তিতাসের মায়ের কান্নায় কারো মন গলেনি, এমনকি পায়ে ধরলেও কাজ হয়নি। ছেলেটিকে ঢাকায় এনে জরুরি অপারেশন করার কথা। কিন্তু মাঝ নদীতেই মারা যায় সে।
এই খবর গণমাধ্যমে এলে নিন্দার ঝড় উঠে। প্রশ্ন উঠে, ভিআইপি আসলে কারা। কেন তাদের জন্য রাস্তা বা ফেরির মতো সেবা আটকে থাকবে। বিষয়টি নিয়ে উচ্চ আদালতে রিটও করা হয়। এতে ওই যুগ্ম সচিব এবং ফেরির ম্যানেজারের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়। পাশাপাশি তিতাসের মৃত্যুর ঘটনায় স্বতন্ত্র তদন্ত কমিটি গঠন, তিতাসের পরিবারকে তিন কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চাওয়া হয়। ফেরিঘাটে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে অ্যাম্বুলেন্স চলাচল নিশ্চিত করার আবেদনও করা হয়।
মানবাধিকার সংগঠন লিগ্যাল সাপোর্ট অ্যান্ড পিপলস রাইটসের চেয়ারম্যানের পক্ষে জনস্বার্থে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আইনজীবী জহির উদ্দিন লিমন এ রিট করেন।
রিটের শুনানিতে আদালত বলে, ‘রাষ্ট্রপতি আর প্রধানমন্ত্রী ছাড়া দেশে কোনো ভিআইপি নেই। বাকিরা সবাই প্রজাতন্ত্রের চাকর।’
এ সময় অতিরিক্ত সচিবের নিচে নন, এমন পদমর্যাদার কর্মকর্তার নেতৃত্বে তিতাস ঘোষের মৃত্যুর বিষয়ে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। জনপ্রশাসন সচিবের প্রতি এ নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
হাইকোর্টের এই নির্দেশনা মানলে কাজ করা দুটি তদন্ত কমিটিই অকার্যকর হয়ে যায়। কারণ, এখন যে দুটি তদন্ত কমিটি কাজ করছে, তার কোনোটির নেতৃত্বে অতিরিক্ত সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তা নেই।
মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক ওয়াহিদুল ইসলামের করে দেওয়া তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শহীদুল হক পাটোয়ারী।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের করা আরেকটি কমিটির নেতৃত্বে আছেন যুগ্ম-সচিব শাহনওয়াজ দিলরুবা খান।