গোলাপগঞ্জের যুবক ব্রাজিলে ’বন্দি’, আমানতের টাকা ‘ছিনতাই’র নাটক!
প্রকাশিত হয়েছে : ৫:০০:৫৩,অপরাহ্ন ২২ জুন ২০১৯ | সংবাদটি ৭৬৭ বার পঠিত
আমাদের প্রতিদিন ডেস্ক:: গোলাপগঞ্জের এক যুবক ব্রাজিলে গিয়ে দালালের হাতে বন্দি হয়ে দিন কাটাচ্ছেন। বন্ধি ঐ যুবক উপজেলার বাদেপাশা ইউপির আমকোনা গ্রামের মৃত আকদ্দস আলীর পুত্র মো. আব্দুল আজিম। তৃতীয় পক্ষের কাছ রাখাআমানতের টাকা না পাওয়ায় দালালরা আজিমকে বন্ধি করে নির্যাতন করছে বলে অভিযোগ তার পরিবারের। টাকা আমানতদার তৃতীয় পক্ষ আজিমের চাচাত বোনের জামাই বলে জানা গেছে। আমানতের টাকা ছিনতাই হয়েছে বলে তিনি নাটক সাজিয়েছেন- এমন অভিযোগও আজিমের পরিবারের।
এব্যাপারে গোলাপগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন আজিমের ছোট ভাই আব্দুল আলিম।
অভিযোগ সূত্র জানা গেছে, মো. আজিমের সাথে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আলাপ হয় তারই পরিচিত বাজিল প্রবাসী ফয়জুর রহসমানের সাথে। কথা বার্তা হয় ব্রাজিল যাবার ব্যাপারে। ফয়জুর রহমানের ব্যাপরে তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্ততা করেন আজিমের চাচাতো বোন হাফছা বেগম ও হাফছা বেগমের স্বামী বিয়ানীবাজরের দেবরাইয়ের বুরহান উদ্দিনের ছেলে আতাউর রহমান আতিক। আতিক ব্রাজিল প্রবাসী ফয়জুর রহমানেরও বন্ধু। তিনি নাভানা ফার্মাসিস্টের মৌলভীবাজার ব্রাঞ্চের ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত।
ব্রাজিল যেতে হলে ১২ লাখ টাকায় লাগবে। শর্ত হয় ৭ লাখ টাকা অগ্রিম ফয়জুর রহমানের এ্যাকাউন্টে দিতে। ব্রাজিল পৌঁছার পর বাকি ৫ লাখ টাকা তৃতীয় পক্ষ হাফছা বেগম ও আতাউর রহমান আতিকের কাছে দিতে হবে। আতিক সেই টাকা ফয়জুর রহমানের কাছে পাঠাবে।
২৫ মে আজিম প্রবাসী ফয়জুর রহমানের একাউন্টে ৭ লাখ টাকা পরিশোধ করে। পরে সে ব্রাজিল পৌঁছে। কথামতো বাকি ৫ লাখ টাকা তৃতীয় পক্ষ হাফছা বেগম ও আতাউর রহমান আতিকের কাছে দেয় আজিমের পরিবার। এখন আতিক ও তার স্ত্রী হাফসা বেগম আমানতের ৫ লাখ টাকা ফয়জুর রহমানকে না দেয়ায় ব্রাজিলে আজিমের পাসপোর্ট জব্দ করে তাকে বন্দি করে নির্যাতন করছে।
এ নিয়ে ৪ জুন গোলাপগঞ্জের আমকোনা এলাকার মুরুব্বীরা আজিমের চাচাতো বোন হাফছা বেগম ও তার বোন হাসনা বেগমের সাথে এক সালিশ বৈঠক করেন। সালিশ বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় ১৩ জুন আমকোনার সাবেক চেয়ারম্যান রেহান উদ্দিনের কাছে আমানতের টাকা এনে দিবেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত তারা সেই টাকা এনে দেয়নি।
আজিমের ছোট ভাই মো. আব্দুল আলীম বলেন, ব্রাজিল প্রবাসী ফয়জুর রহমানের কথামতো ৭ লাখ টাকা অগ্রিম দেবার পর আমার ভাইকে তিনি ব্রাজিলে নিয়েছেন। বাকি ৫ লাখ টাকা তৃতীয় পক্ষের কাছে আমানত হিসেবে রাখা ছিলো, কিন্তু তারা সেই টাকাটি ফয়জুর রহমানকে দিচ্ছে না। আমার ভাই আমাকে জানায়, টাকা না দেয়ায় তার পাসর্পোট জব্দ করা হয়েছে। বন্দী করে নির্যাতন করা হচ্ছে।
আমাদের এলাকার মুরুব্বীরা আমার চাচাতো বোন হাফছা বেগম ও তার বোন হাসনা বেগমের সাথে একাধিক সালিশ বৈঠক করেন। সালিশ বৈঠকে সিদ্দান্ত হয় ১৩ জুন আমকোনার সাবেক মেম্বার রেহান উদ্দিনের কাছেআমানতের টাকা এনে দিবেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত তারা সেই টাকা এনে দেয়নি।
এ বিষয়ে বিয়ানীবাজরের দেবরাইয়ের বুরহান উদ্দিনের ছেলে নাভানা ফার্মাসিস্টের মৌলভীবাজার ব্রাঞ্চের ম্যানেজার আতাউর রহমান আতিক বলেন, আমি টাকা নিয়ে ব্যাংকে জমা দিতে যাচ্ছিলাম। পথে শেরপুরের কামাননগর ব্রিজে দুইটি মোটরসাইকেলযোগে চারজন ছিনতাইকারী টাকা ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। আমি এই ক’দিনের মধ্যে বাকি টাকাগুলো পরিশোধ করবো।
ছিনতাইয়ের ঘটনায় কোনো মামলা বা সাধারণ ডায়েরি করেছেন কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি এই বিষয়ে কোনো কিছুই করিনি। ফয়জুর রহমানের মাধ্যমে আমি আমার আরো অনেক আত্মীয় স্বজনকে বিদেশে পাঠিয়েছি।
অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে গোলাপগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান মিজান বলেন, একটি অভিযোগ পেয়েছি, এব্যাপারে তদন্ত চলছে।