কুশিয়ারার ভাঙনে গোলাপগঞ্জের ৬ ইউনিয়ন
প্রকাশিত হয়েছে : ১০:৩৬:৪০,অপরাহ্ন ২৮ মে ২০১৯ | সংবাদটি ৫৫৪ বার পঠিত
মুহাম্মদ চেরাগ আলী, গোলাপগঞ্জ: গোলাপগঞ্জে বেশ ক’টি গ্রাম কুশিয়ারার ভাঙ্গনে নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে, অধিকাংশ ঝুকির মুখে রয়েছে। বিগত কয়েক বছর ধরে এর প্রকোপতা বৃদ্ধি পাওয়ায় বাস্তহারা হতে হয়েছে প্রায় দুই শতাধিক পরিবার। অসহায় পরিবারগুলোর মধ্যে অনেকের স্থান হয়েছে রাস্তার ধারে খোলা আকাশের নীচে, আবার কারো ভাগ্যে জুটেছে অন্যের বাড়িতে আশ্রিত হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করতে। বুধবারীবাজার, আমুড়া, ঢাকাদক্ষিণ আংশিক, ভাদেশ্বর, উত্তর বাদেপাশা ও শরীফগঞ্জ ইউনিয়নের বেশির ভাগ গ্রাম ইতোমধ্যে আক্রান্ত আবার অনেকে ঝুকির মুখে।
বিশেষ করে বুধবারীবাজার, উত্তর বাদেপাশা এবং শরীফগঞ্জ ইউনিয়নের শতাধিক পরিবার নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বুধবারীবাজার ইউনিয়নের কটলিপাড়া, বহরগ্রাম, কালিজুরী, বাগিরঘাট, চন্দরপুর, লামাচন্দরপুর , উত্তর বাদেপাশা ইউনিয়নের ছয়ঘরি, ছালিমকোনা, কেউটকোনা কোনাগাও, আলমপুর, হাজিরকোনাসহ আরো কয়েকটি। শরীফগঞ্জের দক্ষিণ খাটকাই, কদুপুর, কাদিপুরসহ, আমুড়া ইউনিয়নের ঘাগুয়া, শিকপুর, দক্ষিণ সুনামপুর, ভাদেশ্বর ইউনিয়নের গোয়াসপুর, নুরপুরসহ বেশ ক‘টি ঝুকির মুখে রয়েছে।
ক’বছর থেকে বুধবারীবাজার ইউনিয়নের কালিজুরী, বুধবারীবাজার, এবং বাগিরঘাট গ্রাম আক্রান্ত। ইতোমধ্যে কালিজুরী ছত্রিশ গ্রামের প্রায় শতাধিক পরিবার বাস্তহারা হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সকলের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করে কিছুই হয়নি। আক্রান্তরা জানান নির্বাচন আসলে অনেকে আশ্বাস দিয়ে থাকেন। ইচ্ছা না থাকা সত্বেও তাদের আশ্বাসে বিশ্বাস করতে হয়। পরবর্তীতে আর কোন দেখা মিলেনি। দীর্ঘদিন থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে যোগাযোগ করার পরও কোন কাজের কাজ কিছু হয়নি।
উত্তর বাদেপাশা ইউনিয়নের শিক্ষক লুৎফুর রহমান জানান, প্রায় ১৫ বছর পূর্বে শরীফগঞ্জ ইউনিয়নের তৎকালীন চেয়ারম্যান আব্দুল মুছাব্বিরের প্রচেষ্টায় শরীগঞ্জ ইউনিয়নে কুশিয়ারা নদীতে ব্লকের মাধ্যমে নদী ভাঙ্গন রোধ করার চেষ্টা চালান। তার এ প্রচেষ্টায় অনেক গ্রাম নদী ভাঙ্গন থেকে রক্ষা পায়। বর্তমানে এ ধরণের কর্মসুচি হাতে নিলে এখনো অনেক গ্রাম নদী ভাঙ্গন থেকে বাচানো সম্ভব বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সরজমিন কালিজুরী এবং ছত্রিশ গ্রামের লোকজনের সাথে আলাপ করে জানা যায়, কয়েক মাস পূর্বে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বেশ ক’জন অফিসার এসে ভাঙ্গন পরিস্থিতি নিজ চোখে দেখে বলেছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে যোগাযোগ করে এর একটি বিহিত করা হবে। কিন্তু আজ পর্যন্ত পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোন লোকজনের দেখা মেলেনি। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামুনুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান বিষয়টি সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানানো হয়েছে। যেহেতু নদী ভাঙ্গন একটি বিশাল ব্যাপার এর ব্যবস্থা নিতে সময়ের ব্যাপার।
প্রায় মাস খানিক ধরে আবারো ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়েছে। ইতোমধ্যে ৪/৫টি বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ৮/১০টি বাড়ি এখনো ঝুকির মুখে রয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে তড়িৎ কোন ব্যবস্থা না নিলে বড় ধরণের বিপর্যয় ঘটতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।