করোনা: তুমিনা একটি বিপদ, তবে কেন এত তামাশা?
প্রকাশিত হয়েছে : ৬:২১:৩০,অপরাহ্ন ০১ জুন ২০২০ | সংবাদটি ৫৩৫ বার পঠিত
।। শেখ খালিদ সাইফুল্লাহ ।।
তামাশা-৫
(কৃষকের সাথ উপহাস প্রসংগে)
মাটি ও মানুষের প্রকৃত বন্ধু,কোটি কোটি মানুষের সেবক, যাদের করুণায় এযাবৎ কখোনো খাদ্যসংকটে পড়েনি বাংলাদেশ৷ ওরা আর কেউ নয়,আমাদের খেটে খাওয়া সেই দিনমজুর কৃষক বিশেষ ৷ ওদের কথাই আমি বলছি৷ কৃষি নির্ভর এই দেশে যাদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও শরীর ঝরা ঘামের বিনিময়ে কাটা ধান থেকে সকলেরই মুখে দুবেলা অন্ন ঝুটে ৷ করোনা! সর্বশেষ তুমি তাদেরকেও ছাড় দাওনি,শ্রমিক সংকটের সৃস্টি করেছ ,ফসল কাটবে কি ভাবে?ঘরে তুলতে কে করবে ওদের সাহায্য৷ বানিয়েছ তাদেরকে অনেকের কাছে উপহাসের পাত্র পাইনি তারা কখোনো তাদের প্রাপ্য ৷ অথচ,তোমার কারণেই বিশ্বব্যাপী খাদ্যাভাবের মারাত্মক প্রভাব পড়তে পারে ভেবে,সতর্কতা জানিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষনা দিলেন যে, এ দুর্যোগে নিজ নিজ অবস্থান থেকে কৃষকের পাশে দাড়াতে৷ এমনকি ছাত্র-শিক্ষকেও উদ্ভুদ্ধ করলেন তিনি এ ব্যাপারে ৷ প্রথম দিকে অনেক জায়গায় ছাত্রলীগের ছেলেরা স্বপ্রণোদিত হয়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে ।সহযোগিতা করেছিল স্কুল কলেজ ও মাদ্রাসার ছাত্ররা অতি সন্তর্পণে ৷ করোনা! দমাতে পারনি তুমি তাদের কে ৷ আলবৎ তাদের এ কাজ প্রসংশার দাবীদার৷ এরপর দেখালে মোদের এমন কিছু নেতা পাতিনেতাদের কাজকারবার ৷ যারা বের হয়না ইয়ার কন্ডিশন থেকে বড়জোর এক বার ৷ চড়ে বসে সব সময় মার্সিডিজ আর পাজারো জীপ, নামেনা কব মাটিতে কাপড়ে কাঁদা লাগাবে নিশ্চিত৷ যাদের ছিলনা কখনো কোন সম্পর্ক মাটি ও মানুষের সাথে, আজ ধান কাটার নামে তুমি তাদের হাতে ধরিয়ে দিয়েছো কাস্তে,দাড় করিয়েছো কৃষকের পাশে৷ করবে ফটোসেশন, দিবে পোজ প্রকাশ পাবে বিভিন্ন মিডিয়াতে৷ করোনা! তুমি আর কতো দেখাবে কেরেসমা? শুনতে অবাক লাগে সহযোগিতার নামে কাঁচা ধান কেটে নেতাকে দিয়ে করেছ কৃষকের সর্বনাশ ৷ এও শেষ নয় বলতে লজ্জা হয়, আরো কিছু মেডাম যারা হাতে আঙ্গুলির নকে হলদে লাগার ভয়ে চামচ দিয়ে খাবার খায় সবসময়, মুখের সাজ-সাজ ভাব নষ্ট হওয়ার ভয়ে পাক করতে যায়নি চুলার ধারেকাছেও কোন সময় ৷ তাকেও আজ সেজেগুজে নামালে তুমি কৃষকের পাশে, সকল বাটপারকে ফটোসেশনের জন্য জামায়েত করেছ সহযোগিতার নামে৷ এসব দেখে Onlinnews এ প্রতিবাদের ঝড় উঠলে কোন এক মন্ত্রী কি বললেন জান? “কেউ কেউ হয়তো নিছক মজা করতে অথবা ছবি তুলতে গিয়েছে”। “তবে সেখানে উপস্থিত মানুষ করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে জারি করা সামাজিক দূরত্ব মানার নির্দেশ মানছিলোনা কেউ” বলে স্বীকার করেন তিনি। তিনি আরও বলেন, “প্রতীকী ধান কাটা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কিছু মানুষ যদি অনুপ্রাণিত হয় এবং কৃষকদের সাহায্য করতে এগিয়ে আসে, তাহলে আপত্তি কোথায়?” এ যেন শাক দিয়ে মাছ ঢাকার অভিপ্রায়। ওরা কী কৃষকের মর্যাদা দিতে জানে৷ একজন কৃষক দেশের কী সম্পদ তারা কি বুঝে ৷ তাদের এ কেমন মিথ্যে সহানুভূতি? পারলে প্রকৃত সহানূভূতি প্রদর্শন করুন। এ যেন এক সার্কাস;দেড় কোটি কৃষকের সাথে কেনইবা এ উপহাস ৷ ওদের কারণে আজ আন্তর্জাতিক মহলে দেশের ভাবমুর্তি হয়েছে ক্ষুণ্য ৷ কৃষককে দেয়া আশ্বাসকে করেছে কলুষিত মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এতে হয়েছেন মনোক্ষুণ্ন ৷ করোনা! পারোনি তুমি ওদের সাবুধে আনতে ৷ করনি ওদেরকে সংশোধন ৷ তা হলে করছোটা কি? জগৎটাকে বানিয়েছো এক মৃত্যুপুরীর দেশ এই তোমার কাজ শেষ৷ করোনা! তুমিনা এক মহা বিপদ, মহা দুর্যোগ ৷ সৃষ্টিকর্তার এক বড় গজব ৷ তা হলে তোমাকে নিয়ে কেন এতো সার্কাস?এতো তামাশা ? বিদায় হও এ পৃথিবী থেকে খতম করো তুমার যতসব তেলেসমাতি আর প্রদর্শনী ৷
সামাজিক দায়িত্ববোধ থেকে মনের এ অভিব্যক্তি ৷
লেখক : শিক্ষক, ঢাকাদক্ষিণ দারুল উলূম হুসাইনিয়া মাদরাসা, গোলাপগঞ্জ, সিলেট।