করোনা রোগী আছে বলে জোরপূর্বক বাসায় ঢুকার চেষ্টা!
প্রকাশিত হয়েছে : ৩:০৮:২১,অপরাহ্ন ১৯ এপ্রিল ২০২০ | সংবাদটি ৫৯৪ বার পঠিত
আমাদের প্রতিদিন ডেস্ক:: করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী আছে বলে রাজধানীর একটি বাসায় মধ্যরাতে জোরপূর্বক ঢুকার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে একদল দুষ্কৃতি।
দারোয়ান গেইট না খোলায় সকালে এসে তাকে দেখে নেয়ার হুমকি দিয়ে পালিয়ে যায় তারা।
তবে মধ্যরাতে রাজধানীর উত্তরার যে বাড়িতে এমন ঘটনা ঘটেছে সেখানে করোনা আক্রান্ত কোনো রোগীই ছিলো না। আর যদি থেকেও থাকে মধ্যরাতে এভাবে রোগী নিতে আসার কোনো নিয়ম নজিরও নেই।
শনিবার (১৮ এ্রপ্রিল) যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বিজ্ঞানী ও লেখক ড. আশরাফ আহমেদ তার ফেসবুক ওয়ালে এক পোস্টে এই ঘটনার কথা জানিয়েছেন।
রাজধানীর উত্তরায় তার ছোট ভাইয়ের বাড়িতে শুক্রবার (১৭ এপ্রিল) মধ্যরাতে একদল দুষ্কৃতিকারী এভাবেই প্রবেশের চেষ্টা করে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সরকার ঘোষিত ছুটির মধ্যে এমন ঘটনা আতঙ্ক বাড়িয়েছে বাড়িওয়ালা ও বাসিন্দাদের। করোনা রোগীর তথ্য সংগ্রহ ও জরুরি সেবার ছলে অপরাধীরা বিভিন্ন বাড়িতে গিয়ে দুষ্কর্ম ঘটানোর চেষ্টা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ শুনে সবাইকে সতর্ক করে প্রেসনোট দিয়েছে পুলিশ।
ড. আশরাফ আহমেদ লিখেন, শুক্রবার রাত আনুমানিক একটার দিকে আমার ছোট ভাইয়ের উত্তরার বাড়িতে তিন-চারজন মানুষ এসে দারোয়ানকে ডাকে। তারা জানান, হাসপাতাল থেকে এসেছেন। কারণ তাদের কাছে তথ্য রয়েছে এই বাড়িতে করোনা আক্রান্ত রোগী রয়েছে এবং তাকে তারা নিয়ে যাবেন। তারা বারবার বারবার মেইন গেইট খুলে দেবার জন্য চাপ দেন। দারোয়ানের বর্ণনা মোতাবেক ওই লোকদের দুই/তিন জন পিপিই, মাস্ক ও গ্লাভস পরিহিত ছিল।
‘কিন্তু গার্ড খানিকটা ত্যাড়া প্রকৃতির হওয়ায় তাদেরকে পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দেন এখন স্বয়ং বাড়িওয়ালা ওপর থেকে এসে গেট খোলার জন্য বললেও তিনি কিছুতেই গেট খুলে দেবেন না। তাদের যদি সত্যি সত্যিই করোনা রোগী নিয়ে যেতে হয় তবে সকাল পর্যন্ত বাহিরে অপেক্ষা করতে হবে। কোনভাবেই গার্ড গেট খুলে না দেয়ায় তারা তাকে যাচ্ছেতাই ভাষায় গালিগালাজ করে চলে যায় এবং শাসিয়ে যায় যে সকালে এসে তাকে দেখে নেবে’- যোগ করেন ড. আশরাফ।
তবে সকালে কেউ সেই বাড়িতে করোনা রোগী নিতে আসেননি। যদিও বাড়িটিতে প্রকৃতপক্ষে কোনো করোনা রোগী নেই। তাই তাদের ধারণা, কোনো দুষ্কৃতিকারী কিংবা চোর-ডাকাত করোনা রোগীর কারণ দেখিয়ে কোনো অঘটন ঘটানোর চেষ্টা করেছিল।
এদিকে করোনাভাইরাসের রোগীর তথ্য সংগ্রহ ও জরুরি সেবার নামে কেউ বাড়িতে এলে ৯৯৯ বা থানায় ফোন করে পরিচয় নিশ্চিত হতে বলেছে পুলিশ সদর দপ্তর।
‘কোনো অবস্থাতেই আগন্তুকের পরিচয় নিশ্চিত না হয়ে অথবা তার বা তাদের কার্যক্রমের বৈধতা সম্পর্কে নিশ্চিত না হয়ে তাকে বা তাদেরকে ঘরে ঢুকতে দেবেন না’- বলা হয়েছে পুলিশের প্রেসনোটে।
এতে আরো বলা হয়েছে, ‘ইদানীং লক্ষ্য করা যাচ্ছে, করোনা রোগীর তথ্য সংগ্রহ ও জরুরী সেবার নামে কিছু দুষ্কৃতিকারী সাধারণ মানুষের বাড়িতে গিয়ে অপরাধ সংঘটনের সুযোগ নিচ্ছে। বাংলাদেশ পুলিশ সব সময় আপনার পাশে রয়েছে। একইসাথে এ ধরনের দুষ্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর হুশিয়ারি উচ্চারণ করছে বাংলাদেশ পুলিশ।’
প্রাণ সংহারক মহামারী করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে গত ২৬ মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সবাইকে বাসায় থাকার নির্দেশনা দেয় সরকার। জরুরি সেবার প্রয়োজনীয় প্রতিষ্ঠান ছাড়া বাকি সব প্রতিষ্ঠান ও গণপরিবহন বন্ধ রয়েছে।
উল্লেখ্য, লকডাউনের ফাঁকা রাজধানীতে সম্প্রতি একটি চক্র দুটি ওষুধের দোকানে ডাকাতিও করে। চক্রটির পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ আর এদের একজন নিহত হয়েছেন কথিত বন্দুকযুদ্ধে।