ওয়েস্ট পামবীচে ২৯ তম এশিয়ান এক্সপো জমজমাট আসর সম্পন্ন
ওয়েস্ট পামবীচে ২৯ তম এশিয়ান এক্সপো জমজমাট আসর সম্পন্ন
প্রকাশিত হয়েছে : ৮:০৩:৪৬,অপরাহ্ন ০৮ জুন ২০২৫ | সংবাদটি ১২ বার পঠিত
জুয়েল সাদত :
২৯ তম এশিয়ান এক্সপো ফুড ফেয়ার এন্ড কালচারাল শো এর ৩ দিনব্যাপী অনুষ্টান হয়ে গেল সাউথ ফ্লোরিডা ওয়েষ্ট পামবীচে ফেয়ার গ্রাউন্ডে। ল
৩০ শে মে সন্ধ্যায় গালা ডিনারের মাধ্যমে ২৯ তম এশিয়ান এক্সপোর তিন দিনের শো শুরু হয়৷ গালা ডিনারে বিশিষ্ট কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ ও স্পন্সররা উপস্থিত ছিলেন।
৩০ মে শুক্রবার সন্ধ্যায় হোটেল হিলটন ওয়েস্ট পাম বিচ এর হলে আয়োজনে অংশ নেয়া স্টেট সিনেটর, মেয়রসহ বিভিন্ন স্টেট থেকে আগত অতিথি, স্পসরশীপ প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার, শিল্পী-কলাকুশলী, মিডিয়া ব্যক্তিত্বদের সম্মানার্থে গালা ডিনার নাইট আয়োজন করা হয়।
৩১ শে মে সন্ধ্যায় এম রহমান জহির অনানুষ্ঠানিক ভাবে ২ দিনের মুল অনুস্টানের শুভ সুচনা করেন। এসময় তার সাথে ছিলেন চেয়ারম্যান সঞ্জয় সাহা, কো চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম জুয়েল ও কমিউনিটি লিডার আতিকুর রহনান।
রাত ৮ টায় বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব ফ্লোরিডার সভাপতি এম রহমান জহির প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথি, স্পন্সরদের নিয়ে মঞ্চে যান। এসোসিয়পশন এর সভাপতি এম রহমান জহির ও সাধারণ সম্পাদক আরিফ আহমদ আশরাফ ২৯ তম এশিয়ান এক্সপো ফুড ফেয়ার এন্ড কালচারাল এর হোস্ট কমিটির নেতৃবৃন্দদের পরচিয় করিয়ে দেন।
জর্জিয়া স্টেটের ডিসট্রিক্ট ৭ এর সিনেটর নাবিহা ইসলাম পারর্কস ওপেনিং সিরেমনির ফিতা কেটে ২৯ তম এশিয়ান এক্সপোর শুভ সুচনা ঘোষণা করেন।
প্রধান অতিথি নাবিহা ইসলাম, তার বক্তব্য বলেন অসাধারণ আয়োজনের এই এশিয়ান এক্সপোতে আসতে পেরে ধন্য মনে করেন। তিনি আয়োজকদের ধারাবাহিকভাবে ২৯ টি এশিয়ান এক্সপো ফুড এন্ড ফেয়ার আয়োজন করায় ধন্যবাদ জানান। তিনি আরো বলেন, কালচারাল এক্সচেঞ্জের এই ২ দিনের শো টা অনেক শিক্ষনীয়৷ তিনি ৩৯ তম আটলান্টা ফোবাবায় সকলকে আমন্ত্রণ জানান।
নাবিহা ইসলামের শুভেচ্ছা বক্তব্যের পর শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন কনভেনর নুরউদ্দীন শেখ, চেয়ারম্যান সঞ্জয় সাহ, সেক্রেটারী ড. শাহীন, চীফ করর্ডিনেটর মোহাম্মদ আলমগীর, চীফ করর্ডিনেটর নাজমুল হক রনি, কো চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম জুয়েল, প্রচার সম্পাদক আব্দুল গফ্ফার, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট পরিচালক মিজানুর রহমান, মনজুর চৌধুরী, তামান্না আশরাফ,মাসুূদ ইসলাম রনি, মনিরুল ইসলাম জুয়েল, কামরুল ইসলাম চৌধুরী, মোহাম্মদ সেলিম মিয়া,রানা হক প্রমুখ।
শুভ উদ্ভোধন এর পর শুরু হয় মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
ফেয়ার গ্রাউন্ড এর এশিয়ান এক্সপোর মুল প্যাভিলিয়ন এর বাহিরে ছিল খাবারের দোকান, নানা স্বাদের খাবারের দোকানে ছিল উপচেপড়া ভীড়৷ দেশীয় খাবারগুলো কিনতে লাইনে দাড়াতে হয়েছিল।
শনিবার দুপুর থেকে শুরু হওয়া আয়োজনে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, থাউল্যান্ড, শ্রীলংকাসহ এশিয়ান বিভিন্ন দেশের শিল্পীদের নৃত্য, সংগীতসহ বিভিন্ন বিনোদমূলক আয়োজন ছিলো সবার নজরকাড়া।
মুল ভ্যানুতে ছিল ৯০ টি নানা ধরনের ষ্টল।
বিভিন্ন ব্যবসায়ীক প্রতিস্টানগুলোর প্রমোশনাল বুথ সাথে শাড়ী কাপড়ের দোকান। ভেন্ডররা অনেক ভাল ব্যবসা করেন। এশিয়ান এক্সপোতে ছিল মেডিক্যাল টীম, ইনফরমেশন বুথ সহ সব ধরনের সুবিধা। একটি চমৎকার সুভেনির প্রকাশিত হয়। টিকেট কেটে লাইন ধরে প্রবাসীরা এশিয়ান এক্সপো উপভোগ করেন। কালচারাল শোতে বিভিন্ন সংগঠনের পারফর্মেন্স ছিল। রাত ৯ টা ৩৯ তম আটলান্টা ফোবানার টীম ও ফোবানার নানা শহরের সদস্যদের মঞ্চে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়। এ সময় আটলান্টা ফোবানার মাহবুব ভুইয়া ও কাজী নাহিদ বক্তব্য রাখেন।
প্রথম দিনের মুল শিল্পী ছিলেন মোজা ও মোনালী। মোজা অনেক সময় ইয়াংদের মাতিয়ে রাখেন। ভারতীয় শিল্পী মোনালী অসাধারন পারফর্ম করেন। পুরো দেড় ঘন্টা মাতিয়ে রাখেন অডিয়েন্সদের। রাত ১১ টায় প্রথম দিনের শো শেষ হয়। নানা শহরের অতিথি এবং শিল্পী দের হিলটন হোটেলে থাকার ব্যবস্থা করেন।
২ দিন সকাল থেকে আগত অতিথি, শিল্পী, মিউজিশিয়ান সবাই লেচু গার্ডেনে। হোটেল হিলটনের পাশে ৯ মাইলের দুরত্বে রাগা গার্ডেনে সবাই৷ দুপুর ২ টায় শুরু হয় দিনব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানমালা। স্থানীয় নানা সংগঠন এর পারফর্মেন্স। তিনটা চারটার দিকে স্থানীয় নানা সিটির প্রবাসীরা আসতে শুরু হয়। প্রথম দিনের জমজমাট আসর চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ায় লোকে লোকারন্য পরিনত হয়
সন্ধ্যায় পুরো ফেয়ার গ্রাউন্ডন্ড মানুষের কোলাহলে পুর্ন হয়ে যায়।
সন্ধ্যা ৭ টায় এম রহমান জহির এর টীমকে মঞ্চের পাশে অবস্থান করতে দেখা যায়। প্রথমে ২৯ তম এশিয়ান এক্সপো ফুড এন্ড ফেয়ার ফেস্টিভ্যাল এর মহিলা সদস্যদের মঞ্চে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়৷ এক কালারের শাড়ীতে সবাইকে অসাধারণ লাগছিল। বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব ফ্লোরিডার সভাপতি এম রহমান জহির এশিয়ান এক্সপোর টীমকে যারা মুল ভুমিকায় গত ৬ মাস নিরলস কাজ করছেন তাদের পরিচয় করিয়ে দেন৷ সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন এসোসিয়েশন এর সাধারণ সম্পাদক আরিফ আহমদ আশরাফ, কনভেনর সঞ্জয় সাহা, কো কনভেনর শফিকুল ইসলাম জুয়েল সহ আরো অনেকে। সে সময় নিউইয়র্ক থেকে আগত এটর্নী মইন ইউ আহমদ এম রহমান জহিরকে এবং উনার টীমকে প্রক্লেমেশন প্রদান করেন, এসময় নিউইয়র্কের জনপ্রিয় অভিনেত্তা তরিকুল ইসলাম মিটু বক্তব্য রাখেন। বিশেষ অতিথি এটর্নী মইন ইউ আহমদ এক সংক্ষিপ্ত বলেন, উত্তর আমেরিকার সবচেয়ে কালারফুল এবং জনপ্রিয় ফেস্টিভ্যাল হিসাবে এশিয়ান এক্সপো সমাদৃত। আজ এখানে আমাকে আমন্ত্রিত করায় আয়োজকদের ধন্যবাদ।
রাত ৮ টায় সাউথ ফ্লোরিডা ফেয়ারগ্রাইন্ড এর মুল মঞ্চ, এবং ফুড ভেন্ডরদের প্রবাসীদের উপচে পড়া ভীড়৷ খাবারের দোকানে লম্বা লাইন। মুল মঞ্চে স্থানীয় শিল্পীরা গান করছেন এবং ৯০ টি ভেন্ডার দের ষ্টলে প্রতিযোগীতায় কেনাবেচা চলছিল। ফ্লোরিডার নানা শহরের প্রবাসীদের বার্ষিক মিলন মেলার উপলক্ষ এশিয়ান এক্সপো ফুড এন্ড ফেয়ার কালচারাল ফেস্টিভ্যাল।
ফুড ভেন্ডরদের আাশে পাশে দেশের আর্তমান অবস্থা নিয়ে গ্রুপে গ্রুপে আড্ডা, যুক্তিতর্ক এবং দেশের প্রতি আবেগের বহিঃপ্রকাশ চোখে পড়ে।।
অসম্ভব নিখুত এবং গোছালো এবারের এশিয়ান এক্সপোটা গত ২৮ বছরের রেকর্ড ভঙ্গ করেছে । হোস্ট কমিটির পুরুষ সদস্যরা ২ দিনে ২ রকম টি শার্ট পড়েন৷ ভেন্ডারদের কথা বলে জানা যায়, সবাই খুবই পরিতৃপ্ত। ভাল সেল হয়েছে৷ এবারের ফেস্টিভ্যাল নাপা, ট্রপিকানা সহ মুল ধারার অনেক স্পন্সরদের কন্ট্রিবিশন ছিল৷
রাত সাড়ে আটটায় মঞ্চে আসেন ভারতীয় জনপ্রিয় আরবিন্দ। এই ফিমেল সিংগার ২ টি গানের পরই অডিয়েন্সের কন্ট্রোল নিয়ে নেন৷ মঞ্চের চেয়ে ফ্লোরে বেশী সময় ছিলেন তিনি। একাধারে তিনি দেড় ঘন্টা পারফর্ম করে পুরো ফেস্টিভ্যাল কে জমিয়ে তুলেন। সবাই নাচতে থাকেন, তিনি সবার সাথে নাচেন।
রাত ৯.৩০ মিনিটে মঞ্চে আসেন বাংলাদেশের এই সময়ের ক্রেশ শিল্পী প্রতিক হাসান। তিনি গান শুরুর আগে বেষ্ট উপস্থাপিকা হিসাবে মায়েশা আশরাফকে ক্রেষ্ট প্রদান করেন ।
প্রিতম হাসান, তার জনপ্রিয় গান, লোকাল বাস গান দিয়ে শুরু করেন। ৫ টি জনপ্রিয় গানের পর প্রথিক হাসান মঞ্চে আসেন, দুই ভাই যৌথ ভাবে কয়েকটি ডুয়েট গান করেন। দর্শকের করতালিতে মুখরিত হয়ে উঠে ফ্যাষ্টীভাল এর মঞ্চ। প্রীথম হাসান তার সবগুলো হিট গান পরিবেশন করে মাতিয়ে রাখেন৷ রাত বাড়তে থাকে জমে উঠে ফ্যাস্টিভ্যাল এর পুরো এলাকা। হাজার হাজার প্রবাসীদের উপস্থিতিতে এক মহা মিলনমেলা পরিনত হয়ে উঠে এশিয়ান এক্সপোর পুরো এলাকা। প্রিথম হাসান পুরো অডিয়েন্সকে মাতিয়ে তুলেন৷
মঞ্চের পাশে কয়েকশত নারী পুরুষ নাচতে থাকেন, লাইভ করেন। এক অসাধারণ শো এ রুপ লাভ করেন। প্রিথম হাসানের শেষ গান গুলোতে সবাইকে তিনি নাচতে বাধ্য করেন।
রাত ১১ টা ১৫ মিনিটে শো শেষ হয়। এই ২৯ তম এশিয়ান এক্সপো ফুড ফেয়ার এন্ড ফেস্টিভাল কালচারাল শো এর একটা জিনিস উল্লেখ্য অন টাইম শো স্টার্ট এবং অন টাইম শেষ হয়। ১১ টার পরই ২ দিনই শো শেষ হয়৷ দুদিনে ইন এন্ড আউট ২৫ হাজার প্রবাসীর উপস্থিতি ছিল।
পুরো অনুষ্টানে আয়োজক কমিটির সদস্যরা গুড লীডার এবং প্রধান আয়োজক হিসাবে এম রহমানকে স্বীকৃতি প্রদান করেন৷ এম রহমান জহিরের নাম যতবার উচ্চারিত হয়েছে এবং যতবার তিনি মঞ্চে গেছেন সবাই করতালিতে সম্নান জানিয়েছেন। আর সব সময় এম রহমান জহিরের সাথে সমন্বয়কারী হিসাবে ছিলেন শফিকুল ইসলান জুয়েল। হোটেল, লজিস্টিক সাপোর্ট এবং সব কিছুই জুয়ে্ল ও সঞ্জয় সাহা ছিলেন হেল্পডেস্ক এর মত৷