করোনা সন্দেহে বৃদ্ধা মাকে বের করে দিলো সন্তানরা!
প্রকাশিত হয়েছে : ২:৩৭:৪১,অপরাহ্ন ১৪ এপ্রিল ২০২০ | সংবাদটি ৫৩৯ বার পঠিত
সুনামগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা:: সুনামগঞ্জে করোনা সন্দেহে বৃদ্ধা মাকে ঘর থেকে বের করে দিয়েছে সন্তানেরা। দুইদিন ধরে বাইরে ঘুরে ঘুরে খাবার ভিক্ষা করে দিন পার করছেন অমত্য বালা দাস (৯০) নামে ওই বৃদ্ধা।
মঙ্গলবার (১৪ এপ্রিল) সকালে সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার সাংবাদিক জয়ন্ত সেন তার ফেসবুকে একটি ভিডিও প্রচার করলে তা ভাইরাল হয়ে যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শাল্লা উপজেলার হাবিবপুর ইউনিয়নের নিয়ামতপুর গ্রামের বাসিন্দা বৃদ্ধা অমত্য বালা দাস। তার দুই ছেলে জুগেশ দাশ ও রণধীর দাশ। সন্তান জন্মের পরপরই স্বামী মারা যান। এরপর সন্তানদের কষ্ট করে মানুষ করেন বালা দাস। দুই ছেলে এখন কৃষি কাজ করেন। কিন্তু এখন করোনা আতঙ্কের মধ্যে দেশের অন্য জেলা থেকে শাল্লায় আসা গামেন্টর্স কর্মীর বাড়িতে যাওয়ায় প্রতিবেশীদের কথায় মাকে ঘর থেকে বের করে দিয়েছেন দুই ছেলে।
ছেলেদের দাবি- করোনার মহামারির মধ্যে অন্য জেলা থেকে আসা মানুষের বাড়িতে যাওয়ার শাস্তি স্বরুপ তাকে বাড়ি বের করে দেয়া হয়েছে।
বৃদ্ধ অমত্য বাল দাশ বলেন, ‘আমার কোনো করোনা নাই বাবা। আমি কারো বাড়িতেও যাই নাই। আমি বুড়া মানুষ হাঁটতে বের হইছিলাম। পরে ঘরে গেলে ছেলেরা আমারে মিথ্যা অপবাদ দিয়া ঘর থাকি বাহির করিয়া দিসে। গাঁওয়ের কেউ আমারে জায়গা দেয় না, খাওন দেয় না। তারা সবাই কয় আমি নাকি করোনা রোগী। এখন আমার ছেলেরা জায়গা দেয় না, বউরা খাওন দেয় না। গেলেই বলে তুমি দোষী ঘরে আইও না। এখন এক সবজি ব্যবসায়ী আমাকে একটা বেগুন দিলেও চাল কেউ দেয় নাই।’
আরও পড়ুন করোনা সন্দেহে অসুস্থ্য বৃদ্ধাকে জঙ্গলে ফেলে দিলো স্বামী-সন্তান!
এ ব্যাপারে স্থানীয় সাংবাদিক জয়ন্ত সেন বলেন, ওই নারীকে আমি রাস্তায় বসে থাকতে দেখে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি করোনা সন্দেহে ছেলেরা তাকে ঘর থেকে বের করে দিয়েছেন। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি উনার ছেলেদের কোনো অভাব অনটন নেই। তার ছেলেরা ও কিছু প্রতিবেশী মিলে এমন কুসংস্কারকে বিশ্বাস করে পুরো উপজেলায় বিষয়টি ছড়িয়ে দিয়েছে।
শাল্লা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আল-মুক্তাদির হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি জানার পর আমি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে অবগত করেছি। তিনি এখন ওই নারীর কাছে গিয়ে বিষয়টি দেখবেন। যদি বিষয়টি সত্যি হয় তাহলে আমরা ছেলেদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’