দিল্লি সংহিংসতার পর গ্রেফতার ৫ শতাধিক!
প্রকাশিত হয়েছে : ৩:৪৫:১৪,অপরাহ্ন ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০ | সংবাদটি ৬৯০ বার পঠিত
আমাদের প্রতিদিন ডেস্ক:: বিতর্কিত সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনকে কেন্দ্র করে ভারতের রাজধানী দিল্লিতে সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪২ জনে দাঁড়িয়েছে। এ পর্যন্ত আহত হয়েছেন ৩ শতাধিক মানুষ। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়া এ সহিংসতার পর এখন পর্যন্ত ৫ শতাধিক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোতে এই তথ্য জানিয়েছে।
ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বৈঠক করেন দিল্লি পুলিশের সিনিয়র আধিকারিকদের সঙ্গে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) ভোর ৪টা থেকে সকাল ১০টা এবং বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৮টা পর্যন্ত বড় জমায়েতের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হচ্ছে।
জানানো হয়েছে, গত ৩৬ ঘণ্টায় রাজধানীর কোথাও বড় কোনও ঘটনা ঘটেনি।
এরআগে, রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) থেকেই সহিংসতা ছড়ায় উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে। ১৪৪ ধারা অমান্য করে রাস্তায় বন্দুক, লোহার রড, লাঠি হাতে নেমে আসে দুষ্কৃতীরা।
তারপর থেকে ক্রমশ খারাপ হয়েছে পরিস্থিতি। আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে বহু বাড়ি ও দোকানে। উন্মত্ত দুষ্কৃতীদের হাতে প্রাণ গিয়েছে অনেকের। ভাঙচুর করা হয়েছে গাড়িতেও।
এনডিটিভিরে খবরে বলে হয়েছে, উত্তরপূর্ব দিল্লিতে ছড়িয়ে পড়া সহিংসতায় জন্য একাধিক আততায়ীকে চিহ্নিত করেছে পুলিশ। চিহ্নিত আততায়ীদের থেকে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। যেগুলোর মধ্যে বন্দুক ও কার্তুজ আছে। আর এখনও পর্যন্ত ৫০০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
এদিকে, ভারতের রাজধানী দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি জাস্টিস এস মুরলিধর, যিনি ২৬ ফেব্রুয়ারি (বুধবার) দিল্লিতে হওয়া হিংসার জন্য কেন্দ্র, রাজ্য সরকার ও দিল্লি পুলিশের সমালোচনা করেছিলেন তাঁকে পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টে বদলি করা হয়েছে।
সেই বদলির প্রতিবাদে কর্মবিরতি পালন করে দিল্লি হাইকোর্টের আইনজীবীরা।
দিল্লি হাইকোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশন ‘দ্ব্যর্থহীন এবং যথাসম্ভব কড়া ভাষায়’ বদলির সিদ্ধান্তের নিন্দা করে বলে, এর ফলে প্রতিষ্ঠানই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আর মঙ্গলবার মাঝরাত থেকে বিচারপতি মুরলীধরের ভূমিকা দেখার পরে সেই আইনজীবীরাই বলছিলেন, কার্যত দিল্লির মানুষের ‘রক্ষাকর্তা’ হয়ে উঠলেন তিনি।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, দিল্লির সহিংসতায় মূল টার্গেট মুসলিমরা। শুরু হওয়া সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়েছে উত্তর-পূর্ব দিল্লির মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায়।
মুসলমানদের ঘর-বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, মসজিদে আগুন দিয়ে মিনারের চূড়ায় হনুমানের পতাকা লাগিয়ে দিয়েছে উগ্র হিন্দুরা।
ভারতের সহিংসতা নিয়ে বিবিসির খবরে বলা হয়, ভারতের রাজধানী দিল্লিতে সহিংসতার তৃতীয় রাতেও বেশীরভাগ ঘটনায় মুসলিমদের বাড়িঘর ও দোকানপাটে হামলার খবর পাওয়া গেছে। গত এক দশকের মধ্যে চলমান ঘটনাবলীকে ভারতে সবচেয়ে ভয়াবহ সহিংসতা বলে উল্লেখ করা হচ্ছে। দেশটির বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইনের পক্ষ ও বিপক্ষ গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের সূচনা হয়েছিলো রোববার, যা পরে সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় রূপ নেয় বলে জানান সংবাদদাতারা।
ছবি এবং ভিডিওতে সয়লাব হয়ে গেছে সোশ্যাল মিডিয়া। এসব ছবিতে দেখা গেছে, অগ্নিসংযোগের পাশাপাশি লাঠি-রড নিয়ে মুখোমুখি অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে সংঘর্ষকারীরা