মসজিদ ভাঙার পর সেনা মোতায়েন চান মুখ্যমন্ত্রী!
প্রকাশিত হয়েছে : ৮:৩৬:২৭,অপরাহ্ন ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ | সংবাদটি ১২১২ বার পঠিত
আমাদের প্রতিদিন ডেস্ক:: বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) নিয়ে টানা চতুর্থ দিনের সহিংসতায় ভারতের রাজধানী দিল্লিতে নিহত বেড়ে ২০ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছে দুই শতাধিক।
দিল্লির মৌজপুর, ব্রহ্মপুরী, ভজনপুরা চক, গোকুলপুরীসহ বিভিন্ন এলাকায় দফায় দফায় সংঘর্ষ চলছে বলে জানা গেছে।
‘হিন্দুয়োঁ কা হিন্দুস্তান’, ‘জয় শ্রীরাম’- স্লোগান দিয়ে মসজিদ জ্বালিয়ে দেয়ার পর বুধবার (২৬ ফেব্রুযারি) দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল ‘এক টুইটে বলেছেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনা মোতায়েন করা উচিত। এ নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠি লিখবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
কেজরিওয়াল আরও লিখেন, পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক। চেষ্টা সত্ত্বেও পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ এবং আস্থা ফেরাতে ব্যর্থ হয়েছে। সেনা মোতায়েন এবং আক্রান্ত বাকি এলাকাগুলোতে কারফিউ জারি করা প্রয়োজন।
এদিকে, দিল্লির পরিস্থিতি রণক্ষেত্রে রূপ নিয়েছে। এর মধ্যেই দিল্লির একটি মসজিদে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রথমবারের মতো ভারতে দু’দিনের সফর করেছেন। এই সফরে তিনি দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক করেছেন। ট্রাম্প দিল্লিতে পৌঁছানোর কয়েক ঘণ্টা আগে থেকেই দিল্লির বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে।
ভারতীয় একটি ওয়েবসাইটের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) একদল উন্মত্ত জনতা জয় শ্রী রাম বলতে বলতে অশক নগর এলাকার একটি মসজিদে আগুন ধরিয়ে দেয়।
ইতোমধ্যেই সামাজিক মাধ্যমে ওই ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে দেখা গেছে, একদল লোক একটি মসজিদের মিনারে উঠছে এবং সেখানে একটি পতাকা স্থাপনের চেষ্টা করছে। তারা মসজিদের মিনারে উঠে মাইক ভেঙে ফেলে দেয় এবং সেখানে হনুমানের ছবি সম্বলিত একটি পতাকা উত্তোলন করে।
কিছুক্ষণ পরেই আরও এক ব্যক্তি একটি ভারতীয় পতাকা নিয়ে আসে এবং সেটাও উত্তোলন করা হয়। ওই এলাকার দোকানগুলোতেও হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
এদিকে, মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে সহিংসতাপ্রবণ এলাকা পরিদর্শন করেছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল। তিনি পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন।
দিল্লির মৌজপুর, জাফরাবাদ, কারওয়ালনগরে ও চাঁদবাগে কারফিউ জারি করা হয়েছে। এসব এলাকায় দাঙ্গাকারীদের ‘শুট অ্যাট সাইট তথা দেখা মাত্র গুলির’ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জাফরাবাদ, মৌজপুর-বাবারপুর, গোকুলপুরি, শিব বিহার ও জোহরি এনক্লেভ মেট্রো স্টেশনের গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত সেখানে কোনো ট্রেন দাঁড়াবে না। ওই এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি হয়েছে। দিল্লির আরও ১০ জায়গায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, ‘হিন্দুয়োঁ কা হিন্দুস্তান’, ‘জয় শ্রীরাম’- এসব স্লোগান দিয়ে সংখ্যালঘু মুসলিমদের বাড়িঘর, দোকানপাট ও মসজিদে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে।
বিবিসি বাংলা জানায়, পুলিশের ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক আছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিছু ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে দাঙ্গাকারীদের সঙ্গে পুলিশ দাঁড়িয়ে আছে দেখা যাচ্ছে।
রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) নিয়ে বিক্ষোভ বন্ধে ক্ষমতাসীন বিজেপি নেতা কপিল মিশ্রার আল্টিমেটামের কয়েক ঘণ্টা পর রাজধানী দিল্লিতে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। সিএএ-বিরোধী বিক্ষোভকারীদের ওপর সশস্ত্র হামলা শুরু করে আইনটির সমর্থকরা।