করোনা আক্রান্ত প্রথম ব্যক্তিকে খুঁজছে চীন
প্রকাশিত হয়েছে : ১১:৪৩:২০,অপরাহ্ন ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০ | সংবাদটি ৪০৩ বার পঠিত
আমাদের প্রতিদিন ডেস্ক:: করোনা সংক্রমণে আক্রান্ত প্রথম ব্যক্তিকে খুঁজছে চীন। যে কোন একটা বিশেষ ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণজনিত রোগে আক্রান্ত প্রথম ব্যক্তিটিকে বলা হয় ‘পেশেন্ট জিরো’।
‘পেশেন্ট জিরো’ কে খুঁজতে চীনের কর্তৃপক্ষ আর বিশেষজ্ঞরা অনুসন্ধান চালাচ্ছেন।
তাকে খুঁজে পেলেই বিজ্ঞানীদের জানা সহজ হবে কেন, কিভাবে এবং কোথায় এই সংক্রমণের সূচনা হয়েছিল।তাছাড়া সংক্রমণের হাত থেকে মানুষকে রক্ষা করা এবং ভবিষ্যতে এর প্রাদুর্ভাব ঠেকানো সহজ হবে।
জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির তথ্য অনুযায়ী, চীনে প্রথম করোনাভাইরাস ধরা পড়ে ৩১ ডিসেম্বর। আক্রান্ত ৭৫ হাজারেরও বেশি লোকের মধ্যে ৮২ শতাংশই এই হুবেই অঞ্চলের।
কিন্তু ল্যান্সেট সাময়িকীতে প্রকাশিত চীনা গবেষকদের এক জরিপে বলা হয়েছে, চীনে প্রথম করোনাভাইরাস ধরা পড়ে ২০১৯ সালের ১ ডিসেম্বর। সেই ব্যক্তিটির সঙ্গে উহান শহরের ওই বাজারের কোন সম্পর্ক ছিল না।
ওই জরিপের অন্যতম প্রণেতা এবং উহানের জিনইন্টান হাসপাতালের চিকিৎসক উ ওয়েনজুয়ান বলেন, প্রথম রোগীটি ছিলেন একজন বয়স্ক পুরুষ যিনি আলঝেইমার্স ডিজিজ-এ আক্রান্ত ছিলেন। তিনি যেখানে থাকতেন সেখান থেকে ওই বাজারে যেতে চার-পাঁচবার বাস বদলাতে হয়। তা ছাড়া তিনি অসুস্থ থাকায় বাড়ি থেকে বেরুতেন না।
তবে এটা ঠিক যে প্রথম দিকে যে ৪১ জন সংক্রমণের কারণে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তার মধ্যে ২৭ জনই উহানের সেই বাজারের সংস্পর্শে এসেছিলেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মনে করে, খুব সম্ভবত প্রথম একটি জীবিত প্রাণী থেকে মানুষে সংক্রমণ ঘটেছিল, এবং তারপর সেই মানুষটি থেকে অন্য মানুষে সংক্রমণ ঘটে।
সব বিজ্ঞানী অবশ্য ‘পেশেন্ট জিরো’ কে চিহ্নিত করতে চান না। কারণ তাতে ওই রোগ নিয়ে মিথ্যে তথ্য ছড়াতে পারে এবং সেই লোকটিও ভিকটিমে পরিণত হতে পারে।
এর সবচেয়ে বিখ্যাত উদাহরণ হলেন কানাডিয়ান গেটান ডুগাস। তিনি ছিলেন সমকামী এবং বিমানের ফ্লাইট এ্যাটেনডেন্ট হিসেবে কাজ করতেন। ১৯৮০র দশকে তাকে আমেরিকায় এইচআইভি ছড়ানোর জন্য দায়ী করা হয়।
কিন্তু সেটা ছিল ভুল। তিন দশক পরে ২০১৬ সালের এক জরিপে বিজ্ঞানীর বলেন, গেটান ডুগাস এইডসের পেশেন্ট জিরো হতে পারেন না। এই ভাইরাস আসলে ১৯৭০এর দশকের শুরুতে ক্যারিবিয়ান অঞ্চল থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকেছিল।
তবে ‘পেশেন্ট জিরো’ কথাটার জন্ম হয়েছিল ১৯৮০র দশকে যুক্তরাষ্ট্রে এইচআইভি রোগের বিস্তার নিয়ে গবেষণার সময়ই।
যুক্তরাষ্ট্রের সিডিসি নামের গবেষণাকেন্দ্রের গবেষকরা ক্যালিফোর্নিয়ার বাইরে থেকে আসা কোন এক রোগীকে বোঝাতে আউটসাইড শব্দটির প্রথম অক্ষর ‘ও’ ব্যবহার করেছিলেন।
অন্য গবেষকরা ভেবেছিলেন এই ‘ও’ অক্ষর দিয়ে শূন্য বা জিরো বোঝানো হয়েছে। কারণ ইংরেজিতে জিরোকে অনেক সময় ‘ও’ বলা হয়। এভাবেই পেশেন্ট ‘ও’ কথাটা পরিণত হয় পেশেন্ট জিরোতে।